পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেলেন তিন বিজ্ঞানী

ফানাম নিউজ
  ০৫ অক্টোবর ২০২২, ০০:৪০

২০২২ সালে পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রিয়ার তিন বিজ্ঞানী। এরা হলেন- অ্যালা আসপেক্ট, জন এফ ক্লোজার ও আন্তন জেলিঙ্গার।

মঙ্গলবার (০৪ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় বিকেলে সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে এক অনুষ্ঠানে রয়েল সুইডিশ একাডেমি এ বছরের নোবেলজয়ীদের নাম ঘোষণা করে।

‘বিজড়িত ফোটন নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা, বেল অসমতার লঙ্ঘন প্রতিষ্ঠা এবং কোয়ান্টাম বিজ্ঞানে অগ্রণী ভূমিকা পালনের জন্য’ ২০২২ সালে ওই তিন বিজ্ঞানীকে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছে।  তারা বিচ্ছিন্ন কোয়ান্টাম দশা ব্যবহার করে গ্রাউন্ড-ব্রেকিং পরীক্ষা পরিচালনা করেছেন, যেখানে দুটি উপ-পারমাণবিক কণা আলাদা হয়ে গেলেও একক এককের মতো আচরণ করে।

গ্রাউন্ডব্রেকিং পরীক্ষাগুলি ব্যবহার করে তারা তিনজন আটকে থাকা অবস্থায় উপ-পারমাণবিক কণাগুলিকে তদন্ত এবং নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা প্রদর্শন করেছেন। আটকানো উপ-পারমাণবিক জোড়টিতে একটি কণার কী ঘটে তা নির্ধারণ করে অন্যটির ক্ষেত্রে কী ঘটবে, এমনকি যদিও তারা একে অপরকে প্রভাবিত করার জন্য সত্যিই অনেক বেশি দূরে অবস্থান করে। তাদের হাতে বিকশিত পরীক্ষামূলক সরঞ্জামগুলির ফলে কোয়ান্টাম প্রযুক্তিতে একটি নতুন যুগের সূচনা হয়েছে।

নোবেল কমিটির প্রধান থমাস পার্লম্যান এবারের নোবেল বিজয়ীদের এই সুখবর জানান। এই ঘোষণার আগে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেলের জন্য মনোনীত ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান বা সংক্ষিপ্ত তালিকা সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি। বরাবরের মতোই সব নথিপত্র অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে রেখে তা জনসাধারণের ধরাছোঁয়ার বাইরে রাখা হয়।

প্যারিস-সুদ বিশ্ববিদ্যালয়, ফ্রান্স থেকে পিএইচডি লাভ করেন ১৯৮৩ সালে। বর্তমানে তিনি ইউনিভার্সিটি প্যারিস-স্যাক্লে এবং ইকোল পলিটেকনিক, প্যালাইসিউ, ফ্রান্সের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।

জন এফ. ক্লাজার, ১৯৪২ সালে পাসাডেনা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৯ সালে নিউ ইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে পিএইচডি লাভ করেন। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জে.এফ ক্লাউজার এন্ড এসোসিয়েট-এ একজন গবেষক হিসেবে কর্মরত।

অ্যান্টন জেলিঙ্গার, অস্ট্রিয়ার রিড ইম ইনক্রেইসে ১৯৪৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়, অস্ট্রিয়া থেকে ১৯৭১ সালে পিএইচডি লাভ করেন। বর্তমানে তিনি অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনায় নিয়োজিত।

এর আগে গতকাল সোমবার চিকিৎসাবিজ্ঞান ও শরীরতত্ত্বে নোবেল পুরস্কার পান সুইডেনের জিনবিজ্ঞানী সান্তে প্যাবো। বিলুপ্ত হোমিনদের জিনোম এবং মানবজাতির বিবর্তন বিষয়ে গবেষণার জন্য তাকে এ পুরস্কার দেয়া হয়েছে।

গত বছর পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেয়েছিলেন জাপানি বংশোদ্ভূত মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী শুকুরো মানাবে, জার্মানির পদার্থবিজ্ঞানী ক্লাউস হ্যাসেলম্যান ও ইতালীয় পদার্থবিজ্ঞানী জর্জিও পারিসি। তার আগের বছরও পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেয়েছিলেন ৩ জন। এরা হলেন যুক্তরাজ্যের রজার পেনরোস, জার্মানির রাইনহার্ড গেনজেল এবং যক্তরাষ্ট্রের আন্দ্রেয়া ঘেজ।

প্রতি বছর শান্তি, সাহিত্য, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসা ও অর্থনীতি- এই ৬ বিষয়ে যারা বিশেষ অবদান রেখেছেন; তাদের পুরস্কার প্রদান করে সুইডেনভিত্তিক নোবেল ফাউন্ডেশন। পুরস্কার প্রদানের পর তা উদযাপনে উৎসবের আয়োজন করে নোবেল কমিটি। নোবেল কমিটির সদর দফতর নরওয়েতে।

উনবিংশ শতাব্দিতে সুইডিশ বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেল আবিষ্কার করেছিলেন ডিনামাইট নামের ব্যাপক বিধ্বংসী বিস্ফোরক; যা তাকে বিপুল পরিমাণ অর্থ-সম্পত্তির মালিক করে তোলে। মৃত্যুর আগে তিনি ৩ কোটি ১০ লাখ ক্রোনার রেখে গিয়েছিলেন, আজকের বাজারে যা প্রায় ১৮০ কোটি ক্রোনের সমান। আলফ্রেড নোবেলের উপার্জিত অর্থ দিয়ে ১৯০১ সালে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসাবিজ্ঞান, সাহিত্য ও শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের গোড়াপত্তন ঘটে। ১৯৬৮ সালে এই তালিকায় যুক্ত হয় অর্থনীতি।