শিরোনাম
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের একটি মসজিদের কাছে বিস্ফোরণে অন্তত ৪ জন নিহত এবং ১০ জন আহত হয়েছে। শুক্রবার জুমার নামাজ শেষ হওয়ার কয়েক মিনিট পর এ ঘটনা ঘটে। একটি হাসপাতাল হতাহতদের সংখ্যা জানিয়েছে।
হাসপাতালটির পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ইতালীয় বেসরকারি সংস্থা ইমার্জেন্সি জানিয়েছে, তারা বিস্ফোরণে ‘১৪ জন হতাহতের’ খবর পেয়েছে। এক টুইটার বার্তায় তারা লিখেছে, ‘এদের মধ্যে চারজন হাসপাতালে পৌঁছানোর সময় ইতিমধ্যেই মারা গেছেন’।
কাবুল পুলিশের মুখপাত্র খালিদ জাদরান বিস্ফোরণ ও ‘হত্যা’ নিশ্চিত করেছেন, তবে বিস্তারিত জানাননি।
আফগানিস্তানের সংবাদমাধ্যম টোলো নিউজের বরাত দিয়ে ভারতের সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে মুসল্লিরা যখন মসজিদ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
বিস্ফোরণে হতাহতের সংখ্যা এখনও জানা যায়নি, কিন্তু শুক্রবার ওই মসজিদটিতে যারা জুমার নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন, তারা সবাই বেসামরিক সাধারণ মানুষ। ঘটনার পর তালেবান সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা সেই এলাকাটি ঘিরে ফেলেন এবং যান চলাচল বন্ধ করে দেন।
এখন পর্যন্ত কোনো ব্যক্তি ও গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার না করলেও ধারণা করা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) আফগানিস্তান শাখা আইএস-খোরাসান (আইএস-কে) এই হামলার জন্য দায়ী।
আল আরাবিয়া প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ওয়াজির আকবর খান এলাকায় বিস্ফোরণটি ঘটেছে। আগে এটি শহরের ‘গ্রিন জোন’ ছিল, যেখানে অনেক বিদেশী দূতাবাস এবং ন্যাটোর অবস্থান ছিল। কিন্তু এলাকাটি এখন ক্ষমতাসীন তালেবানদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা অযাচাইকৃত ছবিতে মসজিদের বাইরের রাস্তায় একটি গাড়িকে আগুনে পুড়তে দেখা গেছে। ২০২০ সালে একই মসজিদে একটি বোমা বিস্ফোরণে মসজিদের ইমাম নিহত হয়েছিলেন।
তালেবান ক্ষমতায় ফিরে আসার পর যুদ্ধ শেষ হয়ে গেলে আফগানিস্তান জুড়ে সামগ্রিক সহিংসতা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেলেও কাবুল এবং অন্যান্য শহরে নিয়মিত বোমা হামলা হয়েছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে রুশ দূতাবাসের বাইরে আত্মঘাতী বোমা হামলায় দূতাবাসের দুই কর্মী নিহত হয়েছিল।
মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনী আফগানিস্তান থেকে বিদায় নেওয়ার পর ২০২১ সালের আগস্টে আফগানিস্তানের ক্ষমতা পুনর্দখল করে তালেবান। তারপর গত এক বছরে রাজধানী কাবুলসহ বিভিন্ন শহরের কয়েকটি মসজিদে বেশ কয়েকটি প্রাণঘাতী বোমা হামলা করেছে আইএস-কে।
তালেবান ও আইএস-কে- উভয়ই কট্টরপন্থী সুন্নি ইসলামি গোষ্ঠী হলেও এই দুই সংগঠনের পরস্পরের মধ্যে চরম বৈরিতা রয়েছে। এ বৈরির প্রধান কারণ এই দুই সংগঠনের মতাদর্শিক ভিন্নতা।
তালেবান গোষ্ঠী আফগানিস্তানকে বিদেশি প্রভাবমুক্ত একটি কট্টর ইসলামি রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে ইচ্ছুক। অন্যদিকে, আইএস-কে চায়, তুরস্ক থেকে আফগানিস্তান হয়ে পাকিস্তান ও উপমহাদেশে খিলাফত প্রতিষ্ঠা করতে।