শিরোনাম
সিলেটের কলেজ ছাত্র আরিফুল ইসলাম রাহাত হত্যার মূল হোতা সামসুদ্দোহা সাদি ২১ অ্ক্টোবর হত্যাকাণ্ডের পর পালিয়ে যায়। ঘটনার একদিন পর দক্ষিণ সুরমা থানায় মামলা হলে তদেন্তের দায়িত্ব পান থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) কল্লোল গোস্বামী।
আলোচিত মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পেলেও সাফল্য দেখাতে পারেনি দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশ। ২৬ অক্টোবর কুষ্টিয়া থেকে সাদিকে গ্রেফতার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি। দ্রুততম সময়ে আসামিকে গ্রেফতারে সফল হওয়ায় মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সংস্থাটি। পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে দক্ষিণ সুরমা থানা থেকে মামলার ডকেট হস্তান্তর করা হয় সিআইডির হাতে। ২৯ অক্টোবর সাদি নিজেকে জড়িয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। আদালতের বিচারক জবানবন্দি নেওয়ার পর তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন।
বর্তমানে সে কারাগারে থাকলেও এখনো অধরা খুনের পরিকল্পনাকারী সাদির দুই বন্ধু তানভীর আহমদ ও ওহিদুর রহমান সানি। নিহত আরিফুল ইসলাম রাহাত ও তার হত্যাকারীরা একই কলেজের ছাত্র ও সহপাঠি। পলাতকদের হদিস পাচ্ছেনা মামলার তদন্তে নিয়োজিত পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। ঘটনার ১০ দিন পার হতে চললেও অপর দুই আসামির অবস্থান এখনো সুনিশ্চিত হতে পারেনি সংস্থাটি।
তবে দ্রুততম সময়ের মধ্যে অপর দুই আসামিকেও গ্রেফতার করা হবে, এমনটি আশাবাদ প্রকাশ করেছে সিআইডি। অভিযুক্ত পলাতকদের ধরতে মাঠে কাজ করছে সিআইডির সব ক’টি টিম। সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুজ্ঞান চাকমা জানান, মূল আসামি ধরা পড়লেও বাকি দু’জন এখনও ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। ওই দুই আসামিকেও গ্রেফতার করতে জোর অভিযান চালাচ্ছে আমাদের টিম।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির উপ পরিদর্শক (এসআই) রিপন দে জানান, রাহাত হত্যা মামলার বাকি দুই আসামি তানভীর ও সানীকে ঘিরে জাল বিস্তার করা হয়েছে। খুব শিগগিরই আসামিরা আমাদের জালে আটকা পড়বে। তাদের গ্রেফতারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
২১ অক্টোবর দক্ষিণ সুরমা সরকারি কলেজ গেটের ভেতরে খুন হন উপজেলার পুরাতন তেতলি এলাকার সুরমান আলীর ছেলে ও দক্ষিণ সুরমা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র আরিফুল ইসলাম রাহাত (১৮)।
সেদিন দুপুরে চাচাতো ভাই আশরাফুলকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে কলেজ ক্যাম্পাসে যান তিনি। সেখানে বন্ধুদের না পেয়ে সোয়া ১২টার দিকে কোচিং সেন্টারে যাওয়ার জন্য রওয়ানা দেন। কলেজ ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে আসার সময় প্রধান ফটকের ভেতরে থাকা অবস্থায় আরেকটি মোটরসাইকেলে করে এসে অতর্কিতভাবে রাহাতের উরুতে ছুরিকাঘাত করেন ছাত্রলীগের কর্মী সামসুদ্দোহা সাদি ও তার সহযোগীরা। পরে রাহাতকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। নিহত রাহাতও ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন। ঘটনার পর (২৩ অক্টোবর) রাহাতের চাচা শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে দক্ষিণ সুরমা থানায় সাদিসহ ৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৬-৭ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সাদি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানান, সিনিয়র না মানায় রাহাতকে শায়েস্তা করতে গিয়ে ছুরিকাঘাত করেছিলেন। এরপর হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি দক্ষিণ সুরমা উপজেলার সিলাম হাজীপুর এলাকার একটি ডোবায় ফেলে ঢাকা হয়ে কুষ্টিয়ায় চলে যান। সেখান থেকে তাকে গ্রেফতার করে সিআইডি। তার দেখানো স্থান থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করা হয়েছে।
কলেজের অধ্যক্ষ মো. শামছুল ইসলাম জানান, রাহাত হত্যার পর ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত কলেজে পাঠদান বন্ধ ছিল। ঘটনার মূল হোতা শামসুদ্দোহা গ্রেফতার হওয়ায় বুধবার থেকে আবার পাঠদান শুরু হয়েছে।
সূত্রঃ বাংলানিউজ