শিরোনাম
সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় হামলা চালিয়ে পুলিশ সদস্যদের হত্যা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ১৩ পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। অনেকেই পালিয়ে বেঁচেছেন। সে সময় বাঁচার জন্য অনেক কাকুতি-মিনতি করেছেন জিম্মি পুলিশ সদস্যরা। তবে এসপিসহ ঊর্ধ্বতনদের সাড়া পাননি।
থানায় আটকে পড়াদের মধ্যে দুজন জীবন নিয়ে ফিরতে পেরেছেন নিজেদের বুদ্ধিমত্তায়। নিরাপত্তার কারণে তাদের পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে বেঁচে ফেরা এক কনস্টেবলের ঘটনাটি জানান জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর এক পরিদর্শক।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই পরিদর্শক বলেন, পুলিশ নিজের জীবন দিয়ে মানুষের নিরাপত্তা রক্ষা করে। কিন্তু পুলিশের সদস্যরা যখন বিপদে পড়লেন তখন বাহিনীর ঊর্ধ্বতনরা কেউ এগিয়ে আসলেন না। কোনো ধরনের সহযোগিতা না পেয়ে আন্দোলনকারীদের হাতেই নির্মমভাবে মাঠের পুলিশ সদস্যদের মৃত্যু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ বাঁচার আকুতি জানিয়ে শত শত পুলিশ সদস্য ফোন করেছেন। তারা জানিয়েছেন পুলিশ সুপারসহ কেউ তাদের ফোন ধরছেন না। কেউ কোনো সহযোগিতা করছেন না। আমার পূর্ব পরিচিত এক কনস্টেবল সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় দায়িত্ব পালন করছিলেন। হঠাৎ থানায় আক্রমণ হলে তারা সবাই পুলিশ সুপারকে জানান। কিন্তু তিনি কোনো সহযোগিতা করেননি। এমনকি একটা পর্যায়ে ফোন ধরা বন্ধ করে দেন।
আক্রমণকারীদের হামলায় নির্মমভাবে পুলিশ সদস্যদের মৃত্যু হয়। এ সময় বেঁচে ফেরা দুজন পানির ট্যাংকে আশ্রয় নেন। সেখান থেকে তারা বাঁচানোর আকুতি জানিয়ে ৯৯৯ এ ফোন করেন। কলটি আমি রিসিভ করে তার পরিচয় পেয়ে চিনে ফেলেছি।
ওই কনস্টেবল ৯৯৯ এ বলেন, স্যার আমাদের বাঁচান। সবাইকে মেরে ফেলেছে। আমরা পানির ট্যাংকিতে আশ্রয় নিয়েছি। কোনো মতে নিঃশ্বাস নিচ্ছি, স্যার আমাদের বাঁচান।
৯৯৯ এর ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, অন্য একটি জেলার এক উপ-পরিদর্শক হামলায় মারা যান। কিন্তু পুলিশ সুপার সেই তথ্য পরিবারের কাছে গোপন করেন। নিহত এসআইয়ের স্ত্রী ৪ ঘণ্টা নানাভাবে চেষ্টা করেও কোনো তথ্য না পেয়ে আমাকে ফোন দেন। আমি মাত্র দুই মিনিটের মধ্যে ওই নারীকে জানাই যে তার স্বামী হামলায় মারা গেছেন।
এ কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা সাধারণ পুলিশ সদস্যরা হামলার শিকার হলাম, প্রাণ দিলাম। আর যারা পুলিশের এই পরিণতির জন্য দায়ী তারা ঠিকই বেঁচে আছেন। নিরাপদ আশ্রয়ে আছেন। এই সকল ঘটনার জন্য দায়ী কর্মকর্তাদের বিচার চাই।