শিরোনাম
মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরা পয়েন্ট দিয়ে পদ্মা নদীর দুই প্রান্তকে যুক্ত করছে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প। ইতিমধ্যে প্রকল্পের ৮৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী জুন মাসেই সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরুর আশা করা হচ্ছে। তখন রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা মোড় যেতে সময় লাগবে মাত্র ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট। সূত্র: নিউজ বাংলা
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ দ্বিতল এই সেতুর ওপর দিয়ে চার লেন দিয়ে চলবে গাড়ি, নিচ দিয়ে চলবে ট্রেন। সেতুর তলদেশ দিয়ে যেকোনো ধরনের নৌযান চলাচল করতে পারবে অনায়াসে। সেতুর নিচতলা দিয়ে যাচ্ছে গ্যাসের পাইপলাইন, যে লাইন দিয়ে গ্যাস পৌঁছাবে এই জনপদসহ আশপাশের অনেক জেলায়।
তাই পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের কাজের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অনেক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড চলছে মুন্সিগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও ফরিদপুর। এই প্রকল্পের কাজ ও প্রকল্প ঘিরে যেসব উন্নয়নমূলক কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে সম্প্রতি তা ঘুরে দেখেছেন আমাদের বিশেষ প্রতিবেদক। কথা বলেছেন এসব জেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে।
সেতুকে কেন্দ্র করে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে যেসব প্রকল্পের কাজের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তা দেখে জীবনমান উন্নয়নের স্বপ্ন দেখছেন একসময়কার অবহেলিত এই জনপদের মানুষ। তাই পদ্মার এপার-ওপার দুই পারের মানুষেরই এখন আগ্রহ-উচ্ছ্বাসের কেন্দ্রবিন্দু কবে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে পদ্মা সেতু।
শেখ হাসিনা তাঁত পল্লী
পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা এবং মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার কুতুবপুর মৌজার ১২০ একর জমিতে হচ্ছে শেখ হাসিনা তাঁত পল্লী। প্রকল্পের পাশেই পদ্মা সেতুর শরীয়তপুর প্রান্তের রেল স্টেশন। এই স্টেশনের কারণে এখানকার তাঁতিরা কাঁচামাল সংগ্রহ ও উৎপাদিত পণ্য সহজে আনা-নেয়া করতে পারেন। স্থানীয় লোকজন মনে করছেন, শেখ হাসিনা তাঁত পল্লী প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিপুলসংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড। বর্তমানে প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজ চলছে। এর জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। এর পুরোটাই সরকারি তহবিল থেকে দেয়া হবে। প্রথম পর্যায়ের এই কাজের মেয়াদ ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত।
প্রকল্প এলাকা ঘুরে ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভূমি অধিগ্রহণ শেষে ভরাটের মাধ্যমে চলছে ভূমি উন্নয়নকাজ। এরপর শুরু হবে অবকাঠামো উন্নয়নকাজ। কর্মসংস্থানের পাশাপাশি তাঁতিদের দক্ষতা বৃদ্ধি, পণ্যের গুণগত মান উন্নয়ন, বাজারজাতকরণ, পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে তাঁতবস্ত্র সরবরাহের মাধ্যমে তাঁতিদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়েই তাঁত পল্লী গড়ে উঠছে।
