শিরোনাম
ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সুন্দরবনের। ঝড়ের কবলে মারা পড়েছে হরিণসহ অন্যান্য প্রাণী। সোমবার (২৭ মে) বিকেলে বনের কটকা ও দুবলা এলাকা থেকে দুটি মৃত হরিণসহ ৯টি আহত হরিণ ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করেন বনরক্ষীরা।
এছাড়া রিমালের তাণ্ডবে বনের অভ্যন্তরে ২৫টি টহল ফাঁড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লবণ পানি ঢুকে নষ্ট হয়েছে অন্তত ৮০টি মিষ্টি পানির পুকুর।
খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো জানান, রোববার বিকেল থেকে একটানা ২০ ঘণ্টা রিমালের তাণ্ডব ও জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবনের প্রাণপ্রকৃতির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গাছপালার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি বনবিভাগের বিভিন্ন বন অফিস, টহল বোট, টিনের চালা, সোলার প্যানেল ও অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে। এ সময় জলোচ্ছ্বাসের কবলে পড়ে কটকা অভয়ারণ্যের অফিস ঘাটের জেটি ও পুকুর বঙ্গোপসাগর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। দুবলা, কটকা, কচিখালী, বগিসহ বিভিন্ন বন অফিসসহ ২৫টি টহল ফাঁড়ির টিনের চালা উড়িয়ে নিয়ে গেছে ঘূর্ণিঝড়।
সুন্দরবনের অভ্যন্তরে মিঠাপানির পুকুরগুলোও জলোচ্ছ্বাসে লোনাপানিতে তলিয়ে গেছে। সুন্দরবনের ৮০টি মিঠাপানির উৎস পুকুর ৮ থেকে ১০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে লোনাপানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বনকর্মীদের পাশাপাশি বাঘ, হরিণসহ বন্যপ্রাণীরাও সুপেয় পানির সংকটে পড়েছে। সুন্দরবনের বন্যপ্রাণীর অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গিয়ে মারা যাওয়ার খবরও মিলেছে।
সোমবার বিকেলে সুন্দরবনের কটকা ও দুবলা এলাকার নদী থেকে দুটি মৃত হরিণ উদ্ধার করেন বনকর্মীরা। এ সময় দুবলা এলাকা থেকে আহত আরও ৯টি হরিণ ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
তবে হরিণের পাশাপাশি আরও বণ্যপ্রাণী মারা যেতে পারে উল্লেখ করেন বন কর্মকর্তা মিহির কুমার। সেইসব মৃত প্রাণীর খোঁজে বনরক্ষীরা তৎপর বলেও জানান তিনি।
ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পূর্ব সুন্দরবনের একমাত্র করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন ও পর্যটন কেন্দ্রের বিভিন্ন অবকাঠামো। সেখানে দায়িত্বরত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে এখানকার পর্যটক চলাচলের কাঠেরপুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেঙে তছনছ হয়েছে অসংখ্য গাছপালা। তবে পুরো সুন্দরবনের গাছপালাসহ কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এখনই বলা সম্ভব নয়।