শিরোনাম
৮ মার্চ ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবসে’ নারীদের অধিকারের কথা, বৈষম্যহীন সমাজের আকাঙ্ক্ষার কথা জানান দেয়। প্রতিবছর এই দিবসটি ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটা প্রশ্নও ঘুরে বেড়ায়— ‘একদিন ঘটা করে নারী দিবস পালনের কী হলো, বছরের বাকি ৩৬৪ দিন কি তবে নারীর নয়, আর নারীর জন্য আলাদা দিবস থাকলে পুরুষের দিবস কই?’ অথচ ১৯ নভেম্বর ‘আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস’ হলেও দিবসটি সম্পর্কে তেমন আলোচনা নেই, এমনকি পুরুষরাও জানেন না দিবসটিতে তাদের করণীয় কি?
সমাজ গবেষকরা বলছেন, পুরুষের যে কোনও কমতি থাকতে পারে বা তারও যে অধিকার দাবির ব্যাপার থাকতে পারে— সেটা তারা মনেই করেন না। সে কারণে দিনটি উদযাপন করা হয় না বা এই বিষয়ে যে কোনও দিবস আছে সেটা সম্পর্কে তেমন আগ্রহও নেই।
প্রতিবছর এই দিন বিশ্বব্যাপী পুরুষ দিবস পালিত হয়। পুরুষদের মধ্যে লিঙ্গভিত্তিক সমতা, বালক ও পুরুষদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা এবং পুরুষের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরার প্রধান উপলক্ষ হিসেবে এই দিবসটি উদযাপন করা হয়ে থাকে।
দিবসটির ইতিহাস বলছে, পুরুষ দিবস পালনের প্রস্তাব প্রথম করা হয় ১৯৯৪ সালে, তবে দিনটির ইতিহাস আরও পুরানো। ১৯২২ সাল থেকে সোভিয়েত ইউনিয়নে পালন করা হতো ‘রেড আর্মি অ্যান্ড নেভি ডে’। সেসময় দিনটি পালন করা হতো মূলত পুরুষদের বীরত্ব আর ত্যাগের প্রতি সম্মান জানিয়ে।
২০২১ সালের ৮ মার্চ নারী দিবসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন। তিনি লিখেছিলেন, ‘নারীরা কেন একদিন নিজেদের করে পেতে চাইবে? নারীদের জন্য দিবস থাকলে কেন পুরুষদের জন্য থাকবে না?’ সেই স্ট্যাটাসের সূত্র ধরে পুরুষ দিবসের কথা তাকে জানানো হলে তিনি স্বীকার করেন ‘বিষয়টি তার জানা ছিল না’। এরকম একটা দিবসের দরকার কী কিংবা এই দিনে একজন পুরুষ কী করবেন— এমন প্রশ্নেরও কোনও উত্তর দিতে পারেননি এই ব্যাংক কর্মকর্তা।
দিনটিতে পুরুষেরা কী করতে পারেন প্রশ্নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক জোবাইদা নাসরিন বলেন, পুরুষরা পুরুষতান্ত্রিকতার থেকে কীভাবে বের হতে পারে সেটা নিয়ে চর্চার জায়গাটা নির্ধারণের চেষ্টা করতে পারেন। কেবল নারীরা পুরুষতান্ত্রিকতার শিকার তা নয়। পুরুষরাও এর শিকার হয়। সেই জায়গা থেকে নিজেদের বের করে আনার অঙ্গীকার করতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘নারী দিবস পালনের সময় বলতে শোনা যায়- একটা দিবস উদযাপনের কী হলো? তার মানে হলো, এই পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার নারী পুরুষ আসলে ৩৬৫ দিনই তাদের করে ভাবতে চায়। সেই ভাবনা থেকে সরে দাঁড়ানের কাজটির শুরু আজকের দিনে হতে পারে।’