গৃহঋণে মিথ্যা তথ্য দিলে ৫ বছরের জেল, জরিমানা ৫০ লাখ

ফানাম নিউজ
  ১৮ নভেম্বর ২০২১, ১৩:৫২

মিথ্যা তথ্য দিয়ে বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইনান্স করপোরেশন (বিএইচবিএফসি) থেকে ঋণ নেওয়ার সাজা বাড়িয়ে ‘বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইনান্স করপোরেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল ২০২১’ জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে।

বিদ্যমান আইনে বলা আছে, করপোরেশন থেকে কেউ ঋণ নেওয়ার সময় ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা বিবরণী দেন বা জেনে-শুনে মিথ্যা বিবরণী ব্যবহার করেন বা করপোরেশনে যে কোনো ধরনের জামানত গ্রহণে প্রবৃত্ত করেন তাহলে দুই বছর কারাদণ্ড ও দুই হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

নতুন বিলে সেটাকে বাড়িয়ে পাঁচ বছর কারাদণ্ড এবং পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) বিলটি পাসের প্রস্তব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সদস্যদের বিলটির জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি করেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।

গত জুনে বিলটি সংসদে তোলেন অর্থমন্ত্রী। পরে সেটি পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।

লিখিত সম্মতি ছাড়া প্রসপেক্টাসে বা বিজ্ঞাপনে বিএইচবিএফসির নাম ব্যবহারের সাজা হিসেবে আগে ছয় মাসের কারাদণ্ড ও এক হাজার টাকা জরিমানা ছিল। জরিমানা বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে খসড়ায়।

বিদ্যমান আইনে অনুমোদিত মূলধন ১১০ কোটি। পরিশোধিত মূলধন ছিল ১১০ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত আইনে এক হাজার কোটি টাকা হচ্ছে অনুমোদিত মূলধন। আর ৫০০ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের বিধান রাখা হয়েছে।

বিলে বলা হয়, পরিচালকের মেয়াদ সরকারের সন্তুষ্টিক্রমে দুই মেয়াদের অনূর্ধ্ব তিন বছর সময়ে বহাল থাকবে। করপোরেশন সরকারের কাছ থেকে দীর্ঘমেয়াদী ঋণ নিতে পারবে।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, ‘করপোরেশনের কার্যপরিধি বিস্তৃতির সঙ্গে সঙ্গে অনুমোদিত ও পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ বৃদ্ধি, পরিচালনা পর্ষদের গঠন সুনির্দিষ্টকরণ, ক্ষমতার বিকেন্দ্রিকরণ, তহবিল সংগ্রহের লক্ষ্যে দেশীয় ও আন্তির্জাতিক ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনসহ ঋণগ্রহণ, অপরাধের শাস্তির পরিমাণ বৃদ্ধি, অপরাধের আমলযোগ্যতা, জামিনযোগ্যতা, ফৌজদারি কার্যবিধির প্রয়োগ ও অর্ধদণ্ড আরোপের ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেটের বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগের বিধান সংযোজনসহ অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বিদ্যামান আইন সংশোধনের লক্ষ্যে বিলটি আনা হয়েছে।’

বিলটি জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব ওঠানোর সময় জাপার সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী প্রথমবার ফ্ল্যাট নির্মাণকারীদের জন্য স্বল্পসুদে ঋণ দেওয়ার দাবি জানান।

তিনি বলেন, মিথ্যা তথ্য দিয়ে ঋণ নেওয়ার চেষ্টা করলে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। যেসব কর্মকর্তা মিথ্যা তথ্য দেখেও ঋণ দেন তাদের শাস্তির বিধান রাখতে হবে। সংশোধনী প্রস্তাব তোলার সময়, তিনি শহরে এলাকার সঙ্গে গ্রামেও গৃহঋণ দেওয়ার দাবি জানান।

জাপার আরেক সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তারা পাঁচ শতাংশ সুদে ৭৫ লাখ টাকা পর্যন্ত গৃহঋণ পান। এ সুযোগ সবার জন্য উন্মুক্ত করা হোক।’

এছাড়া বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ সহজ শর্ত ও স্বল্পসুদে মানুষদের গৃহঋণ দেয়ার দাবি জানিয়েছিলেন।