শিরোনাম
১৯০ জন প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতার সারাবিশ্বে প্রথম হয়েছে বাংলাদেশের হাফেজ সালেহ আহমাদ তাকরীম। তার বয়স মাত্র ১৩ বছর।
তাকরীমের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলার ভাদরা গ্রামে। বর্তমানে সে রাজধানীর মিরপুরের মারকাযু ফয়জিল কুরআন আল ইসলামী মাদ্রাসায় পড়ছে।
ইরানের রাজধানী তেহরানের আন্দিশাহ (আল-ফিকির) হলে গত ৫ মার্চ পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
১৯০ প্রতিযোগীর মধ্য থেকে বাছাই করে চূড়ান্ত পর্বের জন্য পাঁচ দেশের সেরা পাঁচজন মনোনীত হন সেখানে। তাদের মধ্যে বাংলাদেশের প্রতিযোগী সালেহ আহমাদ তাকরীম সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে প্রথম স্থান অর্জন করে।
প্রতিযোগিতার সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইরানের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী মুহাম্মাদ মাহদী ইসমাইলী, শিক্ষামন্ত্রী ইউসুফ নুরী ও ইসলামিক দাওয়া সেন্টারের প্রধান সৈয়্যদ মাহদী খামুশীসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত।
বাংলাদেশের জন্য এ গর্ব বয়ে আনা হাফেজের বাবাও একজন হাফেজ ও মাদ্রাসা শিক্ষক। তার নাম আব্দুর রহমান। হাফেজ তাকরীমের মা একজন গৃহিণী।
ছেলের এই বিশ্বজয়ের কৃতিত্বে হাফেজ আব্দুর রহমান শনিবার বলেন, ‘আমাদের বাড়ি সিরাজগঞ্জে ছিল। নদীতে বাড়ি-জমি ভেঙে গেলে টাঙ্গাইলের বাড়ি করি। তবে তাকরীম আমার সঙ্গে সাভারে থাকত। সেখানে আমার তত্ত্বাবধানেই সে হাফেজ হয়। কুরআনের আয়াত অন্তরে গেঁথে নেয় খুব সহজেই। মাত্র সাড়ে ৯ বছর বয়সে সে সম্পূর্ণ কুরআন মুখস্ত করে ফেলে। পরে তাকে মিরপুরের মারকাযু ফয়জিল কুরআন আল ইসলামী মাদ্রাসায় ভর্তি করি। সেখানেও সে সাফল্যের সঙ্গে সব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হচ্ছে। ভবিষ্যতে আমি তাকে একজন দীনদার আলেম হিসেবে তৈরি করতে চাই, যাতে ইসলামের খেদমত করতে পারে সঠিকভাবে। এখন সে কিতাব বিভাগে পড়াশোনা করছে।’
এদিকে হাফেজ সালেহ আহমাদ তাকরীমের এমন সাফল্যে উচ্ছ্বসিত ও গর্বিত তার মাদ্রাসা মারকাযু ফয়জিল কুরআনের শিক্ষকরা।
প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ খতিব মুফতি মুরতাজা হাসান ফয়েজী মাসুম এক প্রতিক্রিয়ায় জানান, আমরা আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায় করছি ও দেশবাসীর কাছে হাফেজ তাকরীমের জন্য দোয়া চাই। আল্লাহ তায়ালা অসাধারণ মেধা দিয়েছেন তাকরীমকে। হিফজ বিভাগের পাশাপাশি কিতাব বিভাগেও ঈর্ষণীয় সাফল্য তার।
উল্লেখ্য, হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় দেশের মাটিতেই চমক দেখিয়েছিলেন হাফেজ তাকরীম। ২০২০ সালের রমজান মাসে একটি বেসরকারি টেলিভিশনে আয়োজিত হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয় সে। হাফেজ তাকরীম জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত শিশু ক্কারি।