শিরোনাম
২৬ জানুয়ারি ছিল ভারতের ৭৩তম প্রজাতন্ত্র দিবস। এর ঠিক আগের সন্ধ্যায় পশ্চিম বাংলার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী সিপিএমের বর্ষীয়ান নেতা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য পদ্মভূষণ সম্মান প্রত্যাখ্যান করেন। এর পরই তোলপাড় হয়ে যায় সমগ্র ভারতে। সূত্র: যুগান্তর
সমালোচকরা বলছেন, কমিউনিস্টরা কাকড়ার মতো। উপরে উঠতে দেয় না কাউকে। দেশের সংস্কৃতি মানেন না এটাসহ নানা আক্রমণ।
এই পরিস্থিতিতে এবার মুখ খুললেন স্বয়ং সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। শুক্রবার সিপিআইএম-এর মুখপত্র গণশক্তি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে তার বক্তব্য।
এ বিষয়ে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বলেন, পদ্মভূষণ সম্মান সম্পর্কে আগে জানলেও আমি প্রত্যাখ্যানই করতাম। আগে জানানো হয়েছে কি হয়নি সেটা বিষয় নয়। আমাকে আগে জানানো হলেও আমি এই পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করতাম।
এর আগে প্রয়াত বামনেতা ইএমএস নাম্বুদিরিপাদকে উল্লেখ করে সিপিএমের দাবি, রাষ্ট্রের দেওয়া কোনো পুরস্কার তারা গ্রহণ করে না।
এরপর প্রশ্ন ওঠে, কোনো সংগঠনের দেওয়া পুরস্কার বা সম্মান গ্রহণ করতে পারলে রাষ্ট্রের সম্মানে কেন অনাগ্রহ সিপিএমের?
বুদ্ধদেবের পদ্ম-প্রত্যাখ্যানের পরই সিপিএমের তরফে বলা হয়, রাষ্ট্রের দেওয়া এমন কোনো পুরস্কার ধারাবাহিকতা রেখেই তারা তা গ্রহণ করেন না। কারণ, তাদের কাজ মানুষের জন্য।
যদিও বিজেপি-র কাছে এই যুক্তি গ্রহণযোগ্য হচ্ছে না। রাজ্য বিজেপির সাবেক সভাপতি দিলীপ ঘোষ এই প্রসঙ্গে পাল্টা সিপিএমকেই আক্রমণ করে বলেছেন, কমিউনিস্টরা চিরদিন দেশের পরম্পরা-সংস্কৃতিকে অপমান করেছে।
এ প্রসঙ্গে দলের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন সাবেক বিধায়ক তথা সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, এমনটা কোথাও বলা নেই, যে কোনো পুরস্কার নেওয়া যাবে না। কোনো সামাজিক সংগঠন পুরস্কার দিলে আমরা তা নিতে পারি। কিন্তু দেশের জন্য কাজ করে পুরস্কার নিতে হবে কেন? দেশের মানুষের জন্য কাজ করাই তো আমাদের দায়িত্ব, এতে পুরস্কারের কথা আসছে কোথা থেকে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০০১-এ মাদার তেরেসা পুরস্কার পেয়েছিলেন বুদ্ধদেবের পূর্বসূরি প্রয়াত জ্যোতি বসু। পুরস্কারমূল্য হিসেবে দু’লক্ষ টাকা, সোনার মেডেল ও শাল দেওয়া হয়েছিল তাকে। এ ছাড়া ২০০৫-এ ‘ইন্সস্টিটিউট অব অ্যাডভান্সড স্টাডিজ ইন এডুকেশন’ জ্যোতি বসুকে বিশেষ সম্মান দেয়। ২০০৭-এ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে ‘ডক্টর অব ল’ দেয়। তাকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ‘ডি-লিট’-ও দিতে চেয়েছিল, কিন্তু বুদ্ধদেবের পূর্বসূরি তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।