শিরোনাম
এবার বাংলাদেশেই প্রথম রকেট তৈরি সম্পন্ন করেছেন ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের একঝাঁক তরুণ মেধাবী শিক্ষার্থী।
তারা নিজেদের মেধা-মনন আর পরিশ্রমের বিনিময়ে ধুমকেতু-এক্স- প্রজেক্ট (DhumketuX project)-এর ব্যানারে এবং ধুমকেতু এক্স টিমের (DhumketuX Team) সহায়তায় ধুমকেতু ০.১ (Dhumketu 0.1) এবং ধুমকেতু ০.২ (Dhumketu 0.2) নামের দুইটি রকেট তৈরির কাজ সম্পূর্ণ করেছে। যা সরকারিভাবে উড্ডয়নের অনুমতি পেলে বাংলাদেশের আকাশে নতুন এক দিগন্ত উন্মোচিত হবে। যা হবে স্বাধীনতার ৫০ বছরের এক অনন্য আবিষ্কার।
দুই মডেলের চারটি রকেট তৈরিতে ২০১৮ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ৪ বছর সময় লেগেছে। ধূমকেতু-১ ও ধূমকেতু-২ নামে দুটি মডেলের চারটি রকেট তৈরি করা হয়েছে। ধূমকেতু-১ লম্বা ৮ ফুট করে দুটি মিলে ১৬ ফুট লম্বা। আর ধূমকেতু-২ প্রতিটি ৬ ফিট করে, দুটি মিলে ১২ ফিট লম্বা রকেট। আর আয়তনের দিক থেকে বড় রকেট ৬ ইঞ্চি এবং ছোটটি ৪ ইঞ্চি।
মহাকাশ জয়ে আধুনিক প্রযুক্তির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় রয়েছে রকেট। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি একটি জাতির অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে ৷ অল্প বয়সেই যদি মেধাবীদের চিন্তাভাবনায় এর বীজ বুনে দেয়া হয়, তবে এটিকেই তারা পেশা হিসেবে নিতে এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যত গড়তে পারবে ৷
রকেট তৈরির টিমে মোট ১৫ জন সদস্য রয়েছেন। যায় মধ্যে সাইদুর, নাদিম, লিয়ান, আবরার, রিজু, বিন্দু, নাইম, আশরাফের নাম অন্যতম। তবে সবাই সমানতালে সময় দিতে পারেননি। মূলত, ২০১৮ সাল থেকে ৫ থেকে ৭ জন রকেট তৈরির কাজ করেছেন।
২০১২ সালে ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হওয়ার পর প্রথম সেমিস্টার থেকেই কয়েকজন বন্ধু মিলে রকেট তৈরি করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন নাহিয়ান। তারুণ্য শক্তির উপর ভর করে শুরু রকেট তৈরির কাজ। কিন্তু রকেট তৈরি করাটা তো আর মুখের কথা নয়। সঠিক পরিকল্পনার পাশাপাশি এটি তৈরি করতে অনেক টাকার প্রয়োজন।
রকেট তৈরির প্রবল ইচ্ছে শক্তি থাকার পরও অর্থাভাবে তা থমকে যায় প্রায় একবছর। পরবর্তীতে টিমের অনেকেই কলেজ শেষ করে চাকরিতে যোগ দেন। কিন্তু দমিয়ে যাওয়ার পাত্র ছিলেন না নাহিয়ান। লেখাপড়া শেষ করেও তিনি কোন চাকরিতে যোগদান করেননি। রকেট তৈরির স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন সার্বক্ষণিক।
রকেট উৎক্ষেপন প্রসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির প্রভাষক আব্দুল ওয়াহিদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রকেট উৎক্ষেপণের অনুমতি পেতে দুই সপ্তাহ আগে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সেই চিঠির প্রেক্ষিতে কবে নাগাদ রকেট উৎক্ষেপণের অনুমোদন আসে, সেদিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। কারণ, সরকারের অনুমোদন ছাড়া রকেট উৎক্ষেপণ সম্ভব নয়।
সূত্র: যুগান্তর