শিরোনাম
‘একমাস আগেও ১২ কেজির ফ্রেশ কোম্পানির এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার ৯০০ টাকায় কিনেছি। বর্তমানে একই ওজনের সিলিন্ডার কিনতে হচ্ছে ১২২০ টাকা। একমাসে বেড়েছে ৩২০ টাকা। বাজারে সয়াবিন তেল, পেঁয়াজসহ সব ধরনের জিনিসের দাম বেড়েছে। গ্যাস সিলিন্ডারের দামও দফায় দফায় বেড়েছে। গ্যাসের দাম বাড়ার আগে চটপটি ও ফুচকা বেচে খরচ বাদে ৮০০-৯০০ টাকা আয় হতো। এখন একই পরিমাণে বিক্রি করে খরচ বাদে ৫০০-৬০০ টাকা আয় হচ্ছে না। দ্রব্যমূল্যসহ গ্যাস সিলিন্ডারের দাম এভাবে বাড়তে থাকলে আমরা খেটেখাওয়া মানুষ কীভাবে চলবো?’
বুধবার (১৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় এভাবেই কথাগুলো বলেছেন ভ্রাম্যমাণ চটপটি বিক্রেতা শফিকুল ইসলাম। ময়মনসিংহ মহানগরীর জুবলিঘাট এলাকার সূর্য্য এন্টারপ্রাইজে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার কিনতে এসেছেন। জয়নুল পার্কে চটপটি বিক্রি করে সংসার চালান।
তিনি বলেন, একমাস ধরে দফায় দফায় এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারের দাম বেড়েছে। চটপটি দোকানের জন্য মাসে তিন বার গ্যাস সিলিন্ডার রিফিল করতে হয়। চটপটি ও ফুচকা বিক্রি করে লাভের পরিমাণ কমে যাওয়ায় বর্তমানে সংসার চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে।
এমন অভিযোগ শুধু চটপটি বিক্রেতা শফিকুলের নয়, ময়মনসিংহের অধিকাংশ মানুষের একই অভিযোগ। মহানগরীর সানকিপাড়া শেষ মোড়ের বাসিন্দা আবু সালেহ মুসা বলেন, একমাস আগেও এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার ৯৫০ টাকায় কিনেছি। দাম বেড়ে বর্তমানে একই সিলিন্ডার রিফিল করতে হয় সাড়ে ১২০০ টাকায়। একমাসের মধ্যে ৩০০ টাকা দাম বেড়ে যাওয়ায় সংসার খরচ বেড়ে গেছে। আয় না বাড়লেও অসহনীয় দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে সিলিন্ডারের রিফিলের দাম বেড়ে যাওয়ায় সংসার খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছি।
মহানগরীর জুবলিঘাট এলাকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একমাস আগেও খুচরা বাজারে বসুন্ধরা, ফ্রেশ, নাভানা, সেনা, যমুনা, পেট্রোমেক্স, ওমেরা, বিএম কোম্পানির ১২ কেজির এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হয়েছে ৯০০-৯৫০ টাকা। সেখানে দফায় দফায় দাম বেড়ে বর্তমানে ১২০০-১২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হিসাবে একমাসে দাম বেড়েছে ৩০০ টাকা।
জুবলিঘাট সূর্য্য এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী লিটন বসাক বলেন, একমাসে দফায় দফায় এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারের দাম বেড়েছে। দাম বাড়ানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ডিলারের কাছে সিলিন্ডার রিফিল করতে গেলে কোম্পানি দাম বাড়িয়েছে বলে জানান। দাম বেড়ে যাওয়ায় বেচাকেনা কমে গেছে। দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রতিদিন ক্রেতাদের সঙ্গে বাড়তি দাম নিয়ে ঝগড়া করতে হচ্ছে।
দাম বাড়ানোর কথা স্বীকার করে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার ডিলার হাসান এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আবুল হাসান বাবুল বলেন, ১৫ দিন আগে ১২ কেজির এলপিজি সিলিন্ডার পাইকারিতে ১০৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দাম বাড়ায় বর্তমানে ১২০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। বেচাকেনায় এর প্রভাব পড়েছে। দাম বাড়ানোর কারণ জানতে চাইলে সদুত্তর দেননি তিনি।
ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়র সহ-সভাপতি শংকর সাহা বলেন, নিত্যপণ্যের সঙ্গে সঙ্গে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারের দাম অসহনীয়ভাবে বেড়েছে। দাম বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ভোক্তারা কথা কাটাকাটি ও ঝগড়া বিবাদে জড়িয়ে পড়ার ঘটনাও ঘটছে। নিয়ন্ত্রণহীন দাম বাড়ানোর বিষয়ে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন