শিরোনাম
ইলিশের প্রজনন নিরাপদ করতে রোববার মধ্যরাত থেকে ২২ দিন সারা দেশের ৩৮ জেলার ১৭৪টি উপজেলায় নদ-নদী ও সাগরে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। এসময়ে ইলিশ আহরণ, মজুত, সরবরাহ, বিক্রি ও বিনিময় আইনত দণ্ডনীয়। সূত্র: জাগো নিউজ
আগামী ২২ দিন বাজারে ইলিশ পাওয়া যাবে না বলে রোববার শেষ দিনে ইলিশ কিনতে বাজারে হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন ক্রেতারা। এদিন মাছের আড়তে ভিড় করেন হাজারো মানুষ। তবে বাজারে বড় সাইজের ইলিশের সরবরাহ কিছুটা কম ছিল। ইলিশ ধরা ও বিক্রি বন্ধের শেষ দিনে কারওয়ান বাজার পাইকারি মাছের আড়তে উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
আড়তদাররা জানান, রোববার সারাদিনই ক্রেতারা বাজারে এসেছেন। ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড়ে সরগরম ছিল মাছের বাজার। সন্ধ্যার পর থেকে ভিড় আরও বাড়তে থাকে বলে জানান তারা।
বাজারে আসা বেশিরভাগ ক্রেতাদের নজর ছিল ইলিশের দিকে। এর আগে মাসজুড়ে বাজারে ইলিশ মাছের পরিমাণ কম থাকলেও বিক্রি হচ্ছিল একটু কম দামে।
জানা গেছে, চলতি বছর ইলিশের মৌসুমে বড় সাইজের মাছ কম ছিল। মাঝারি ও জাটকা যা পাওয়া যাচ্ছে তার দামও ছিল লাগামছাড়া। গত কয়েক বছর ইলিশের প্রাচুর্যের পর এবারের বিপরীতমুখী পরিস্থিতিতে হতাশ ক্রেতা-বিক্রেতা সবাই।
রাজধানীর পাইকারি ও খুচরা বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে ইলিশের সরবরাহ কমে যাওয়ার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণও জানা যায়। তারা বলছেন, গত ২৩ জুলাই সমুদ্রে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হয়। কিন্তু সে সময় আবহাওয়া চরম দুর্যোগপূর্ণ ছিল। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার পর মূলত ১ আগস্ট থেকে বাজারে ইলিশ আসা শুরু করে।
গত কয়েক বছর প্রচুর পরিমাণে বড় সাইজের ইলিশের দেখা মিললেও এবার তা একেবারে কমে যায়। তবুও মাছের রাজা ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা শুরুর দিনে কারওয়ান বাজারের মাছের আড়তে ছিল উপচেপড়া ভিড়। রাত ১টা পর্যন্ত চলে মাছের বেচাকেনা।
বাজারে রুই, কাতলা ও চিংড়িসহ অন্যান্য মাছ থাকলেও ইলিশের দিকেই মানুষের আগ্রহ ছিল বেশি। রাত পৌনে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সরেজমিনে বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক কেজি ওজনের মাছ বিক্রি হচ্ছে ৯৫০ থেকে ১০০০ টাকা, আকারভেদে সেটা কখনো কখনো ১১শ থেকে ১২শ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে। ছয়শ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকা।
সাতশ থেকে আটশ গ্রামের মাছের সরবরাহ ছিল খুবই কম। দু-একটি দোকানে এই সাইজের মাছ পাওয়া গেলে সেখানে ক্রেতাদের হুমড়ি খেয়ে পড়তে দেখা যায়। এই সাইজের মাছ ৭৫০ হতে ৮০০ এমনকি কোনো কোনো দোকানে ৯০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
বিসমিল্লাহ আড়তের ম্যানেজার জানান, শেষদিনে ইলিশ মাছের বিক্রি হয়েছে প্রচুর। প্রতিদিন স্বাভাবিকভাবে যদি চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা বিক্রি হয়, তাহলে আজ সাড়ে আট থেকে নয় লাখ টাকা বিক্রি হয়েছে। এসব মাছ আকার, আকৃতি ও চেহারাভেদে এক হাজার ৫০ থেকে ১২শ, এমনকি ১৩শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। তবে সর্বনিম্ন ৩০০ টাকায়ও বিক্রি হয়েছে ছোট সাইজের ইলিশ।
তিনি বলেন, যেহেতু আজ রাত ১২টা পর্যন্ত মাছ ধরার শেষ সময়, সারাদিন বিক্রির পাশাপাশি সন্ধ্যার দিকেও বরিশাল থেকে মাছ আসছে। তাই বিক্রিও বেশি হয়েছে আজ।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক আড়তদার জানান, চলতি বছর ইলিশের মৌসুম শুরু হওয়ার পরে প্রথমে কয়েকদিন মাছ বেশি পাওয়া যায়। তবে, শেষের দিকে বড় মাছ পেলেও পরিমাণ ছিল অনেক কম। তাই শেষদিনে মাছ ধরা পড়েছে বেশি, আমদানিও ছিল ভালো।
তিনি জানান, আজ রাজধানীজুড়েই মাছের আমদানি ভালো ও কাস্টমার বেশি আসায় বিক্রি বেড়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে কারওয়ান বাজারে মানুষের চাপ বাড়তে থাকে। সারাদিনে বাজারে কমপক্ষে চার থেকে সাড়ে চার টন মাছ বিক্রি হয়েছে বলে জানান তিনি।