শিরোনাম
নিখোঁজের আট মাস পর কলকাতায় সন্ধান পাওয়া গেল সিলেটের যুবক জগলু মিয়ার। গত বছরের ৬ নভেম্বর নিখোঁজ হন তিনি। এরপর পরিবারের সদস্যরা অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর সন্ধান পাননি। গত মার্চে কলকাতার ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাব মানসিক ভারসাম্যহীন জগলু মিয়ার চিকিৎসা করায়। কিছুটা সুস্থ হলে যোগাযোগ করা হয় তাঁর পরিবারের সঙ্গে। এখন তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাহায্য চেয়েছে তাঁর পরিবার।
জগলু মিয়াকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে কলকাতার ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাব বা হ্যাম রেডিও। উদ্ধারকাজে সহায়তা করেছে বাংলাদেশের অ্যামেচার রেডিও সোসাইটি।
হ্যাম রেডিওর সম্পাদক অম্বরীশ নাগ বিশ্বাস বলেন, গত ১৫ মার্চ কলকাতার সিআইটি মোড়ে জগলু মিয়াকে পাওয়া যায়। মানসিকভাবে অসুস্থ হওয়ায় তাঁকে বেলেঘাটার সেন্টার ফর আরবান হোমলেসে নিয়ে যাওয়া হয়। বেলেঘাটা থানা–পুলিশকেও জানানো হয় বিষয়টি। পরে জগলুর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয় কলকাতার নামী মানসিক হাসপাতাল পাভলভে। সেখানে দীর্ঘদিন চিকিৎসা চলে তাঁর। এরপর কলকাতার ওয়েস্টবেঙ্গল রেডিও ক্লাব বা হ্যাম রেডিওকে বিষয়টি জানানো হয়।
অম্বরীশ নাগ বিশ্বাস আরও বলেন, জগলু মিয়ার কথায় সিলেটের আঞ্চলিকতার টান থাকায় বাংলাদেশের অ্যামেচার রেডিও সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক অনুপ ভৌমিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এরপরই তদন্ত করে জানা যায়, ওই যুবকের বাড়ি সিলেটের সুলতানপুরে। মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় বেখেয়ালে ভারতে ঢুকে পড়েছিলেন তিনি।
গত মঙ্গলবার জগলু মিয়ার গ্রামের বাড়ির খোঁজ পায় বাংলাদেশের অ্যামেচার রেডিও সোসাইটি। পরে বাংলাদেশ থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কলকাতায় কথা বলার ব্যবস্থা করে দেয় তারা। জগলু মিয়ার মা ও দুই ভাই তাঁর সঙ্গে কথা বলেন।
এ বিষয়ে সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) মো. লুৎফর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন, গতকাল বুধবার জগলু মিয়ার ভাই বাবলু মিয়া বালাগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। এতে বলা হয়েছে, ৬ নভেম্বর জগলু মিয়া বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। এরপর থেকে তাঁর কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না।
জগলু মিয়ার বাবার নাম চান্দ মিয়া। তিনি গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর মারা যান। মা মনোয়ারা বেগম এখনো জীবিত আছেন। কিন্তু মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলেকে খুঁজে পেতে পথ চেয়ে আছেন তিনি। জগলু মিয়ার বড় ভাই ফুজেল আহমেদের সঙ্গে আজ বিকেলে কথা হয়। তিনি বলেন, এর আগে ২০২০ সালের নভেম্বর মাসেও তাঁর ভাই নিখোঁজ হয়েছিলেন। অনেক খোঁজাখুজির পর মৌলভীবাজারের শমসেরনগর উপজেলা থেকে তাঁকে উদ্ধার করা হয়।
ফুজেল আহমেদ বলেন, ভাইকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সিলেটে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কলকাতায় বাংলাদেশ উপহাইকমিশনে যোগাযোগ করতে বলেছে। ছোট ভাইকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।