শিরোনাম
পাঁচ দিন ধরে সড়কের পাশে ফুটপাতে পড়ে থাকা অজ্ঞাত পরিচয় অসুস্থ সেই বৃদ্ধকে (৭০) উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৬) সদস্যরা।
রোববার গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদটি দৃষ্টিগোচর হলে র্যাব -৬ যশোর ক্যাম্পের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার নাজিউর বৃদ্ধকে উদ্ধার ও চিকিৎসার উদ্যোগ নেন। তিনি জানান, রোববার গভীর রাতে বৃদ্ধকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার চিকিৎসার ব্যয় বহন করবে র্যাব।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্ভবত রাতের আঁধারে ফুটপাতে তাকে ফেলে রেখে গেছেন স্বজনরা।
‘মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করা’—এই বৃদ্ধের অবস্থা দেখে স্থানীয়রা ফোন দিয়েছিলেন ৯৯৯ নম্বরে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ‘আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ নেই’ দাবি করে বৃদ্ধকে সেখানেই ফেলে রেখে চলে গেছে। যশোর শহরের রেলগেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
যশোর শহরের রেলস্টেশনের পাশে রেলগেট ট্যাক্সি স্ট্যান্ডের প্রাইভেটকারচালক রবিউল ইসলাম জানান, রেলস্টেশনসংলগ্ন এ সড়কে সারাদিনই তারা অবস্থান করেন। পাঁচ দিন আগে সকালে এসে দেখেন সড়কের পাশে ফুটপাতে এক বৃদ্ধকে শুইয়ে রাখা হয়েছে। তারা কথা বলতে চেষ্টা করলেও বৃদ্ধ কিছুই বলতে পারছেন না। তারা সামান্য খাবার কিনে দিলে কোনোভাবে খেতে পারেন। বৃদ্ধের নাম-ঠিকানাও জানা যায়নি। শরীরে পচন ধরেছে। মলমূত্র ত্যাগ করে গায়ে মাখিয়ে ফেলেছেন। চারপাশে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে।
এ অবস্থায় বৃদ্ধকে বাঁচাতে রোববার দুপুরে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেন আরেক প্রাইভেটকারচালক সাজু হোসেন। এর পর ঘটনাস্থলে যান যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম। কিন্তু তিনি সেখানে গিয়ে আশপাশে থাকা লোকজনদের বলে আসেন— এখানে পুলিশের কিছু করার নেই।
৯৯৯ নম্বরে ফোন দেওয়া সাজু হোসেন জানান, নাম-পরিচয়হীন বৃদ্ধটিকে কেউ এখানে ফেলে রেখে গেছেন। এ অমানবিক অবস্থা দেখে তিনি ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেছিলেন। কিন্তু পুলিশ এসেও কিছুই করল না। বৃদ্ধটি এখানে মারা গেলে হয়তো পুলিশ লাশ উদ্ধার করবে।
এ প্রসঙ্গে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই রফিকুল ইসলাম বলেন, বৃদ্ধটি জীর্ণশীর্ণ অবস্থায় ফুটপাতে পড়ে আছে। কিন্তু তার কোনো ঠিকানা জানা যায়নি। আবার হাসপাতালে এনে ভর্তি করব, কেউ দায়িত্ব নিতে চায় না।
এখানে ‘আইনগত কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ নেই’ দাবি করে তিনি বলেন, এ জন্যই বৃদ্ধকে সেখানেই রেখে চলে আসতে হয়েছে।
সূত্র: যুগান্তর