শিরোনাম
ধনী দেশগুলোর পরিবেশ দূষণের ইতিহাস বহু পুরোনো। তাদের এ ধরনের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তাল মেলাতে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে অবশ্যই আরও অর্থসহায়তা দিতে হবে বলে দাবি করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। বহুল প্রত্যাশিত কপ২৬ সম্মেলনে এখন পর্যন্ত পাওয়া প্রতিশ্রুতির মাত্রা সন্তোষজনক নয় বলেও জানিয়েছেন তিনি।
জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনে বাংলাদেশি প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে ইউরোপ সফরে রয়েছেন ড. মোমেন। সেখানে সম্ভাব্য একটি জলবায়ু চুক্তির জন্য বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। গত বুধ্বার (১০ নভেম্বর) চীনা সংবাদমাধ্যম সিজিটিএন’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, পরিস্থিতির অগ্রগতির জন্য বিশ্বনেতাদের হাতে এখনো সময় রয়েছে। তবে এ নিয়ে আমরা খুব বেশি আশাবাদী নই।
মোমেন বলেন, আমরা আশা করছিলাম, বিশ্বনেতৃত্ব হয়তো তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমিত রাখার প্রতিশ্রুতি দেবেন, লক্ষ্যমাত্রাটি কীভাবে অর্জন করা যায় তার একটি রোডম্যাপ থাকবে। দুঃখজনকভাবে, সেটি হয়নি। আরেকটা বড় সমস্যা হলো তহবিলের অভাব।
তিনি বলেন, প্যারিস জলবায়ু চুক্তি অনুসারে উন্নয়নশীল দেশগুলো ধনীদের কাছে চলতি বছর থেকে বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ চেয়েছিল। কিন্তু তাতে বিলম্ব হচ্ছে। তারা (ধনী দেশগুলো) বলছে, ২০২৩ সাল থেকে হয়তো এটি শুরু হতে পারে। সেটি মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়।
এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, দরিদ্র দেশগুলো যেন আরও বেশি নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারের দিকে যেতে পারে, সেজন্য উন্নত দেশগুলোকে অবশ্যই ‘প্রযুক্তি স্থানান্তর’ এবং ‘রেয়াতি অর্থায়ন’-এ এগিয়ে আসতে হবে।
এমনিতেই সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, ঘূর্ণিঝড়, খরা ও বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোর বড় হুমকিতে রয়েছে বাংলাদেশে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ২০৫০ সালের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশে প্রতি সাতজনের একজন বাস্তুচ্যুত হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকিতে থাকা ৫৫টি দেশের জোট ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) বর্তমান সভাপতি বাংলাদেশ। এ ধরনের সংকট মোকাবিলায় ধনী দেশগুলোকে আরও বেশি অর্থায়নের জন্য ক্রমাগত দাবি জানিয়ে আসছে সিভিএফ।
ড. মোমেন বলেন, জলবায়ু অভিবাসীদের পাশাপাশি যেসব মানুষ নিজেদের ঘরছাড়া হয়েছে, কাজ হারিয়েছে, তাদের অবশ্যই পুনর্বাসনের ব্যবস্থা থাকতে হবে। উন্নয়নশীল দেশগুলোকে একা এই সংকটের মুখে পড়া উচিত নয়। ধনীদের অবশ্যই সেই বোঝা ভাগাভাগি করতে হবে, যা এখনো হয়নি।