শিরোনাম
বাংলাদেশ থেকে দুর্গাপূজার মৌসুমে ৪৬০০ টন ইলিশ রপ্তানি হচ্ছে ভারতে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন অনুযায়ী, চলতি মাসের ১০ থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৮৪৬ দশমিক ৭৯ টন ইলিশ রপ্তানি হয়েছে। বাকি আরও প্রায় ৩৭৫৪ টন। সময় মাত্র ৪ দিন।কলকাতায় ‘বাংলার ইলিশ’র জন্য হাহাকার পড়ছে। শুধু আস্তা ইলিশ নয়, টুকরো টুকরো এক পিছ-দুই পিছ ইলিশ কিনতে হন্যে হয়ে ফিরছেন ভোজন রসিকরা। সূত্র: যুগান্তর
আর অতিরিক্ত ইলিশ ধরতে ঝুঁকছেন জেলেরা। ৩ নভেম্বর থেকে ২২ দিনের জন্য ইলিশ ধরা বন্ধ হচ্ছে। বাংলাদেশের বাজারে যখন ইলিশের দাম চড়া, ঠিক তখন ইলিশ রপ্তানির পক্ষে নন সাধারণ ক্রেতারা। এ অবস্থায় ইলিশ রপ্তানিকারক এবং ভারতে ইলিশ আমদানিকারকরা বেকায়দায় পড়ছেন। এ বিষয়ে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, যারা ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন পেয়েছে, সময়ের স্বল্পতা উল্লেখ করে রপ্তানির সময় বাড়ানোর জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করছে। বর্তমানে বাণিজ্যমন্ত্রী দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। ফিরে এলে তার সঙ্গে আলোচনা করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার কলকাতা পুরসভার মেয়র ও মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, বাংলাদেশের-পদ্মার ইলিশের স্বাদ-গন্ধ নিতে সারা বছর কলকাতা মুখিয়ে থাকে। পুজো এলে বেশি চাহিদা থাকে। পরে এলেও আমরা চাইব, বেশি করে আসুক, তা হলে দাম কমবে। কলকাতার এক সাংবাদিক জানান, কলকাতায় পুজো উপলক্ষ্যে ইলিশের দাম বেশ চড়া। অধিকাংশ ক্রেতাই আস্তা ইলিশ না কিনে একটি ইলিশকে টুকরো টুকরো করে একাধিক ক্রেতা ভাগাভাগি করে নেন।
বেনাপোল কাস্টম ইন্সপেক্টর (মৎস্য ও মাননিয়ন্ত্রক) মো. আসওয়াদুল বলেন, মোট ১০৫টি কোম্পানি ইলিশ রপ্তানি করার অনুমোদন পেয়েছে। ইতোমধ্যে নির্দেশনা পেয়েছি, আগামী মাসের ৩ অক্টোবর থেকে ইলিশ রপ্তানি নিষিদ্ধের।
বরগুনা জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, ইলিশ এখন জেলেদের সঙ্গে এক প্রকার মশকরা করছে। বরিশালকেন্দ্রিক প্রায় সাড়ে ৫ হাজার ট্রলার রয়েছে। কখনও ট্রলার ভরে ইলিশ ঘাটে আসছে, আবার কখনও টানা বেশ কদিন খালি ট্রলার ঘাটে ভিড়ছে। মূলত বঙ্গোপসাগর এবং বরিশাল-বরগুনাকেন্দ্রিক ধরা ইলিশ ভারতে রপ্তানি হচ্ছে।
মৎস্য অধিদপ্তরের উপ-প্রধান কর্মকর্তা মাসুদ আরা মমি বলেন, লকডাউনের কারণে এবারের ইলিশ স্বাদ-গন্ধ এবং আকার বেড়েছে। আমরা ৩ অক্টোম্বর থেকে ২২ দিনের জন্য ইলিশ ধরা বন্ধ ঘোষণা করেছি। এ সময়ের মধ্যে ইলিশ ধরা এবং বিক্রি সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। নির্ধারিত সময়ে ভারতে ইলিশ পৌঁছানো সম্ভব হবে কিনা- তা শুধু অনুমোদিত ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানবেন। আমরা বিষয়টি দেখছি না। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব তানিয়া ইসলাম বলেন, সময় বাড়ানো হবে কিনা, তা ঊর্ধ্বতনরা জানেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যার অধ্যাপক ইলিশ গবেষক ড. মো. নিয়ামুল নাসের বলেন, ইলিশ কোনো উৎসবের মাছ নয়। এটি একটি কালচারের পরিণত হয়েছে। উৎসবকে ঘিরে অতিরিক্ত মাছ ধরা এবং জেলেরা চরম ঝুঁকির মধ্যে থেকেই তা আহরণ করেন, তা নিশ্চয় মঙ্গলের নয়। এখন ইলিশ কম ধরা পড়ছে, অপরদিকে রপ্তানি করা হচ্ছে। এতে দেশের বাজারে চাপ পড়ছে।