তাঁত বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রকল্পটির আওতায় তাঁতিদের কাপড় বোনার আগে ও পরে বিভিন্ন সুবিধা দেয়া হবে। সেখানে তাঁতিদের জন্য থাকবে আবাসিক ভবন, তাঁত শেড, ডরমেটরি, রেস্ট হাউস, সাইবার ক্যাফে ও বিদ্যুতের উপকেন্দ্র। সপ্তাহে এক বা দুই দিন তাঁতপণ্যের হাট বসানোর চিন্তা রয়েছে। যে হাটে সুতাসহ বিভিন্ন কাঁচামাল বিক্রয় ও প্রদর্শনী হবে। মূলত তাঁতের কাপড় বোনা থেকে শুরু করে পোশাক তৈরি ও বিক্রি পর্যন্ত সব ব্যবস্থাই করা হবে পুরো প্রকল্পের আওতায়।
শেখ হাসিনা তাঁত পল্লীর (প্রথম পর্যায়) প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মাদ জাহাঙ্গীর আলী খান বলেন, ‘প্রথম পর্যায়ে আমরা শুধু ভূমি অধিগ্রহণ, ভূমি উন্নয়ন আর সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করব। এরই মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ হয়ে গেছে। এখন বালু ভরাট করে ভূমি উন্নয়ন করছি। বালু ভরাটের কাজ ৬০ শতাংশ হয়ে গেছে। করোনার কারণে আমাদের কাজ একটু পিছিয়ে পড়েছে। তারপরও আশা রাখি, আগামী বছরের জুনের মধ্যেই প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ করতে পরব।’
তিনি জানান, প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে মূলত তাঁত পল্লীর অবকাঠামো তৈরির যাবতীয় কাজ হবে। একটি আদর্শ তাঁত পল্লীতে যা যা থাকা উচিত তার সবই থাকবে সেখানে।
শেখ হাসিনা তাঁত পল্লী প্রকল্পের আওতায় কী কী হবে, তার একটা খসড়া করা হয়েছে জানিয়ে প্রকল্প পরিচালক বলেন, ‘প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষে আমরা তাঁত পল্লী উন্নয়নের এই খসড়া পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে দিব। তারা এগুলো দেখে প্রয়োজনে নতুন কিছু যোগ করতে পারে, নাও পারে। সবমিলে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান শেখ হাসিনা তাঁত পল্লীর একটা মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করবে। পরে সেটা একনেকে পাস হলেই দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হবে।’
জাহাঙ্গীর আলী খান বলেন, ‘আমরা আশা করছি, এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে আমাদের তাঁতশিল্প অনেক দূর এগিয়ে যাবে। কারণ পদ্মার ওই এলাকা হবে পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় জায়গা। মানুষ সেখানে ঘুরতে গিয়ে এই তাঁত পল্লীর সঙ্গে পরিচিত হবে। তারা তাঁতের বিভিন্ন সামগ্রী কেনাকাটা করবে।’
কথা হয় পশ্চিম নাওডোবা ইউনিয়নের জমাদ্দারকান্দি গ্রামের মহসীন জমাদ্দারের, যার বাড়ি তাঁত পল্লীর পাশেই। পদ্মা সেতু আর এই তাঁত পল্লী তাকে নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছে।
মহসীন জমাদ্দার বলেন, ‘রাস্তার পাশেই আমার মুদি দোকান, দই-মিষ্টিও বেচি। এখানে তাঁত পল্লী হলে অনেক মানুষ আসবে, বেচা-বিক্রি বাড়বে। তাই চিন্তা করছি, ডেইরি খামার দেব। খামারের দুধ দিয়ে উন্নতমানের মিষ্টি বানাব।
‘আশা করছি, সেই মিষ্টির জন্য এখানে যারা আসবে, তারা খেতে পারবে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লোক কিনেও নিয়ে যেতে পারবে। তাঁত পল্লীতে যেমন এলাকার লোকের কাজ হবে। আমরা যারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ব, সেখানেও এলাকার মানুষ কাজ পাবে।’
আলতাফ হোসেন নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘আমাদের এলাকাটি ছিল খুব অনুন্নত। এখন পদ্মা সেতু হচ্ছে, তাঁত পল্লী হচ্ছে। এই এলাকা এখন শহরের মতো হয়ে যাবে। আলো ঝলমল করবে। দেশি-বিদেশি মানুষ আসবে। আমাদের এলাকাটি হবে পর্যটন এলাকা। এ কথা ভাবতেই আনন্দ লাগছে।’
