শিরোনাম
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার ঘটনার পর বীর মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের পরিচয় দিতে ভয় পেতেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষ্যে রোববার খেতাবপ্রাপ্ত নির্বাচিত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের জন্য আয়োজিত সংবর্ধনা এবং সশস্ত্র বাহিনীর শান্তিকালীন পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ঢাকা সেনানিবাসের আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। তার পক্ষে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে পাঁচজন সেনা, দুজন নৌ এবং একজন বিমান বাহিনী সদস্যকে ২০২০-২১ সালের শান্তিকালীন পদকে ভূষিত করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যার পর সে ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছিল। শুধু তাই নয়, সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হলো— মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের দেশের মানুষ যে সব কিছু ছেড়ে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, যে অবদান রেখেছিল, '৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর বাংলাদেশে এমন একটা সময় এসেছিল যে, যারা মুক্তিযোদ্ধা, তারা নিজেদের মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিতেই ভয় পেতেন।
তিনি আরও বলেন, তারা (বীর মুক্তিযোদ্ধারা) নিজেদের পরিচয় দিতে পারতেন না। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছিল। একটা মনগড়া ইতিহাস চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। পৃথিবীর কোনো দেশে এ ধরনের নিজেদের বিজয়গাঁথা কখনও বিকৃত করা হয় না। কিন্তু সে ধরনের একটা জঘন্য কাজ আমাদের দেশে করা হয়েছিল।
এর আগে ঢাকা সেনানিবাসে শিখা অনির্বাণে সশস্ত্র বাহিনীর শহিদ সদস্যদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান শেখ হাসিনা।
এ সময় সেখানে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি।
এর আগে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর একটি চৌকস দল প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার দেয়। এ সময় বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়।
পরে শিখা অনির্বাণ প্রাঙ্গণে রাখা দর্শনার্থী বইয়ে স্বাক্ষর করেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারেক আহমেদ সিদ্দিক উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শিখা অনির্বাণে পৌঁছলে সেনাপ্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ, নৌবাহিনীপ্রধান অ্যাডমিরাল এম শাহীন ইকবাল, বিমানবাহিনীপ্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আবদুল হান্নান এবং সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান তাকে স্বাগত জানান।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে (এএফডি) যান এবং তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
শেখ হাসিনা এএফডিতে পৌঁছলে পিএসও এবং এএফডির মহাপরিচালকরা তাকে স্বাগত জানান।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন এই দিনে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সমন্বয়ে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী গঠিত হয় এবং পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ওপর সর্বাত্মক আক্রমণ শুরু করে।
এই আক্রমণ মুক্তিযুদ্ধের বিজয়কে ত্বরান্বিত করে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এই ঐতিহাসিক দিনটিকে প্রতি বছর সশস্ত্র বাহিনী দিবস হিসেবে পালন করা হয়।