শিরোনাম
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মঙ্গলবার সিএনএনের সঙ্গে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার ট্যাকটিক্যাল পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করার সম্ভাবনা কম। যদিও রুশ প্রেসিডেন্ট ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল অধিগ্রহণ করার সময় বলেছিলেন, যদি রাশিয়ার কোনো অংশে হামলা হয় তাহলে ‘আমাদের কাছে থাকা’ সকল অস্ত্র ব্যবহার করব।
বাইডেনের কাছে সিএনএন প্রশ্ন করেছিল, ইউক্রেনে পুতিনের ট্যাকটিক্যাল পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার কতটা বাস্তবসম্মত হবে? জবাবে বাইডেন বলেন, ঠিক আছে। আমি মনে করি না সে (ট্যাকটিক্যাল পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার) করবে।
কিন্তু যুদ্ধের ময়দান থেকে রুশ সেনারা পিছু হটায় এ অস্ত্র ব্যবহারের শঙ্কা বেড়েছে। যদি সম্ভাবনা কম। কিন্তু উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
ট্যাকটিক্যাল পারমাণবিক অস্ত্রের বৈশিষ্ট্য কি? কেন এগুলো নিয়ে এত আলোচনা হচ্ছে?
ট্যাকটিক্যাল পারমাণবিক অস্ত্রের কোনো বৈশ্বিক সংজ্ঞা নেই। এগুলোর বৈশিষ্ট্য পরিমাপ করা হয় সাইজ, তাদের পাল্লা এবং সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে এগুলোর সীমিত ব্যবহারের বিষয়টি নিয়ে।
এগুলো সাধারণ বোমা থেকে কিছুটা বড়। এগুলো বিস্ফোরণে রেডিওঅ্যাকটিভ বের হয় এবং বিস্ফোরণের বাইরে আরও বড় মারাত্বক প্রভাব ফেলে।
ট্যাকটিক্যাল পারমাণবিক অস্ত্রগুলোকে নন-স্ট্রেটেজিক অস্ত্রও বলা হয়। যেগুলো স্ট্রেটেজিক অস্ত্রের বিপরীত। যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া সংজ্ঞা অনুযায়ী নন-স্ট্রেটেজিক অস্ত্র তৈরি করা হয়েছে ‘শত্রুর যুদ্ধ তৈরি করার ক্ষমতা এবং যুদ্ধ করার ইচ্ছায়’ আঘাত করার জন্য। যার মধ্যে রয়েছে উৎপাদন, অবকাঠামো, যাতায়াত এবং যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ অন্যান্য লক্ষ্য ধ্বংস করে দেওয়া।
অন্যদিকে ট্যাকটিক্যাল অস্ত্র তৈরি করা হয়েছে সীমিত এবং তাৎক্ষণিক সামরিক লক্ষ্য অর্জন করার জন্য।
এগুলো মিসাইল, বিমান থেকে ছোঁড়া বোমা এবং কামানের শেলের সঙ্গেও জুড়ে দেওয়া যায়, যেগুলো তুলনামূলকভাবে স্বল্পপাল্লার। এগুলো কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে ছোঁড়ার জন্য তৈরি করা বিশালাকৃতির ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালাস্টিক মিসাইল থেকে অনেক ছোট।
আল জাজিরার প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক অ্যালেক্স গাতাপোলাস বলেছেন, ট্যাকটিক্যাল নিউক্লিয়ার যুদ্ধাস্ত্র তৈরি করা হয়েছে যুদ্ধক্ষেত্রে কমান্ডাররা যেন সহযোগিতা পান। ১৯৫০ সালের মাঝামাঝি সময়ে আরও শক্তিশালী থার্মারনিউক্লিয়ার বোমা তৈরি ও পরীক্ষা চালানো হয়েছিল। সামরিক পরিকল্পনাকারীরা মনে করেছিলেন স্বল্প পাল্লার ছোট অস্ত্র ট্যাকটিক্যাল ‘কৌশলগত’ পরিস্থিতিতে ব্যবহার উপকারী হবে।
তিনি আরও বলেছেন, আধুনিক যুদ্ধাস্ত্রের একটি পরিবর্তনশীল ‘ডায়াল-আপ’ ইয়েল্ড আছে, মানে একজন অপারেটর এটির বিস্ফোরণ ক্ষমতা ঠিক করে দিতে পারেন এবং একটি ট্যাকটিক্যাল অস্ত্র কিলোটনের এক ভগ্নাংশ থেকে ৫০ কিলোটন পর্যন্ত শক্তিশালী হতে পারে। হিরোশিমা ধ্বংস করেছিল যে বোমা সেটি ১৫ কিলোটন শক্তিশালী ছিল। এককিলোটন এক হাজার টনের সমান।
কাদের কাছে এসব অস্ত্র আছে?
পারমাণবিক অস্ত্র আছে এমন সব দেশের কাছেই ট্যাকটিক্যাল পারমাণবিক অস্ত্র আছে।
ইউক্রেনে কি ট্যাকটিক্যাল পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করা হবে?
যুক্তরাষ্ট্র বলছে রাশিয়া কোনো পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে না। কিন্তু এটি সময়ই বলে দেবে।
সূত্র: আল জাজিরা