শিরোনাম
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশে গত ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯৬ লাখ ৫৪ হাজার ১১৯ ডোজ করোনাভাইরাসের টিকার মজুদ ছিল। বুধবার জাতীয় সংসদে পিরোজপুর-৩ আসনের জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ডা. রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য তুলে ধরেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে ১৮ বছরের বেশি সব বাংলাদেশি নাগরিককে করোনার টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। সেজন্য বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা থেকে টিকা সংগ্রহের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
তিনি জানান, ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দুই কোটি নয় লাখ ২২ হাজার ৭১৫ জনকে প্রথম ডোজ এবং তাদের মধ্যে এক কোটি ৩৮ লাখ ৫৫ হাজার ৪৬ জনকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে দেওয়া হয়েছে মোট তিন কোটি ৪৭ লাখ ৭৭ হাজার ৭৬১ ডোজ টিকা।
বর্তমানে সাধারণভাবে ২৫ বছর ও তার বেশি বয়সিদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া শিক্ষার্থীরা ১৮ বছর বয়স হলেই টিকার জন্য নিবন্ধন করতে পারছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে মোট জনসংখ্যার ৫০ শতাংশকে টিকার আওতায় আনার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুসরণ করে ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার।
১২ বছর ও তার বেশি বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় আনা, প্রতিবন্ধীদের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সুবর্ণ কার্ডের মাধ্যমে নিবন্ধন করে টিকা দেওয়া এবং শ্রমিকদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেওয়া নিয়ে সরকারের পরিকল্পনার কথাও তিনি জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, টিকা সংগ্রহের জন্য সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সরকারের গৃহীত এ সব কার্যক্রমের ফলে এ পর্যন্ত ২৪ কোটি ৬৫ লাখ ১৩ হাজার ৬৬০ ডোজ টিকা সংগ্রহের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দ্বিপাক্ষিক ক্রয় চুক্তি এবং উপহার হিসাবে মোট ৪ কোটি ৪৪ লাখ ৩১ হাজার ৮৮০ ডোজ টিকা পাওয়া গেছে। করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে টিকা সংগ্রহ ও বিনামূল্যে টিকাদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাশিয়া থেকে ১ কোটি ডোজ স্পুৎনিক-ভি টিকা কেনার চুক্তি ‘চূড়ান্ত পর্যায়ে’ রয়েছে। তাছাড়া কোভ্যাক্সের মাধ্যমে তিন কোটি ডোজ সিনোফার্ম ও সাড়ে সাত কোটি ডোজ সিনোভ্যাক টিকা আনার বিষয়টিও প্রায় চূড়ান্ত।
হারুন সাহেব ৩৮ লাখ টাকায় পর্দা কেনার তথ্য কোথায় পেলেন, সংসদে স্বাস্থ্যমন্ত্রী
‘৩৮ লাখ টাকায় হাসপাতালের পর্দা কেনা হয়েছে’-বিএনপির সংসদ সদস্য হারুন অর রশিদের এমন বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
বুধবার জাতীয় সংসদে হারুনের বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপির হারুন সাহেব বলেছেন ৩৮ লাখ টাকা দিয়ে পর্দা কেনা হয়েছে। কিন্তু এটা কোথায় হয়েছে আমার জানা নেই। এটা কেনা হয়নি। ভুল তথ্য দিলে জনগণ ভুল বুঝে, এটা সঠিক না।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০ হাজার ইউনিট রয়েছে। এর মধ্যে যন্ত্রপাতি রয়েছে। এটা ব্যবহার হলে একটা সময় পরে তা নষ্ট হয়ে যায়। একটা সময় এটা ঠিক করতে হয়। যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণ একটি চলমান প্রক্রিয়া। তা আমরা করে যাচ্ছি।
বিএনপির সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আপনারা টিকার কথা বলেছেন তিন হাজার টাকা। আপনাকে তো আগে জানতে হবে, তারপর বলতে হবে। অর্ধেক নয়, আপনাকে পুরো বিষয় নিয়েই বলতে হবে। যখন টিকা দেওয়া হয়, তা অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে দেওয়া হয়। এটার সঙ্গে জনবল, সংরক্ষণাগার জড়িত রয়েছে। এখানে শুধু টিকার দাম তিন হাজার টাকা না।
এর আগে সংসদে দাঁড়িয়ে বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হারুন অর রশিদ বলেন, বিএনপির সময় কি কোনো হাসপাতালে ৩৮ লাখ টাকা দিয়ে পর্দা কেনা হয়েছিল? গত দশ বছরে যে হাজার হাজার কোটি টাকার যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কোনো ব্যবস্থা আছে?
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে ১৩ বছর আপনারা ক্ষমতায় আছেন। দেশের গণতন্ত্রের সূচক কোথায় আছে? প্রতিদিন গণমাধ্যমে এমন কোনো বিভাগ নেই যেখানে দুর্নীতির খবর প্রকাশ হচ্ছে না। এগুলো পড়েন। গত ১২ বছরে ১০ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। আধুনিক প্রযুক্তি এগিয়ে যাচ্ছে। আজকে এই বিষয়গুলো অহেতুক দোষারোপ না করে আমরা দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। গণতন্ত্রের যে সঙ্কট চলছে, গণতন্ত্রের যে সঙ্কট দাঁড়িয়ে গেছে; এই সঙ্কট থেকে আমরা কীভাবে বেরিয়ে আসবো, মানুষের ভোটাধিকার আমরা কীভাবে নিশ্চিত করবো- আসুন এসব নিয়ে আমরা আলোচনা করি।