শিরোনাম
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী সিপিআইএম (কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া–মার্ক্সিস্ট) দলের নেতা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য দেশটির তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান পদ্মভূষণ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। মঙ্গলবার রাতে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পরিবারের পক্ষ এই তথ্য জানানো হয়েছে।
গতকাল ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এই পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। এরপর বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পরিবারের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে জানানো হয়, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে না জানিয়ে সম্মান নেওয়ার বিষয়ে সম্মতি দেওয়া হয়েছিল। পরে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টি জানতে পেরে পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেন।
রাতে একটি লিখিত বিবৃতিতে বুদ্ধদেব বলেন, ‘পদ্মভূষণ পুরস্কার নিয়ে আমি কিছুই জানি না। এই নিয়ে আমাকে কেউ কিছু বলেনি। যদি আমাকে পদ্মভূষণ পুরস্কার দিয়ে থাকে, তাহলে আমি তা প্রত্যাখ্যান করছি।’
বর্তমানে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোটের। প্রশাসনিক কাজকর্ম চালাতে, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সঙ্গে বিজেপির সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আদভানির একসময়ে ভালো সম্পর্ক ছিল। তবে তিনি বরাবরই হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ও বিজেপির বিরোধিতা করে এসেছেন। সেই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের দেওয়া সম্মান নেবেন কি না, তা নিয়ে কলকাতায় জল্পনা ছিল।
সম্মান ঘোষণা হওয়ার পরে কোনো প্রতিক্রিয়া না জানানোয় মনে করা হয়েছিল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এই সম্মান গ্রহণ করবেন। কিন্তু রাতেই তিনি সম্মান প্রত্যাখ্যান করেন।
সিপিআইএম দলে অবশ্য রাষ্ট্রীয় সম্মান নেওয়ার রীতি নেই। ভারতের সর্বোচ্চ সম্মান ভারতরত্ন দেওয়ার প্রসঙ্গে প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুও বলেছিলেন, তিনি সম্মান নিতে উৎসাহী নন।
অপর একটি জাতীয় সম্মান পদ্মশ্রীও প্রত্যাখ্যান করেন বাঙালির সমাজসহ পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট গায়িকা সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় গণমাধ্যমকে বলেন, ৯০ বছর বয়সে তিনি পদ্মশ্রী পুরস্কার নিতে রাজি নন। তিনি বলেন, ‘ফোন করে বললেই আমাকে যেতে হবে। শিল্পীদের আর কোনো সম্মান নেই।’ পদ্মশ্রী পুরস্কারের প্রয়োজন নেই বলে কলকাতার সংবাদমাধ্যমকে জানান তিনি।
পশ্চিমবঙ্গের আরেক শিল্পী অনিন্দ্য চ্যাটার্জিও পদ্মশ্রী নিতে অস্বীকার করেন। অনিন্দ্য চাটার্জি একজন তবলাশিল্পী।
এদিকে বর্ষীয়ান অভিনেতা ভিক্টর বন্দ্যোপাধ্যায়কেও এই সম্মান দেওয়া হবে বলে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে। ভিক্টর ১৯৯১ সালে বিজেপির হয়ে লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তিনি সম্মান প্রত্যাখ্যান করেননি।