শিরোনাম
যোগ্য নেতৃত্বের কারণে আবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসেছেন বলে মন্তব্য করেছেন ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাউরো ভিয়েরা।
রোববার (৭ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে বৈঠক শেষে ঢাকা সফররত ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।
ব্রাজিলিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গ্লোবাল সাউথের একটি বলিষ্ঠ কণ্ঠ হিসেবে বাংলাদেশ বিভিন্ন ইস্যুতে ব্রিকসে অবদান রাখতে সক্ষম। এছাড়া তিন দেশীয় ইন্ডিয়া, ব্রাজিল ও সাউথ আফ্রিকা (ইবসা ফোরাম) ফোরামে যুক্ত হওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ব্রাজিল এটাকে স্বাগত জানায় এবং আমরা এ বিষয়ে অন্য দুই সদস্য রাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করবো।
ভিয়েরা বলেন, ব্রাজিলের প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে বাংলাদেশে আসা আমার জন্য সম্মানের। গত এক দশকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে সামাজিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। অনেক ইস্যু আছে যেখানে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারি। বিশেষ করে শিক্ষা, কৃষি, বাণিজ্য। আমরা আজকে কারিগরি সহযোগিতা সংক্রান্ত একটি চুক্তি করেছি, যে ফ্রেমওয়ার্কের আওতায় আমরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। আমরা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের ব্রাজিলে বৃত্তি নিয়ে পড়তে যাওয়ার অফার করেছি।
হাছান মাহমুদ বলেন, ৫২ বছরের মধ্যে এটি ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রথম বাংলাদেশ সফর। তৈরিপোশাকে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিতে তাকে বলেছি। আমাদের অর্থনৈতিক অঞ্চলে ব্রাজিলের বিনিয়োগের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আইটি সেক্টরে বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা করেছি। ব্রাজিলে ওষুধ ও সিরামিকস পণ্য রপ্তানি নিয়ে আলোচনা করেছি। ব্রিকসে বাংলাদেশের যুক্ত হওয়া নিয়ে আলোচনা করেছি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ব্রাজিলে বৃত্তি অফার করায় তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছি। আমরা ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দুজন ব্রাজিলিয়ান ট্রেইনি ডিপ্লোম্যাটকে ট্রেনিং করার অফার করেছি। আমরা অনেক ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেছি। দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক ইস্যু নিয়ে বিশেষ করে, গাজা নিয়ে আলোচনা করেছি। রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেছি এবং তাদের সমর্থন চেয়েছি। আমরা আশা করছি, বিশ্ব সম্প্রদায় মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগ করবে এবং মিয়ানমার তাদের লোকদের ফিরিয়ে নেবে।
এদিকে, দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পরিবহন খাতে বায়ো-ফুয়েলসহ অন্যান্য কম দূষণীয় জ্বালানির ব্যবহার উৎসাহিত করার জন্য বাংলাদেশ ও ব্রাজিল পরস্পর সহযোগিতা, গবেষণা ও বিনিয়োগ করতে সম্মত হয়েছে। একই সঙ্গে ঢাকায় ব্রাজিলের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ইথানল সংলাপ করার জন্য বাংলাদেশের আগ্রহকে স্বাগত জানিয়েছে ব্রাজিল।
জ্বালানি নিরাপত্তার গুরুত্বকে বিবেচনায় নিয়ে উভয় দেশ জ্বালানি খাতে দূষণ কমানো এবং জ্বালানি রূপান্তরের বিষয়কে দুই দেশ স্বীকার করে নেয় বলে বিবৃতিতে জানানো হয়।
দুই দিনের সফরে রোববার সকালে ঢাকায় আসেন ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশের পর এই প্রথম কোনো ব্রাজিলিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায় এলেন। বিমানবন্দরে ভিয়েরাসহ তার সঙ্গে থাকা বড় একটি প্রতিনিধি দলকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন।
ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এদিন তিনি ঢাকা ছেড়ে যাবেন।