এই তাঁত পল্লী হওয়ার খবর শুনে পাবনা থেকে ব্যবসা করতে এখানে এসে থাকছেন বিল্লাল হোসেন। এখন ভাঙারির ব্যবসা করছেন। প্রকল্পের পাশেই জমি কেনার চিন্তা তার।
বিল্লাল বলেন, ‘আমি এই এলাকার না, ব্যবসা করতে আসছি। এখানে তাঁত পল্লী হলে বিভিন্ন জায়গার লোকজন আসা-যাওয়া করবে। ব্যবসা-বাণিজ্যের মান বাড়বে। এলাকাটি গ্রাম থেকে শহরে পরিণত হবে। তাই আমি পাবনা থেকে এসেছি। অনেক দিন ধরেই ভাঙারির ব্যবসা করছি।
‘এখন তাঁত পল্লী ঘিরে নতুন ব্যবসার চিন্তা করছি। এখানে বিনিয়োগ হবে বুদ্ধিমানের। আমার মতো অনেকেই আসছেন, ঘুরে ঘুরে দেখছেন। এভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিনিয়োগকারীরা আসবেন। এলাকাটি হবে দর্শনীয় ও বাণিজ্যিক এলাকা।’
প্রকল্প সম্পর্কে জানতে চাইলে শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক মো. পারভেজ হাসান বলেন, ‘শেখ হাসিনা তাঁত পল্লী দেশের একটি ঐতিহ্যবাহী শিল্পকে টিকিয়ে রাখার প্রয়াস। ফলে উন্নত হবে দেশের তাঁতশিল্প। জীবনমানের উন্নয়ন ঘটবে তাঁতিদের। ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটবে তাঁতিদের। একই সঙ্গে এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন ঘটবে। স্থানীয় মানুষের জন্য সৃষ্টি হবে নতুন নতুন কর্মসংস্থান।’
পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে পদ্মার এই পারে শুধু এই তাঁত পল্লীই নয়, হবে আইটি পার্কও। ইতিমধ্যে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় আইটি পার্কটি গড়ে তোলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রকল্প বাস্তবায়নের অংশ হিসেবেই পদ্মাতীরবর্তী শিবচরে এই প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এর বাইরে আরও অনেক ছোট-বড় প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে শেখ হাসিনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, শেখ রাসেল শিশু পার্ক, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব নার্সিং ইনস্টিটিউট অ্যান্ড কলেজ, আইএইচটি ভবন, ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, শিল্পকলা একাডেমি ভবন, মুক্তমঞ্চ ও অলিম্পিক ভিলেজ। সিঙ্গাপুরের আদলে গড়ে তোলা হবে বিসিক ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক ও আইকন টাওয়ার।
আইটি পার্ক
ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের পাশে শিবচরের কুতুবপুরের কেশবপুরে শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অফ ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি অ্যান্ড হাইটেক পার্ক নির্মাণে ৭০ দশমিক ৩৪ একর জায়গা নির্ধারণ করেছে আইসিটি মন্ত্রণালয়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথরিটির অ্যাডমিন ও ফিন্যান্স বিভাগের পরিচালক এ এন এম শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এটার প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা হয়েছে। প্রস্তাবটা এখন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে আছে। আশা করছি, দু- এক মাসের মধ্যেই এটা একনেকে উঠবে। একনেকে প্রকল্পটা পাস হয়ে গেলেই আমরা কাজ শুরু করতে পারব।
‘ইতিমধ্যে ওই এলাকায় জায়গা নির্ধারণ হয়ে গেছে। প্রকল্প পাস হলেই ভূমি অধিগ্রহণ শুরু হবে। এই প্রকল্প বস্তবায়নের জন্য ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকার মতো খরচ হবে বলে আমরা অনুমান করেছি। একনেকে পাস হওয়ার পর খরচের মূল হিসাবটা পাওয়া যাবে।’
শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এই প্রকল্পটা বাস্তবায়ন হলে, ওই এলাকায় বিরাট পরিবর্তন আসবে। শুধু ওই এলাকায়ই না, পুরো দেশটাকে টার্গেট করে এই প্রকল্পটা বাস্তবায়ন করা হবে। মেধাবী সমাজ গঠনের যে কথা বলা হচ্ছে, এখানে সেই মেধাবী তৈরির কাজ হবে।
