শিরোনাম
প্রকল্প শেষে পরিবহন খুলে গাড়ি জমা না দিলে আগামী দিনে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন নতুন জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
মন্ত্রিসভায় পদোন্নতি পেয়ে জনপ্রশাসনমন্ত্রী নিয়োগ পাওয়ার পর প্রথম দিন রোববার (১৪ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
ফরহাদ হোসেন বলেন, ক্যাডার বৈষম্য নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। একই সঙ্গে শুরুতেই মন্ত্রণালয়-বিভাগগুলোর জনবল কাঠামো (অর্গানোগ্রাম) যুগোপযোগী করা হবে বলেও জানান জনপ্রশাসনমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আমরা ১৫ বছরের পুরোনো গাড়িগুলো পরিবর্তন করতে চাচ্ছি। আরেকটি চ্যালেঞ্জ, যেটি আমি করতে পারিনি। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প যখন শেষ হয়ে যায়, সেই প্রকল্পের গাড়িগুলো পরিবহন পুলে এসে পৌঁছানোর কথা, কিন্তু বিভিন্ন কারণে গাড়িগুলো এসে পৌঁছায়নি। এবার আমরা খুবই কঠোর পদক্ষেপ নেবো। আইএমইডি থেকে আমরা জানবো কতগুলো প্রকল্প আছে, সেই প্রকল্প কবে শেষ হয়েছে, গাড়িগুলো কোথায় আছে, সেই গাড়িগুলো আমাদের পরিবহন পুলে জমা দিতে হবে। বিষয়টি এবার আমরা খুব শক্তভাবে দেখার চেষ্টা করবো।
ক্যাডার বৈষম্য রয়েছে তা নিরসনে কী পদক্ষেপ নেবেন- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ক্যাডার বৈষম্যের বিষয়গুলো আমরা এরই মধ্যে যথার্থভাবে দেখার চেষ্টা করেছি। সামনের দিন এগুলো নিয়ে আমাদের কাজ করার সুযোগ থাকবে। আমরা চাইবো বৈষম্য যাতে শূন্যতে আসে। এ বিষয়ে আমরা কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অর্গানোগ্রাম যুগোপযোগী নয়- এ বিষয়ে ফরহাদ হোসেন বলেন, আমরা অর্গানোগ্রামগুলো পরিবর্তন করছি। এগুলো পরিবর্তন করতে হলে নিজ নিজ মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব আসতে হয়। আমাদের অধিকাংশ মন্ত্রণালয় ৪-৫ জন করে অতিরিক্ত সচিব আছেন। কিন্তু সেখানে হয়তো পদ আছে দুটি। তাই সেখানে আমাদের বেশি করে পদায়ন করতে হচ্ছে। আমরা এবার প্রথম দিকেই মন্ত্রণালয়গুলোকে আহ্বান করবো বাস্তবতার নিরিখে তারা যাতে আমাদের কাছে তাদের অর্গানোগ্রামে কী পরিবর্তন দরকার যুগোপযোগী করে সেটি যাতে বাস্তবভিত্তিক হয়, সেভাবে আমাদের কাছে প্রস্তাব পাঠালে দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা অর্গানোগ্রামটাকে আপডেট করবো। সেটি করতে পারলে আমরা তখন প্রোপার অ্যাসেসমেন্টটা করতে পারবো, কোন জায়গাতে কত লোক লাগবে এটা আমরা প্রথমে শুরু করবো ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, গত পাঁচ বছরে আমি মন্ত্রণালয়ের কাজগুলো বুঝে নিয়েছিলাম। বাজেট বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা ব্যাপক প্রকল্প গ্রহণ করেছি। আমাদের সরকারি কর্মকর্তারা সেগুলো অত্যন্ত দক্ষতা ও যোগ্যতার সঙ্গে সম্পন্ন করতে পেরেছে। সময়ের সঙ্গে তাল দেখে আমরা কর্মকর্তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণ দেওয়া, মানসিক অরিয়েন্টেশন করা। যথা মানুষকে যথা জায়গায় বসানো। এ কারণে আমরা যথেষ্ট যোগ্যতার সঙ্গে ভালো ফলাফলের সঙ্গে কাজ করতে পেরেছি।
আগামী পাঁচটি বছর খুবই গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করে ফরহাদ হোসেন বলেন, ইশতেহারে কর্মসংস্থান তৈরি করার বিষয়ে বলা হয়েছে। প্রতি বছর ২০ লাখ করে আমাদের কর্মসংস্থান হবে। সেক্ষেত্রে জনপ্রশাসনের একটি বড় ভূমিকা রয়েছে।
‘সরকারি পদগুলো পূরণ করাসহ, আধা সরকারি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে যেখানে শূন্যপদ রয়েছে সেগুলো পূরণ করা। বেসরকারিভাবে যাতে আরও অনেক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয় সেখানে যাতে আমাদের জনপ্রশাসন থেকে বিভিন্ন সেমিনার, যোগাযোগ- সেই কাজগুলো করে যাতে আমরা এগিয়ে নিতে পারি। সেজন্য আমাদের প্রশিক্ষণটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রশিক্ষণের ওপর আমরা বরাবরই জোর দিচ্ছি।’ বলে ফরহাদ হোসেন।
জনপ্রশাসনমন্ত্রী বলেন, কর্মকর্তারা যাতে নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে খাপ খাইয়ে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে পারে সেজন্য আমরা গত পাঁচ বছর গুরুত্ব দিয়েছি। আগামী পাঁচ বছর এ বিষয়গুলোতে আরও গুরুত্ব থাকবে। আমরা যেন সেবা ও সেবামুখী মানসিকতা আরও বাড়াতে পারি। যেখানে এখনো কিছুটা ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে, সেখানে ভোগান্তি মুক্ত করে ফেলা।
দেশে বেকারের সংখ্যা এখন তিন শতাংশ জানিয়ে তিনি বলেন, সেটাকে আমরা আরও কমাতে পারি, একটা সন্তোষজনক অবস্থায় নিতে পারি। আগামী দিনগুলোতে দক্ষ জনশক্তি গড়ার দিকে আমরা বেশি মনোযোগ দিচ্ছি।
মন্ত্রী আরও বলেন, আমরা এখন নিরীক্ষা করবো, কোথায় কোন প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি হয়েছে কিন্তু পদ সৃজন হয়নি। আমরা আরও দ্রুততার সঙ্গে পদ সৃজন করার চেষ্টা করবো। তাহলে আমরা দ্রুততার সঙ্গে সেই পদগুলো পূরণ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবো।