শিরোনাম
আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির সম্পদের খোঁজে ঢাকার সাভারে গেছে ইভ্যালি পরিচালনা কমিটি। সোমবার দুপুরে সাভারের আমিনবাজারে ইভ্যালির স্থাবর সম্পদের পরিমাণ দেখতে এসে পিংক ফুড ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক ও বলিয়াপুর এলাকায় ইভ্যালির ৪টি ওয়্যারহাউজ পরিদর্শন শেষে প্রতিষ্ঠানগুলো সিলগালা করেছেন পরিচালনা বোর্ড। সূত্র: যুগান্তর
আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককের নেতৃত্বে বোর্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব কবীর মিলন, সাবেক সচিব মোহাম্মদ রেজাউল আহসান, ফখরুদ্দিন আহম্মেদ, ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ উপস্থিত ছিলেন। পরিদর্শনকালে ওয়্যারহাউজটিতে বেশ কিছু টেলিভিশন, কোমল পানীয়সহ ইলেকট্রনিক্স মালামাল দেখতে পান তারা।
পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, আজকে আমাদের তৃতীয় বোর্ড মিটিং অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাই এই মুহূর্তে বলা সম্ভব নয় ইভ্যালির কি পরিমাণ সম্পদ রয়েছে। এখন আমরা সরেজমিনে ইনভেন্টরি করবো, এরপর অডিট হবে। প্রাথমিকভাবে যতটুকুন দেখা যায় সেটি আমরা দেখেছি। বিষয়টি অনেক সময়সাপেক্ষ।
তিনি বলেন, এখানে অনেক কিছুই করার আছে, এবং কি দেখারও কিছু বিসয়ে আছে। কারণ হাইকোর্ট আমাদেরকে দুটি অপশন দিয়েছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে যদি সম্ভব হয় ইভ্যালি ব্যবসা পরিচালনা করতে পারে। অপরটি হচ্ছে, অডিটের মাধ্যমে তাদের সম্পদের পরিমাণ নির্ণয় করে গ্রাহকের পাওনা ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা। এজন্য দেশের বিভিন্ন স্থালে থাকা ইভ্যালির ওয়্যার হাউজগুলো পরিদর্শন করা হচ্ছে। পরিদর্শন শেষে অডিটের মাধ্যমে এ সব সম্পদ নিয়ন্ত্রণে আনবো।
বোর্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব কবীর মিলন বলেন, আমরা আসলে দ্বিতীয় অপশনটি এই মুহূর্তে চিন্তা করছি না। আমরা আশাবাদী, যদি বিজনেসটি চালিয়ে যেতে পারি সেটাই মঙ্গলজনক হবে। তবে সেটি এই মুহূর্তে নিশ্চিত বলা সম্ভব নয়। প্রথমে আমরা প্রতিষ্ঠানটির সম্পূর্ণ আর্থিক চিত্রটা তুলে আনার চেষ্টা করছি। আমরা আশ্বস্ত করতে পারি এখানে চুল পরিমাণ ব্যত্যয় থাকবে না।
তিনি বলেন, প্রথমেই আমরা প্রতিষ্ঠানটির সার্ভার আপ করার ব্যবস্থা করবো। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংক, মোবাইল ব্যাংকিংসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আর্থিক চিত্র তুলে আনবো। এখন আমরা তথ্যগুলো সংগ্রহ করার চেষ্টা করছি, এরপর অডিট হবে।
তিনি আরও বলেন, এছাড়া ভ্যাট, ইনকাম ট্যাক্সসহ বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে হাইকোর্ট অনুমোদিত অডিট ফার্মকে দেওয়া হবে। অডিট ফার্ম এসব বিষয় গুলো মাথায় রেখে অডিট করবে। আর অডিটের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে আমরা সামনে অগ্রসর হবো। এজন্য আমাদের বর্তমানে মূল লক্ষ্য হচ্ছে সরেজমিন থেকে সঠিক ও নির্ভুল তথ্য তুলে প্রতিবেদন তৈরি করা।
তিনি আরও বলেন, ইভ্যালির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এখন বিক্ষিপ্তভাবে রয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি তাদেরকে একত্রিত করে তাদের কাছ থেকেও তথ্য সংগ্রহ করার। এছাড়া ইভ্যালির প্রতারিত গ্রাহকদেরকে কাছে থাকা তথ্যগুলো সংরক্ষণ রাখার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। কারণ যে কোন সময় তার পাওনা বুঝে নিতে ওই তথ্য আমাদের প্রয়োজন হতে পারে।
উল্লেখ্য, গত ১৮ অক্টোবর বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশিদ আলম সরকারের হাইকোর্টের বেঞ্চ আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে প্রধান করে ৫ সদস্যের এক কমিটি গঠন করে ইভ্যালি পরিচালনা করার আদেশ দেন।
এই কমিটি ইভ্যালির কোথায় কী আছে সবকিছু বুঝে নেবেন। কোম্পানি যেভাবে চলে, সেভাবে প্রথমে বোর্ড মিটিং বসবে। তাদের দায়িত্ব হলো টাকাগুলো কোথায় আছে, কোথায় দায় আছে, তা দেখা। আদালতের লিখিত আদেশ পাওয়ার পরই বোর্ড মিটিং করে তারা সরেজমিনে ইভ্যালির ওয়ার হাউজ পরিদর্শন করছেন। আগামী ২৩ নভেম্বর আদালতে অগ্রগতি প্রতিবেদন দেবে এই কমিটি।