শিরোনাম
নওগাঁয় পেঁয়াজের দাম বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে জেলায় প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১০-১২ টাকা। হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় দিশেহারা ক্রেতারা। পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধিকে ক্রেতারা ব্যবসায়ীদের কারসাজি বললেও ব্যবসায়ীরা বলছেন, বেশি দামে কিনতে হচ্ছে পেঁয়াজ, তাই বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশি দামে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর জেলায় ৫০ হাজার ২৮৯ মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। গত বছর উৎপাদন হয়েছিল ৪৭ হাজার ৬৯০ মেট্রিক টন। জেলায় পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে ৩০ হাজার ৫৭৫ মেট্রিক টন।
শহরের পাইকারি বাজারে ঘুরে দেখা যায়, দেশী পেঁয়াজ ৫৫-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর ভারতীয় পেঁয়াজ বা এলসি বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৪৮-৫০ টাকায়। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিকেজি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১০-১২ টাকা করে।
পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা ক্রেতা রাব্বি হোসেন বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগেও যে পেঁয়াজ ৪৪ টাকা কেজি ছিল এখন সেই পেঁয়াজ কিনতে হয়েছে ৫৬ টাকায়। ১০ কেজি কিনার ইচ্ছা থাকলেও পাঁচ কেজি কিনেছি। আগামীতে হয়তো আরও দাম বাড়তে পারে।’
কাঁচাবাজারের খুচরা ব্যবসায়ী আক্কাস আলী জানান, প্রতিকেজি পেঁয়াজ কিনতে খরচ পড়েছে ৫৬ টাকা। বিক্রি করা হচ্ছে ৫৮-৬০ টাকায়।
পাইকারি ব্যবসায়ী মঞ্জুর রহমান বলেন, পেঁয়াজের বড় বাজার রাজশাহী নলডাঙ্গা ও পাবনার তাহেরপুর। প্রতি হাটে পেঁয়াজের দাম ওঠানামা করে। সেখান থেকে কিনে নওগাঁয় বিক্রি করা হয়। বেশি দামে কেনার কারণে বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশি দামে। আর পেঁয়াজ যে দামের সঙ্গে পরিবহন ও শ্রমিক খরচও যোগ করা হয়। এরপর প্রতি কেজিতে আড়াই টাকা লাভ ধরে পাইকারি বিক্রি করা হয়।
তিনি আরও জানান, বর্তমানে বাজারে দেশি পেঁয়াজ ৫৫-৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত এক সপ্তাহ আগে ছিল ৪৩-৪৪ টাকা। এছাড়া ভারতীয় পেঁয়াজ বা এলসি বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৪৬-৪৮ টাকায়। গত এক সপ্তাহ আগে এই পেঁয়াজের দাম ছিল ৩২-৩৩ টাকা। এলসি আসার কারণে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কম আছে। এলসি বন্ধ হলেই দেশি পেঁয়াজ দ্বিগুন দামে বিক্রি শুরু হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
পাইকারি ব্যবসায়ী বিপদ সরকার বলেন, সোমবার (৪ অক্টোবর) এক কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৫২-৫৪ টাকায়। মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) বিক্রি হয় ৫৮-৬০ টাকা কেজি দরে। এলসি পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশি পেঁয়াজের দামও বেড়েছে। তবে এলসি পেঁয়াজের দাম যে হারে বেড়েছে সে তুলনায় দেশি পেঁয়াজের দাম বাড়েনি বলেও জানান তিনি।
জাহাঙ্গীর আলম নামে পাইকারি ব্যবসায়ী জানান, সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজে ১০-১২ টাকা করে বেড়েছে। প্রতিদিন প্রায় ৩০ মণ পেঁয়াজ বিক্রি করেন তিনি।
নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সামশুল ওয়াদুদ জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর জেলায় পেঁয়াজের উৎপাদন বেড়েছে। ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণে বাজারে পেঁয়াজের দাম বেশি। তবে নতুন পেঁয়াজ আসলেই দাম কমে যাবে বলেও জানান তিনি। সূত্র: জাগো নিউজ