‘প্রযুক্তি নিয়ে রিসার্চ হবে। বিকেএসপি যেমন খেলোয়াড় তৈরি করে, তেমনি এখানে আগামী দিনের আইটি বিশেষজ্ঞ তৈরি হবে। এখানে হয়তো ১-২ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। কিন্তু সেটা গুরুত্বপূর্ণ না, গুরুত্বপূর্ণ হলো এখান থেকে অসংখ্য আইটি বিশেষজ্ঞ বের হবে, তারা সারা দেশে ভূমিকা রাখবে।’
মাদারীপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে জেলার বিভিন্ন এলাকায় আরও অনেক উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে।
সেগুলোর মধ্যে রয়েছে রেজাউল করিম তালুকদার টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ন্যাশনাল জুডিশিয়াল একাডেমি এবং সার্কেল এএসপি অফিস-কাম-বাসভবন, বেগম রোকেয়া কর্মজীবী মহিলা হোস্টেলসহ ট্রেনিং সেন্টার ও ডে-কেয়ার সেন্টার, শিবচর পৌর বাস টার্মিনাল, ট্রমা সেন্টার, শিবচর হাইওয়ে থানা, হাজি আবুল কাসেম উকিল ১০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, চৌধুরী ফাতেমা বেগম ১০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র এবং উপজেলা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণের সম্ভাব্য স্থানের তালিকায় এখনও শীর্ষস্থানে আছে শিবচরের নাম।
ইলিয়াস আহম্মেদ চৌধুরীর (দাদা ভাই) নামে শিবচর উপজেলায় ‘দাদা ভাই উপশহর’ হাউজিং প্রকল্পে ৮৭৮টি প্লট প্রস্তুতির কাজ ও বরাদ্দ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। ইতিমধ্যে কিছু বহুতল ভবন হয়েছে এবং সেগুলোতে মানুষ বসবাস করা শুরু করেছে। প্রায় ১০৫ একর জমিতে গড়ে ওঠা এই প্রকল্পে ১ লাখের বেশি মানুষের আবাসন হবে।
মাদারীপুর সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি খান মো. শহীদ বলেন, ‘পদ্মা সেতু মানুষের যোগাযোগব্যবস্থা সহজ করে দেবে। পদ্মায় ধরা মাছ যেমন সহজেই কারওয়ান বাজারে যাবে, তেমনি যেকোনো কৃষিপণ্য দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা যাবে। ফলে কৃষক, জেলেসহ সব পেশার মানুষ সরাসরি লাভবান হবেন।’
তিনি বলেন, ‘তাঁত পল্লী ও আইটি পার্কের মতো প্রকল্প এই জনপদের জন্য আশীর্বাদ। এসব প্রকল্পে যাতে অনিয়ম-দুর্নীতি না হয়, সেদিকে সরকারের কড়া নজরদারি থাকা উচিত। অন্যথায় এসব প্রকল্পের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন কঠিন হয়ে পড়বে।’
সাজছে মুন্সিগঞ্জ
এই জেলার ওপর দিয়েই নান্দনিক ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে গেছে। অল্প সময়েই এখানকার মানুষ রাজধানী ঢাকায় যেতে পারছেন। বাড়িতে থেকেও অনেকে রাজধানীতে গিয়ে অফিস ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান চালাচ্ছেন।
এই এক্সপ্রেসওয়ে আর পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে সাজছে মুন্সিগঞ্জ। বেড়েছে এখানকার জমির দাম। হচ্ছে নতুন নতুন আধুনিক আবাসিক এলাকা। গড়ে উঠছে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, কলকারখানাসহ নানা অবকাঠামো। এই এলাকার অনেক লোকেরই কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে পদ্মা সেতুতে।
দৃষ্টি কেড়েছে ভাঙ্গা মোড়
পদ্মা সেতুর মতোই আরেক বিস্ময় হয়ে দেখা দিয়েছে ফরিদপুরের ভাঙ্গা গোলচত্বর। এখানকার বর্তমান দৃশ্য দেখলে মনে হয়, এটি উন্নত কোনো দেশের সড়ক জংশন, যা আসলে ভাঙ্গা উপজেলার গোলচত্বর।
এই গোলচত্বরের সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিনই অনেক মানুষ ভিড় করছেন।