শিরোনাম
ডিজিটাল বাংলাদেশের সাফল্যের ওপর ভিত্তি করে স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট সরকার ও স্মার্ট সোসাইটি গড়ে তোলার জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) ক্যাশলেস সোসাইটি তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের শেষ দিনের তৃতীয় অধিবেশনে এ নির্দেশ দেওয়া হয়। অধিবেশন শেষে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ২০৪১ সালের ভিশনে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে চারটি স্তম্ভ (স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট সরকার ও স্মার্ট সোসাইটি) গড়ে তোলার জন্য আমরা জেলা প্রশাসকদের মৌলিক কিছু নির্দেশনা দিয়েছি। যেমন পেপারলেস অফিস ওয়ার্ককে উৎসাহিত করা, ক্যাশলেস সোসাইটি করা। এর জন্য এ বছর থেকে আমরা আইসিটি ডিভিশন থেকে স্মার্ট জেলা ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ঘোষণা করেছি।
তিনি বলেন, ডিসিদের পক্ষ থেকে খুব গুরুত্বপূর্ণ দুটি প্রশ্ন এসেছে এবং প্রস্তাবও আমি বলবো। একটা হলো, এ সময়ে আমাদের সামাজিক গণমাধ্যম ব্যবহারকারী আছে প্রায় ৫-৬ কোটি, ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ১৩ কোটি, তাদের সাইবার জগৎটা নিরাপদ রাখার জন্য ডিজিটাল লিটারেসি। এজন্য ছাত্র, শিক্ষক, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, পুলিশ সবাইকে নিয়ে প্রতি মাসে আইসিটির যে কমিটি আছে তাদের নিয়ে জেলা ও উপজেলায় বৈঠক করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আরেকটি প্রস্তাব এসেছিল- কুমিল্লার জেলা প্রশাসক বলেছিলেন চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে আমাদের শিক্ষার্থীদের তৈরি করার জন্য রোবটিকস ক্লাব করা। আমরা প্রাথমিকভাবে ৩০০টি সংসদীয় আসনভিত্তিক ৩০০টি স্কুলে রোবটিকস ফেব্রিকেশন ল্যাব ও ক্লাব গঠন করছি। পর্যায়ক্রমে আমাদের দেশে যে ১৩ হাজার শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব আছে, সেখানেও আমরা রোবটিকস ক্লাব তৈরি করবো।
আরেক জেলা প্রশাসক আমাদের ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এবং রাষ্ট্রের তথ্যউপাত্তের নিরাপত্তার জন্য কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে সে বিষয় উল্লেখ করে পলক বলেন, সেক্ষেত্রে আমি বলতে পারি আমাদের আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় কিছুদিন আগেই আমাদের একটা নির্দেশনা দিয়েছেন। সবাই বলছেন-ডেটা হবে একটি দেশের নেক্সট কারেন্সি। প্রতিনিয়ত ১৩ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর মাধ্যমে ডেটা জেনারেট হচ্ছে। এটা অনেক সময় তৃতীয় পক্ষের কাছে চলে যাচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আপনারা জানেন আমাদের সরকারের বেশিকিছু মন্ত্রণালয়ের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ডেটাবেজ আছে। প্রাইভেট কোম্পানি দেশি-বিদেশি কোম্পানি অনেক সময় সেই ডেটাগুলো কৌশলে হাতিয়ে নিয়ে যায়। আবার অনেক সময় সাইবার ক্রিমিনালরাও আক্রমণ চালিয়ে ডেটাগুলো চুরি করার চেষ্টা করে। এ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টির নিশ্চয়তা নিয়েই আমরা ভাবছি এবং আমরা খুশি যে আমাদের জেলা প্রশাসকরাও সেটা নিয়ে চিন্তা করেছেন। অনতিবিলম্বে আমরা ডেটা প্রটেকশন অ্যাক্ট প্রণয়ের সব ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমাদের উপাত্ত সুরক্ষা আইন অত্যন্ত আধুনিক হবে, ভবিষ্যৎমুখী হবে এবং উদার হবে। কারণ অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের যে জেনারেল ডেটা প্রোটেকশন রুলস, এগুলোর সবগুলোকে আমরা অনুশীলন করে এবং দেশে-বিদেশে আমাদের স্টেকহোল্ডারদের কাছ থেকে যে সুপারিশগুলো পেয়েছি তা তার ভিত্তি একটা আইনের খসড়ার চূড়ান্ত পর্যায়ে আছি। আমরা আশা করছি আমাদের এ ডেটা প্রোটেকশন আইনটি বর্তমান বিশ্বে অন্যতম একটি ভবিষ্যৎমুখী ও উদার আইন হিসেবে প্রণয়ন করতে পারবো।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা দেখছি অনেক ক্ষেত্রে বেসরকারি কোম্পানি সরকারের কাজ করে তারা সেই তথ্যউপাত্ত, সেই সংস্থার ও ব্যক্তির অনুমতি ব্যতীত তারা দেশের বাইরে নিয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যউপাত্ত যে আমাদের সংরক্ষণ করা প্রয়োজন, সেটার প্রয়োজনীতা অনেক বেশি বেড়েছে।