শিরোনাম
ফিলিস্তিনের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সবাই এক হয়ে কাজ করতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফিলিস্তিনিদের ভূমির অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার ওপরও তাগিদ দিয়েছেন সরকারপ্রধান।
বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) তেজগাঁওয়ের সড়ক ভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের আওতায় ১৫০টি সেতু, ১৪টি ওভারপাস, স্বয়ংক্রিয় মোটরযান ফিটনেস পরীক্ষাকেন্দ্র, ডিটিসিএ ভবন, বিআরটিসি’র ময়মনসিংহ বাস ডিপো ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ময়মনসিংহ জেলার কেওয়াটখালী ও রহমতপুর সেতুর নির্মাণ কাজ এবং সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত-আহত ব্যক্তি পরিবারের মধ্যে ক্ষতিপূরণ প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যুদ্ধের বিরুদ্ধে, আমরা শান্তি চাই। ইসরায়েল যেভাবে হামলা করে, বিশেষ করে হাসপাতালে হামলা করে নারী ও শিশুদের আক্রান্ত করছে, আমি প্রতিবাদ জানিয়েছি। ফিলিস্তিনি জনগণনকে যেভাবে হত্যা করছে তা সমর্থন করা যায় না। ফিলিস্তিনিদের নিজস্ব জায়গা তাদের ছেড়ে দিতে হবে। এটা তাদের অধিকার। ইসরায়েলের হামলায় নিহত ও আহতদের জন্য আমরা দোয়ার আয়োজন করছি। শুক্রবার সব ধর্মের মানুষের জন্য সব জায়গায় দোয়া হবে। আহতদের জন্য চিকিৎসা সামগ্রী, প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পণ্য সামগ্রী পাঠাবো।
তিনি মুসলিমদের নীরবতার সমালোচান করে বলেন, সবাই এক হয়ে ফিলিস্তিনের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে হবে। অনেকে চুপ করে আছে, প্রতিবাদের সৎ সাহস নেই। যারা এই আক্রমণ করছে, তারা যদি আবার নাখোশ হয়। আবার দেশে আন্দোলন করে সরকার পদত্যাগের!
শেখ হাসিনা বলেন, আমি বলে বলেছি, এই যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। যে টাকায় অস্ত্র বানানো আর ধ্বংসাত্মক কাজে লাগায়, সেটি শিশুদের গড়ে তোলার কাজে লাগানো যেতে পারে। বিশ্বের উন্নয়ন হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে বাংলাদেশ। কারও কাছে মাথা নিচু না করে, কারও কাছে হাত না পেতে আত্মমর্যাদাশীল জাতি হবো আমরা।
তিনি বলেন, ১৫ বছর আগের বাংলাদেশ কী ছিল, তা এখনকার তরুণরা জানে না। তাদের কাছে বাংলাদেশের উন্নয়ন তুলে ধরতে হবে।
সড়কে অস্বভাবিক প্রতিযোগিতা পরিহার করতে হবে
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সড়কে অস্বভাবিক প্রতিযোগিতা পরিহার করতে হবে। ড্রাইভারদের এটা বোঝাতে হবে। বাস, ট্রাকের ড্রাইভার ও যাত্রীদের বিশ্রামের সুযোগ করে দিচ্ছি। গাড়ি চালাতে যেমন পেট্রল লাগে, যাকে দিয়ে চালাবেন তারও তো পেট্রল দরকার। সেও তো একটা মানুষ, তার তো বিশ্রাম দরকার। বিশ্রামের সুযোগ দিতে হবে, তাদের যত্ন নিতে হবে। ড্রাইভারদের বলবো, দুর্ঘটনায় শুধু মানুষের জীবন যায় তা না, নিজেরও তো ক্ষতি হয়। গতি মেনে চলতে হবে। সড়কে ট্রাফিক আইন মেনে চলতে হবে।
সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আমরা তাদের সহায়তা করেছি। অগ্নিসন্ত্রাসেও অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আমরা তাদেরও সহযোগিতা করেছি। বাংলাদেশের মানুষের জীবনে যেন এ ধরনের অগ্নিসন্ত্রাসের পরিস্থিতি না আসে। আমি বলেছি, কেউ আগুন দিতে এলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেবে।
আন্দোলনে আপত্তি নেই, ক্ষতি করলে ব্যবস্থা
শেখ হাসিনা বলেন, আন্দোলন করুক আপত্তি নেই। আমরাও সারাজীবন আন্দোলন করেই আজ ক্ষমতায় আসছি। তারা ক্ষমতায় আসতে চায়, আন্দোলন করুক। আন্দোলন করেই একসময় ক্ষমতায় আসবে। কিন্তু মানুষের ক্ষতি যেন করতে না পোরে। এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি একটা সন্ত্রাসীদল। তারা প্রতিদিন আমাদের পদত্যাগ চায়। সে দাবিতে প্রতিদিন আন্দোলন করছে, করুক। আমার আছে জনগণ। আমার তো আর কেউ নেই। বাবা-মা ভাইবোন সবই তো হারিয়েছি।
স্বাধীনতাপরবর্তী ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, স্বাধীন দেশ। স্বাধীন সার্বভোমত্ব নিয়ে এগিয়ে যাক এটা তাদের পছন্দ না। তাই নানা বিরোধিতা করেছে। এজন্য স্বাধীনতাবিরোধীরা ক্ষমতায় আসে। স্বাধীনতাবিরোধীরা দেশকে কী দেবে? ২৯ বছরে তারা ক্ষমতায় থেকে দেশকে কী দিয়েছে? বিএনপির আমল থেকে যে অত্যাচার নির্যাতন শুরু হয়েছে মানুষের ওপর, সেটার ধারাবাহিকতা চলে। পরে ২০০৮ এ নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়। আমরা ক্ষমতায় এসে নানান উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ এখানে সড়ক ভবন করেছি। এখানে চমৎকার একটা ভবন হয়েছে। বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার একটা হাব হয়ে গেলো। যদিও তাদের আগের জায়গা থেকে একরকম জোর করে তুলে দেওয়া হয়েছে। এটা দুঃখজনক। একদিক থেকে ভালোই হয়েছে, এখানে একটা চমৎকার একটা ভবন হয়েছে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি রওশন আরা মান্নান, সড়ক ও মাহসড় বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী ও সওজের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান।