পুনরায় অপরাধে জড়ালে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

ফানাম নিউজ
  ০১ নভেম্বর ২০২১, ২২:৫৩

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, সুন্দরবন অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি। এখানে মাছ কিংবা মধু আহরণ করা হতো। তবে এগুলোকে টার্গেট করে গড়ে ওঠে জলদস্যু ও বনদস্যু বাহিনী। অবশ্য এসব দুষ্কৃতকারীদের বাধ্য করা হতো অপরাধে। যার পেছনে ইন্ধন দাতারাও ছিল। তবে বর্তমানে সুন্দরবনের যে ধারা প্রবাহ অর্থাৎ জলদস্যুমুক্ত হয়েছে এটাকে ধরে রাখতে হবে। এ ধারা অব্যাহত এবং সুসংহত করতে  একটি স্থায়ী ক্যাম্প করা হবে।

তিনি বলেন, এখানে আর ডাকাতি হতে দেব না। সেটা নদী, উপকূল কিংবা বন হোক। সুন্দরবনে এখন শান্তি প্রবহমান। অথচ এখানে আগে মাছ ধরা জেলে কিংবা মধু আহরণকারীদের আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায় করাসহ নানা ধরনের অপরাধ করে আসছিল।  প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে তারই অংশ হিসেবে জলদস্যু কিংবা তার পরিবারের কথা চিন্তা করে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তারা যেন স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পারেন সে জন্য নগদ অর্থ, ঘরবাড়ি, গবাদিপশু এমনকি নৌকা ও জাল দেওয়া হয়েছে। যাতে করে তারা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ফিরে আসতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে এখানেই শেষ নয়। যাদেরকে এ ধরনের পুনর্বাসনের আওতায় আনা হয়েছে তাদের বিষয়ে নিবিড় নজরদারিও থাকবে। তারা যদি পুনরায় একই ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে সেক্ষেত্রে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সোমবার বাগেরহাটের রামপালে ‘দস্যুমুক্ত সুন্দরবন দিবস তৃতীয় বর্ষপূর্তি ও আত্মসমর্পনকৃতদের পুনর্বাসন’ অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আর যেসব জলদস্যু আত্মসমর্পণ করেছেন অথচ তাদের মামলা আছে এসব মামলাগুলো কিভাবে প্রত্যাহার করা যায় এ জন্য পাবলিক প্রসিকিউটরসহ (পিপি) সংশ্লিষ্ট দপ্তর বা বিভাগের সঙ্গে আমরা সমন্বয় করে যাচ্ছি। আশা করছি সেক্ষেত্রে সহসাই এসব মামলা তুলে নেওয়া বা প্রত্যাহার হয়ে যাবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঠিক ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্তে এটি সম্ভব হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, তার নির্দেশে যেমন সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ মাদক নির্মূলে কাজ করে যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঠিক তেমনিভাবেই সুন্দরবনকে নিরাপদে রাখতে সব ধরনের কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখা হবে। ২০১৬ সালের ৩১ মে থেকে ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর পর্যন্ত শুধু সুন্দরবন থেকে ৩২৮ জন দস্যু আত্মসমর্পণ করেছে। সুন্দরবন যেন পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয় সেজন্য শুধু র‌্যাব নয়, পুলিশ, কোস্টগার্ডসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়ে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, দস্যু নির্মূলে সব বাহিনী কাজ করলেও প্রধানমন্ত্রীর সাহসী ও সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারণে জলদস্যুরা পিছু হটে এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসছে।

এর আগে মন্ত্রী আত্মসমর্পণকারী ৩২টি জলদস্যু বাহিনীর ৩২৮ জনকে ১০২টি ঘর, মুদি দোকান ৯০টি, জাল ও মাছ ধরার নৌকা ১২টি। এর মধ্যে ইঞ্জিনচালিত নৌকা ৮টি ও ২২৮টি গবাদিপশু  জলদস্যু ও তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন।

সূত্র: যুগান্তর