শিরোনাম
রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে জঙ্গিরা মাথাচারা দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে কি না, অনেকে এমন আশঙ্কা করেন। এটা খুবই স্বাভাবিক। জঙ্গি সংগঠনগুলো এমন পরিস্থিতির সুযোগ নেয়। বিভিন্ন দেশে নজিরও রয়েছে। আমাদের দেশের জঙ্গি সংগঠনগুলো এসময়ে রি-অর্গানাইজ করার চেষ্টা করেছিল বিভিন্ন ফর্মে।
সোমবার (২০ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে এসব কথা বলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান ও অতিরিক্তি পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া কিংবা ইমাম মাহমুদের কাফেলা দেখলে দেখা যায় জঙ্গিরা বিভিন্নভাবে রি-অর্গানাইজ করার চেষ্টা করেছিল। সিটিটিসির তৎপরতায় জঙ্গিদের সব তৎপরতা নস্যাৎ করে দেওয়া হয়েছে। আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া যেভাবে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছিল এটা বাংলাদেশের জঙ্গিবাদের একটা বিরল ঘটনা। তাদের সব সদস্যকে সশস্ত্র প্রশিক্ষিত করে তুলবে এটি ইতোপূর্বে হয়নি। ঠিক তাদের মতো করতে চেয়েছিল জঙ্গি সংগঠন ইমাম মাহমুদের কাফেলা।
রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে জঙ্গি অভিযানে কিছুটা ভাটা পড়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে সিটিটিসি প্রধান বলেন, সিটিটিসি জঙ্গিবিরোধী ও সন্ত্রাসবাদবিরোধী অভিযানের জন্য ডেডিকেটেড। আমাদের অভিযান চলমান। গত মাসেও মৌলভীবাজারের বড় পাহাড়ে দুটি অভিযান চালানো হয়েছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতি বা নির্বাচনের কারণে জঙ্গি অভিযানে ভাটা পড়বে না।
‘আগের মতোই অফলাইন ও অনলাইনে সিটিটিসির সার্ভেলেন্স রয়েছে’, যোগ করেন তিনি।
পলাতক দুই জঙ্গির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মো. আসাদুজ্জামান বলেন, গত বছরের এই দিনে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে দুই সাজাপ্রাপ্ত জঙ্গিকে আনসার আল ইসলামের সদস্যরা ছিনিয়ে নেয়। তাদের উদ্দেশ্য ছিল চার জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়া। জঙ্গি ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছি। এ ঘটনায় জেলখানা ও বাইরের মূল সমন্বয়ক পলাতক জঙ্গি আবু সিদ্দিক সোহলের স্ত্রী শিখা। শিখাকে আমরা গ্রেফতার করেছি। সর্বশেষ গত মাসে ঢাকার পার্শ্ববর্তী একটি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়, তবে দুর্ভাগ্যবশত অভিযানের দু-তিনদিন আগে পলাতক জঙ্গি আবু সিদ্দিক সোহেল আস্তানা ত্যাগ করে। ডা. বখতিয়ার নামে একজন তাকে আশ্রয় দিয়েছিলেন। আমরা তাকে গ্রেফতার করেছি এবং তিনি আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
সিটিটিসির এ কর্মকর্তা আরও বলেন, আমরা আশাবাদী দুই পলাতক জঙ্গিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হবো। একজন সাধারণ অপরাধীর সঙ্গে জঙ্গিকাণ্ডে অপরাধীকে কোনোভাবেই এক করা যাবে না।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আসাদুজ্জামান বলেন, এ ধরনের শীর্ষ ও ভয়ঙ্কর জঙ্গিদের আদালতসহ যে কোনো জায়গায় আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে আরও বেশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার ছিল। তাতে অবশ্যই ঘাটতি ছিল। পরবর্তী সময়ে এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এ ধরনের আসামি আদালতে আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রেও গাইডলাইনস দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা দ্বিতীয়টি ঘটানোর শক্তি-সামর্থ্য জঙ্গি সংগঠনের নেই।