শিরোনাম
তাজরীন ফ্যাশনসের অগ্নিকাণ্ডের ৯ বছর আজ। ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর সাভারের আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে কারখানাটির ১১৪ জন শ্রমিক আগুনে পুড়ে মারা যান। আহত হন কয়েকশ শ্রমিক। সেই দুঃসহ স্মৃতি আজও ভুলতে পারেনি ক্ষতিগ্রস্তরা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, দগদগে ক্ষত নিয়ে ঠাই দাঁড়িয়ে আছে পরিত্যাক্ত ভবনটি। কয়েকটি ফটকে ঝুলছে মরিচা ধরা তালা। সুনসান নীরবতা যেন বিরাজ করছে ভবনটির ভেতরে। ৯ বছর আগের আগুনের ধ্বংসাবশেষের স্তূপ পড়ে আছে ভবনের ভেতরে। প্রধান ফটকটিতেও দেখা যায় তালা। তবে তালা দেখে মনে হয় সময় সময় কেউ যেন খুলে ভেতরে প্রবেশ করে। তবে তেমন কাউকে দেখা যায়নি ভবনের আশপাশে।
কথা হয় কারখানাটিতে কাজ করা আহত শ্রমিক পারভিন বেগমের সঙ্গে। তিন তলা থেকে লাফিয়ে জীবন বাঁচিয়েছিলেন তিনি। তবে হারিয়েছেন শারীরিক শক্তি। পা আর কোমরে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে এখন কর্মহীন। ১২ বছরের সন্তানের উপার্জনই এখন সংসারের এক মাত্র ভরসা। অনুদানের কিছু টাকা পেলেও তা সব খরচ করেছেন চিকিৎসায়। এখন তার অভাবের সঙ্গেই বসবাস।
শুধু পারভীন নয়, এমন অনেক আহত শ্রমিকই আজ দুর্বিসহ জীবনযাপন করছেন। শারীরিক ও মানসিক অসুস্থতায় বদলাতে হয়েছে পেশা।
আরেক শ্রমিক আসমা হয়েছেন মানসিক রোগী। এখনও ঘুমের ঘোরে আঁতকে ওঠেন আগুন আগুন বলে। বড় ভবনের নিচে গেলেই তার মনে ভর করে অজানা এক ভয়।
এমন অনেক শ্রমিকই আজ অসুস্থ। সরকার আর বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে পেয়েছেন অনুদান। তবে অনেকেই সে অনুদান দিয়ে বদলাতে পারেননি জীবন চাকা।
যদিও শ্রমিক নেতাদের দাবি সরকারের আন্তরিকতা না থাকায় এখনও দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন আহত শ্রমিকরা। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অগ্নিকাণ্ড যাদের উদাসীনতায় তাদের দ্রুত বিচারের দাবি জানান তারা।
গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাংগঠনিক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু জানান, সরকার নগদ অর্থের পাশাপাশি যদি আহত শ্রমিকদের সুচিকিৎসা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিত তাহলে অনেকটাই ভালো জীবনযাপন করতে পারতো শ্রমিকরা।
কথা হয় বিল্পবী গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি অরবিন্দু বেপারী বিন্দুর সঙ্গে। তার দাবি, এখনও অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠানে মানা হচ্ছে না নিরাপত্তার বিষয়টি। কাজের পরিবেশ সৃষ্টি না করেই দিনের পর দিন কাজ চালিয়ে আসছে।
সূত্র: জাগো নিউজ