শিরোনাম
গতকাল (বুধবার) দিবাগত রাত ১২টা থেকে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়িয়ে ৬৫ থেকে ৮০ টাকা করেছে সরকার। এই দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়া শুরু করেছে পরিবহণ খাতে। ইতোমধ্যেই বাস মালিকরা ভাড়া বাড়ানোর দাবি তুলেছেন। ভাড়া বাড়লে সাধারণ মানুষের ওপর খড়্গ নেমে আসবে। এমনিতেই করোনাকালে বহু মানুষ কর্ম হারিয়ে অভাব-অনটনে জীবন কাটাচ্ছে। এ ছাড়া জ্বালানির দাম বাড়ার সঙ্গে হাটবাজারেও এর প্রভাব পড়বে। ফলে সাধারণ মানুষের জীবন নাভিশ্বাস হয়ে উঠবে। সূত্র: যুগান্তর
এদিকে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ার প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপিসহ রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন। তারা ডিজেল ও কেরোসিনের দাম কমানোর জোর দাবি জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ভোক্তা অধিকার সংস্থা কনশাস কনজ্যুমার্স সোসাইটি (সিসিএস) বলেছে, কোভিড-১৯ পরিস্থিতি বিরাজমান থাকা, নতুন দরিদ্রের সংখ্যা বৃদ্ধি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে জ্বালানির দাম বৃদ্ধি ভোক্তাদের ওপর অমানবিক চাপ সৃষ্টি করবে। এজন্য দাম বৃদ্ধি নয়, যথাসম্ভব কমিয়ে এনে পরিবহণ ভাড়া, পণ্য ও সেবামূল্য সহনীয় পর্যায়ে আনার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
সিসিএসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কোভিডের মধ্যে দেশে নতুন করে দরিদ্র হয়েছেন ২ কোটি ৪৫ লাখ মানুষ। মোট দরিদ্রের সংখ্যা ৪২ শতাংশ বা প্রায় ৭ কোটি। বেকার হয়েছে লাখ লাখ মানুষ। এর মধ্যে দফায় দফায় নিত্যপণ্যের মূল্য বেড়েছে। বহু পণ্যের মূল্য এখনো ঊর্ধ্বগতিতে। এমন পরিস্থিতিতে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি অত্যন্ত অমানবিক সিদ্ধান্ত। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে কেবল এই পণ্যটির মূল্য ওঠা-নামা করে না, এর সঙ্গে পরিবহন ভাড়া, বিদ্যুৎ, পানি, জ্বালানি ব্যবহার করে উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্য এবং সেবার মূল্যও বেড়ে যায়। ফলে সরকার একটি পণ্যের মূল্য বাড়ালেও ভোক্তাকে বহু পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির ভার সইতে হয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে যা ভোক্তা সাধারণের নাভিশ্বাস সৃষ্টি করবে। জ্বালানির দাম বৃদ্ধির ফলে পণ্যের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় দেশীয় পণ্য রপ্তানি প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে।
বিবৃতিতে বলা হয়, দাম বৃদ্ধির বিজ্ঞপ্তিতে আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য বৃদ্ধি এবং ভর্তুকি কমানোর যে কারণ দেখানো হয়েছে তা একেবারেই অযৌক্তিক। গত প্রায় আট বছর আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কম ছিল। অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি মাত্র ৪০ ডলারেও নেমে এসেছিল। কিন্তু তখন দেশে তেলের দাম কমানো হয়নি। প্রতিবেশী অনেক দেশেই জ্বালানি তেলের দাম উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমানো হয়েছিল। কিন্তু দেশের বাজারে না কমিয়ে সরকার বিপুল অর্থ লাভ করেছে। ফলে দেশীয় তেলের বাজার আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে তুলনা করা অযৌক্তিক।
এ ছাড়া এখন আর দেশে পেট্রল ও অকটেন আমদানি করার প্রয়োজন হয় না। দেশের বিভিন্ন গ্যাসক্ষেত্র থেকে প্রাকৃতিক গ্যাসের উপজাত হিসেবে পাওয়া কনডেনসেট দেশেই পরিশোধন ও প্রক্রিয়াকরণ করে পেট্রল ও অকটেন তৈরি হয়। এই পেট্রল ও অকটেন বিক্রি করেও লাভ করছে সরকার। ফলে কেরোসিন ও ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধি না করে বরং মূল্য কমানোর দাবি জানাচ্ছে সিসিএস।