রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যা, সামরিকজান্তার গুপ্তচরের হাত থাকতে পারে

ফানাম নিউজ
  ০১ অক্টোবর ২০২১, ১১:২৪
আপডেট  : ০১ অক্টোবর ২০২১, ১৪:৫০

উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পে শীর্ষ রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের পেছনে মিয়ানমারের সামরিকজান্তার হাত থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। তারা বলেছেন, রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে সামরিকজান্তার গুপ্তচর ছড়িয়ে থাকতে পারে। রোহিঙ্গাদের অধিকার আদায় নিয়ে কাজ করায় মুহিবুল্লাহকে সরিয়ে দেওয়ার পথ বেছে নেওয়া হতে পারে।  সূত্র: যুগান্তর
 
যতদূর জানা যায়, মিয়ানমার সরকারের জন্য এই নেতা ক্রমেই বিপজ্জনক হয়ে উঠছিলেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ বিষয়ে নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশিদ বলেন, মুহিবুল্লাহর হত্যাকাণ্ডটি পরিকল্পিত।
 
তাকে টার্গেট করার পেছনে আমরা কয়েকটা কারণ দেখতে পাচ্ছি। তিনি রোহিঙ্গাদের কাছে খুবই বিশ্বাসী এবং গ্রহণযোগ্য। একই সঙ্গে তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে-জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে বক্তব্য রাখার জন্য আমন্ত্রিত হয়েছিলেন। সে সময় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে রোহিঙ্গাদের পক্ষে কথা বলেছেন। একই সঙ্গে তিনি রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনে সোচ্চার ছিলেন। অধিকার আদায়ের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের ওপর যে বর্বর নির্যাতন চালিয়েছে মিয়ানমার সামরিকজান্তা-সেগুলোর তথ্য-উপাত্তসহ একটি ডকুমেন্টারি তৈরি করছিলেন। তিনি রোহিঙ্গাদের ঘরে ঘরে গিয়ে বর্বর নির্যাতনের বক্তব্যসহ ডকুমেন্টারি বানাচ্ছিলেন।

আব্দুর রশিদ বলেন, মুহিবুল্লাহ আরেকটি কাজ করছিলেন-যেটি মিয়ানমার সামরিকজান্তার জন্য খুবই অপ্রিয়, বিপজ্জনক। তিনি নিজেও একটি মানবাধিকার সংগঠন পরিচালনা করতেন। সামরিকজান্তা যে জেনোসাইড সংগঠিত করেছিল-তা তার ডকুমেন্টারিতে উঠে আসছিল। যা আন্তর্জাতিকভাবে তার করা ডকুমেন্টারি মিয়ানমার সামরিকজান্তার বিরুদ্ধে যেতে। আমরা মনে করছি-মিয়ানমার সামরিকজান্তার গুপ্তচর থাকতে পারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। যারা প্রতিনিয়ত সামরিকজান্তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। এ হত্যাকাণ্ড রোহিঙ্গাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় ধরে নিলে চলবে না-এ হত্যাকাণ্ড আন্তর্জাতিকভাবে একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক নিলুফার ইয়াসমিন বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য মুহিবুল্লাহ সাংগঠনিকভাবে কাজ করছিলেন।

তাছাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নারী পাচার থেকে শুরু করে মাদক-অস্ত্র কেনাবেচার অভিযোগও রয়েছে। এ হত্যাকাণ্ড কি কারণে ঘটেছে-তা সামগ্রিকভাবে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে এগোতে হবে।

তাছাড়া রোহিঙ্গাদের মাঝে রাজনৈতিক মতপার্থক্যও রয়েছে। সবকটি ইস্যু সামনে আসা জরুরি। এ হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পে যাতে কোনো অস্থিরতা সৃষ্টি না হয়-সে দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে সংশ্লিষ্টদের।

রোহিঙ্গা ইস্যুটি বারবার আন্তর্জাতিক ফোরামে তুলে ধরতে হবে-এ হত্যাকাণ্ড যাতে প্রভাব না ফেলতে পারে। সংকট সমাধান না হওয়া পর্যন্ত চেষ্টা চালাতে হবে।