টিকা পেয়ে খুশি বস্তিবাসী

ফানাম নিউজ
  ১৯ নভেম্বর ২০২১, ০৯:২৫

রাজধানীর বস্তিবাসীদের করোনা ভাইরাসের টিকা দেওয়া শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। গত মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ টিকাদান কর্মসূচির আওতায় এসেছে কয়েক হাজার মানুষ। এই কর্মসূচির মাধ্যমে টিকা পেয়ে বেশ খুশি বস্তিবাসীরা। তারা বলেছেন, সরকারের এমন উদ্যোগে তারা উপকৃত হয়েছেন।

সকালে বস্তি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, তখনো টিকা দেওয়া শুরু হয়নি, কিন্তু টিকাপ্রত্যাশী মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। অনেকেই ঘরের কাজ সেরে টিকা গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ নির্ধারিত সময়ের আগেই লাইনে দাঁড়িয়েছেন। টিকা নিতে স্ত্রী সন্তানসহ পরিবারের অন্যদের নিয়ে হাজির হয়েছেন অনেকেই। তারা জানিয়েছেন- সরকার এভাবে তাদের জন্য টিকার ব্যবস্থা করবে তা কখনই ভাবেনি।

নগরীর বস্তিবাসীদের করোনার টিকার আওতায় আনতে উদ্যোগ নিয়েছে ‍সরকার। প্রথম অবস্থায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে কড়াইল বস্তিতে এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

ডিএনসিসি জানিয়েছে, বস্তির কমপক্ষে ৮০ ভাগ মানুষ টিকার আওতায় না আসা পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে।

সকালে কড়াইল বস্তি উন্নয়ন কমিটির অফিসে গিয়ে দেখা গেছে‑ টিকা নিতে আসা মানুষের দীর্ঘ লাইন। সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে লোকজন। সবার হাতে জাতীয় পরিচয়পত্র। একের পর এক টিকা নিচ্ছেন তারা। যাদের ভোটার আইডি কার্ড নেই তারা জন্মনিবন্ধনের ফটোকপি নিয়ে গেছেন। সহায়তা করছেন রেড ক্রিসেন্টের ঢাকা জেলার সদস্যরা।

মহামারির এই প্রতিষেধক পেয়ে আনন্দ ব্যক্ত করেছেন বস্তিবাসীরা। টিকা নিতে আসা সামছুন্নাহার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এভাবে টিকা নিতে পারবো, কখনো ভাবিনি। এখন দেখি অনেক সোজা বিষয়। আগে শুনেছি ইন্টারনেটে আবেদন করে আসতে হয়। আমরা তো আর এসব বুঝি না। এখন তারাই সব করে দিচ্ছে। টিকা কার্ডও সঙ্গে সঙ্গে হয়ে যাচ্ছে।

গিয়াস উদ্দিন নামে অপর এক বস্তিবাসী বলেন, আমি অনেক আগে ১০০ টাকা খরচ করে কম্পিউটার দোকান থেকে রেজিস্ট্রেশন করেছি। কিন্তু আমি কোনও এসএমএস পাইনি। সে কারণে টিকাও নিতে পারিনি। আজ কেন্দ্রে আসার সঙ্গে সঙ্গে টিকা নিতে পেরেছি। এখন অনেক ভালো লাগছে।

এ টিকা কার্যক্রম পরিচালনায় সমন্বয় করছেন রেড ক্রিসেন্টের ঢাকা বিভাগীয় উপপ্রধান মেহেদী হাসান। তিনি বলেন, আমরা গত দুই দিনে ১০ হাজারের বেশি মানুষকে টিকা দিতে পেরেছি। আমাদের টার্গেট কমপক্ষে এক লাখ। প্রাথমিকভাবে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত এই টিকাদান কর্মসূচি চলবে বলে জানান তিনি।

মেহেদী হাসান আরও বলেন, যত জনই টিকা নিয়েছেন, তারা সবাই আমাদের কাছে আনন্দ প্রকাশ করেছে। কোনও ঝক্কি-ঝামেলা ছাড়া টিকা নিতে পারায় তারা অনেক খুশি।

তিনি আরও বলেন, আমরা দুই ধরণের মানুষকে টিকা দিচ্ছি। যারা আগে রেজিস্ট্রেশন করেছেন, কিন্তু এসএমএস পাননি তারা এবং যারা এনআইডি নিয়ে আসছেন। তাৎক্ষণিকভাবে আমরা তাদের রেজিস্ট্রেশন করে টিকা দিয়ে থাকি। রেজিস্ট্রেশনের জন্য তাদের কোনও বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে। যে কারণে সবাই বেশ খুশি।

ডিএনসিসির স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, স্বল্প সময়ের মধ্যে বস্তিবাসীকে টিকার আওতায় আনতে কড়াইল বস্তিতে এই কার্যক্রম চালু হয়েছে। ২৫টি কেন্দ্রে কার্যক্রম চলছে। বস্তির কমপক্ষে ৮০ শতাংশ মানুষের টিকা গ্রহণ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত টিকাদান চলবে। মানুষের সাড়া পাওয়া গেলে টিকা দানের সময়সীমা আরও বাড়বে।

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন