আগুন লাগা ভবনে ছিল না অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা : পিবিআই

ফানাম নিউজ
  ০২ মার্চ ২০২৪, ০৮:০৪

বেইলি রোডের গ্রিন কজি কটেজ ভবনে পর্যাপ্ত অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না বলে জানিয়েছেন পিবিআই এসপি মিজানুর রহমান শেলী। তিনি জানান, বড় কোনো বিস্ফোরণ নয়, ভবনের ভয়াবহ আগুন সিলিন্ডার অথবা গ্যাসলাইন থেকে ঘটতে পারে।

শুক্রবার (১ মার্চ) সকালে বেইলি রোডের পুড়ে যাওয়া ভবনের সামনে তদন্ত চলাকালীন গণমাধ্যমকে এসব কথা জানান পিবিআই এসপি মিজানুর রহমান শেলী।

আগুন লাগার কোনো সূত্র পাওয়া গেছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোন তলা থেকে আগুন লেগেছে আমরা নির্দিষ্ট করে বলতে পারছি না। প্রত্যক্ষদর্শীরা দ্বিতীয় তলা কেউবা প্রথম তলার কথা বলেছেন। ওপরে আগুন লেগে থাকলে সেখান থেকে ওপরেই যাওয়ার কথা। সেক্ষেত্রে নিচ তলা থেকেও হতে পারে। এটা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

পিবিআইয়ের এই কর্মকর্তা বলেন, আগুন বিস্ফোরণ থেকে হয়নি। অন্যান্য ঘটনায় দেখেছি বিস্ফোরণ হয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে কিন্তু এখানে তেমনটি হয়নি ধারণা করা যায়। এই ভবনের সামনে গ্লাস ফিটিং, ভেতরে যে ধোঁয়া ছিল বের হওয়ার সুযোগ ছিল না। আমাদের লোকজন কাজ করছে, ভেতরে এখনও প্রচুর ধোঁয়া রয়েছে।

তিনি বলেন, ভয়াবহ আগুনে এখন পর্যন্ত পুড়ে মারা গেছে ৪৬ জন। তাদের দেখে মনে হয়েছে বেশির ভাগ মানুষ শ্বাসকষ্টে মারা গেছে। এ থেকে বোঝা যায় ভবনটিতে ভ্যান্টিলেটর ও অগ্নিনিরাপত্তার অভাব ছিল।

ভবনে আগে থেকে অগ্নিনির্বাপক পর্যাপ্ত যন্ত্র ছিল কি না বা নিরাপত্তার অভাব ছিল কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা আসলে তদন্ত ছাড়া বলা যাবে না। আমরা নিচে কিছু অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র দেখেছি। হয়তো সব ফ্লোরে ছিল না। তবে ভবনে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ও ভ্যান্টিলেটরের অভাব ছিল। এক্ষেত্রে সঠিক সময়ে সঠিক ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ। ওই সময়ে মানুষ এটা ব্যবহার করতে পারে না। ফায়ার সার্ভিস প্রতিবেদন দিলে আমরা সম্পূর্ণ বলতে পারব।

এর আগে, বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে ভবনটির দ্বিতীয় তলায় আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিটের চেষ্টায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ভবনের ভিতর থেকে ৭৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতদের কেউই শঙ্কামুক্ত নন।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (প্রশিক্ষণ, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেজাউল করিম গণমাধ্যমকে বলেন, একটিমাত্র সিঁড়ি থাকা অগ্নিনিরাপত্তা প্রোটোকলের একটি বড় ত্রুটি। ভবনটিতে বেশ কয়েকটি রেস্তোরাঁ ছিল এবং সিঁড়ির পাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল গ্যাস সিলিন্ডার। যার কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়েছে।

এদিকে ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। শেখ হাসিনা তার শোকবার্তায় নিহতদের মাগফেরাত কামনার পাশাপাশি বেঁচে যাওয়াদের দ্রুত চিকিৎসা প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তাৎক্ষণিক নির্দেশনা দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৮০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।