শিরোনাম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মাস্টার্সের এক ছাত্রের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছেন তার সহপাঠী এক ছাত্রী। বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ভুক্তভোগী ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর দপ্তরসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেন। এতে তিনি ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার দাবি করেন। সূত্র: জাগো নিউজ
লিখিত অভিযোগে ওই ছাত্রী উল্লেখ করেছেন, গত ২৭ সেপ্টেম্বর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অভিযুক্ত ছাত্র তাকে ফোন করে বিভাগের সেমিনারে পড়াশোনা সংক্রান্ত আলোচনার জন্য দেখা করতে বলেন। বিকেল ৩টার দিকে তিনি সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের অষ্টম তলায় অবস্থিত বিভাগের সেমিনারে যান। সেখানে সহপাঠী ছাত্রের সঙ্গে ওই ছাত্রীর দেখা হয়। সেসময় সেমিনারে কেউ ছিলেন না। দেখা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই ছাত্র অতর্কিতভাবে সহপাঠী ছাত্রীকে জড়িয়ে ধরেন এবং কয়েক দফায় যৌন নির্যাতন করেন।
অভিযোগে ভুক্তভোগী ছাত্রী লিখেছেন, ‘ঘটনার আকস্মিকতায় আমি অপ্রস্তুত হয়ে পড়ি এবং রেগে যাই। সে (অভিযুক্ত) ব্যাপারটা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে এবং পড়াশোনা সংক্রান্ত আলোচনা শুরু করে। নিজেকে সামলে নিয়ে কিছুক্ষণ পর যখন আমি সেমিনার থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করি, তখন সে পথ আগলে আমাকে আটকানোর চেষ্টা করে।’
‘কি করবো বুঝতে না পেরে আমি তাকে ধাক্কা দিয়ে দৌড়ে সেমিনার থেকে বেরিয়ে যাই। ভবনের সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামার চেষ্টা করলে, পেছন থেকে সে এসে আবারও আমার পথরোধ করে এবং সপ্তম তলার সিঁড়িতে আবারও যৌন নির্যাতন করে’ বলে উল্লেখ করেন ওই ছাত্রী।
অভিযোগে ছাত্রী আরও জানান, কোনোভাবে তিনি সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবন থেকে বেরিয়ে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে ঢুকে পড়েন। কিন্তু তার সহপাঠী ছাত্র তার পিছু নেন। লাইব্রেরিতে উপস্থিত সিনিয়র আপুদের বিষয়টি জানান ভুক্তভোগী ছাত্রী। তারা তাকে বাসায় পৌঁছে দেন। ঘটনার পর থেকে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এ ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) অভিযুক্ত ছাত্র ফোনে তাকে হয়রানি করতে থাকেন।
ভুক্তভোগী ছাত্রী জানান, বর্তমানে তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যন্ত অসুস্থ হয়ে পড়েছেন এবং সার্বক্ষণিক নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
তিনি বলেন, ‘যে স্থানে ঘটনা ঘটেছে, সেখানে সিসিটিভি ক্যামেরা বিদ্যমান। ওইসব সিসিটিভির ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করলেও আমার অভিযোগের সত্যতা মিলবে। আমি অবিলম্বে ন্যক্কারজনক এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করছি।’
এদিকে, ভুক্তভোগী ছাত্রীর অভিযোগ স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত ছাত্র। তিনি বলেন, ‘অসচেতনভাবে তার (ভুক্তভোগী ছাত্র) সঙ্গে আমি একটু অসদাচরণ করে ফেলেছি। এটার জন্য আমি তার কাছে ক্ষমাও চেয়েছি। প্রক্টর অফিস থেকে আমাকে ফোন করা হয়েছিল, আগামীকাল আমি সেখানে যাবো।’
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘ওই ছাত্রীর অভিযোগটি গ্রহণ করা হয়েছে। বিভাগকেও বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। অভিযুক্তকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার ডাকা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’