শিরোনাম
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে পরিবহন মালিকদের দাবির মুখে গণপরিবহনে নতুন করে ভাড়া সমন্বয় করা হয়েছে। এতে দূরপাল্লার বাসে ২৭ শতাংশ আর মহানগরে ২৬ দশমিক ৫ শতাংশ ভাড়া বেড়েছে। এছাড়া বড় বাসে সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকা এবং মিনিবাসে ৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এদিকে, ভাড়া বাড়ানোর ঘোষণা আসার পরপরই রোবরার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর রাস্তায় নামানো হয়েছে বাস। তবে নিয়মানুযায়ী বর্ধিত এই ভাড়া সরকারের পক্ষ থেকে গেজেট প্রকাশের পরই কার্যকর হওয়ার কথা। কিন্তু বর্ধিত ভাড়া এরই মধ্যে আদায় শুরু হয়ে গেছে।
সরেজমিন যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেলো, রাজধানীর গুলিস্তান থেকে খিলক্ষেত পর্যন্ত এর আগের ভাড়া ছিল ২৫ টাকা। এখন সেই ভাড়া হয়েছে ৪০ টাকা। আর এয়ারপোর্ট পর্যন্ত ৫০ টাকা। চলমান ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা আসার পরপরই রাস্তায় নামা বাসগুলো আদায় করছে এই বাড়তি ভাড়া।
এদিকে, এই প্রতিবেদকের করা প্রশ্নে বর্ধিত ভাড়া আদায়ের কথা স্বীকারও করলেন এক বাসের হেলপার। তবে তিনি বিস্তারিত কিছু বলতে রাজি হননি।
এর আগে রোববার (৭ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বনানীতে বিআরটিএ কার্যালয়ে গণপরিবহনে ভাড়া পুনর্নির্ধারণে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সঙ্গে পরিবহন মালিক সমিতির নেতাদের বৈঠকের পর এ নতুন ভাড়া নির্ধারিত হয়।
নতুন সমন্বিত ভাড়া অনুযায়ী, দূরপাল্লার বর্তমান বাসভাড়া প্রতি কিলোমিটারে ১ টাকা ৪২ পয়সা, তা বাড়িয়ে ১ টাকা ৮০ পয়সা করা হয়েছে। অর্থাৎ এতে কিলোমিটারপ্রতি যাত্রীকে বাড়তি ৩৮ পয়সা গুনতে হবে। তাতে দেখা যাচ্ছে, দূরপাল্লার একজন যাত্রীকে প্রতি পাঁচ কিলোমিটারে ১ টাকা ৯০ পয়সা বেশি ভাড়া দিতে হবে।
মহানগরে বাসের বর্তমান ভাড়া কিলোমিটারে ১ টাকা ৭০ পয়সা, সেটি বাড়িয়ে ২ টাকা ১৫ পয়সা করা হয়েছে। এতে কিলোমিটারপ্রতি ৪৫ পয়সা ভাড়া বেড়েছে। ফলে মহানগর এলাকায় একজন বাসযাত্রীকে পাঁচ কিলোমিটার ভ্রমণের জন্য বাড়তি ২ টাকা ২৫ পয়সা গুনতে হবে।
এছাড়া মহানগরে মিনিবাসের বর্তমান ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে ১ টাকা ৬০ পয়সা। এটি বাড়িয়ে ২ টাকা ৫ পয়সা করা হয়েছে। এতে ভাড়া বাড়ে কিলোমিটারপ্রতি ৪৫ পয়সা। ফলে মহানগর এলাকায় চলাচলকারী মিনিবাসের ভাড়া পাঁচ কিলোমিটারে ২ টাকা ২৫ পয়সা বাড়লো।
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম ঊর্ধ্বগতির কারণে ভারতসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ডিজেল-কেরোসিনের দাম পুনর্নির্ধারণ করে সরকার। গত বুধবার (৩ নভেম্বর) রাতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়। নতুন দাম ভোক্তা পর্যায়ে ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা করা হয়েছে। যা বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর হয়।
ডিজেল-কেরোসিনের দাম বাড়ানোর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরদিনই পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এরপর শুক্রবার (৫ নভেম্বর) সকাল ছয়টা থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট শুরু করে বাস, ট্রাকসহ পণ্যবাহী যানবাহনের মালিকেরা। এতে সারাদেশে মানুষকে ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। ধর্মঘট অনির্দিষ্টকালের হওয়ায় দুর্ভোগ কবে শেষ হবে, এ নিয়েও অনিশ্চয়তায় পড়ে মানুষ।
তবে তেলের দাম বাড়ানোর পর শুরু থেকেই পরিবহন মালিক ও সংশ্লিষ্টরা বলছিলেন, ডিজেলের দাম না কমানো হলে গণপরিবহনসহ অন্যান্য পরিবহনে ভাড়া সমন্বয় করতে হবে। এনিয়ে গত বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) বিআরটিএকে চিঠি দেয় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি।
সূত্র: জাগো নিউজ