শিরোনাম
ডিলার হাউজের সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভ (এসআর), সুপারভাইজার এবং ব্যান্ড প্রোমোটারদের (বিপি) বেতন বাবদ কম্পেনসেশন ২০২২ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০২৪ সালের চলতি মাস পর্যন্ত সকল বকেয়া কমপেনসেশন ১৩ কোটি টাকা অবিলম্বে পরিশোধ করাসহ ১৪ দফা দাবি জানিয়েছে টেলিটক ডিলারস এসোসিয়েশন বাংলাদেশ।
রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান এসোসিয়েশনের সমন্বয়ক মো. রেজাউল করিম জাহাঙ্গীর।
এসোসিয়েশনের অন্যান্য দাবিগুলো হচ্ছে— প্রত্যেক ডিলার থেকে নেওয়া পল্লী বিদ্যুৎ/টেলিচার্জ বাবদ অতিরিক্ত সিকিউরিটি ডিপোজিট সাড়ে ৭ কোটি অবিলম্বে ফেরত দিতে হবে; ডিলার এবং রিটেলারদের পাওনা শতবর্ষ, বর্ণমালা, স্বাগতম এবং অপরাজিতা প্যাকেজের ইউজেস কমিশন অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে এবং অপরাজিতা প্যাকেজের এসএএফ কমিশন প্রদান করতে হবে; টেলিটক হতে অব্যাহতি নেওয়া সকল ডিলারদের সিকিউরিটি ডিপোজিটসহ সকল পাওনাদি অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে এবং কিছু অসাধু কর্মকর্তা অবৈধ পন্থা অবলম্বন করে কমপেনসেশন দেওয়ার আগেই ৩০ শতাংশ টাকা অগ্রিম নিয়ে কম্পেনসেশন দেওয়া হত, সেই ৩০ শতাংশ টাকা অবিলম্বে ফেরত দিতে হবে।
এসোসিয়েশনের সংস্কার মূলক দাবিগুলো হচ্ছে— বিগত সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংস্কার করতে হবে এবং বাংলাদেশ টেলিকমিনিকেশনস কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) কর্মকর্তাদের টেলিটক-এ নিয়োগ দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে; মার্কেটে সিম চাহিদা মোতাবেক প্রদান করতে হবে এবং নতুন প্যাকেজের সিম আনতে হবে; টেলি পে অ্যাপস আপগ্রেড করতে হবে এবং অ্যাপসের যে কোনও সমস্যার সমাধান দ্রুততম সময়ে করতে হবে এবং সিম এক্টিভেশন অ্যাপ আপগ্রেড করতে হবে; সকল টাওয়ারে ব্যাটারি ব্যাকআপ এর ব্যবস্থা করতে হবে; রিটেলারদের বিভিন্ন অফার সেলে এক্সট্রা কমিশনের ব্যবস্থা করতে হবে।
এছাড়া মাদার সিম থেকে এসআর সিমে টাকা ট্রান্সফার করার পর অবিকৃত টাকা মাদার সিমে ফেরত আনার ব্যবস্থা করতে হবে; রিটেলারদের এনএমপি করার সুযোগ দিতে হবে এবং প্রত্যেকটা এনএমপি জন্য কমিশন প্রদান করতে হবে; দ্রুততম সময়ে সকল টুজি টাওয়ারকে ফোরজি তে রূপান্তর করতে হবে এবং ডাটা ব্যবহারের জন্য স্পেশাল স্টুডেন্ট সিম প্যাকেজ আনতে হবে।
লিখিত বক্তব্যে রেজাউল করিম বলেন, আমাদের মাসিক এসআর, সুপারভাইজার এবং বিপিদের বেতন বাবদ কম্পেনসেশন, বর্তমান জিএম সর্বশেষ অক্টোবর নভেম্বর ও ডিসেম্বর ২০২১ সালে প্রদান করেছেন। কিন্তু জানুয়ারি ২০২২ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রেখেছে। টেলিটক প্রথমে প্রত্যেক ডিলারের কাছ থেকে জামানতস্বরূপ এক লক্ষ টাকা করে নেয় এবং পরবর্তীতে পল্লী বিদ্যুৎ/টেলিচার্জ বাবদ সারা বাংলাদেশের ডিলারদের কাছ থেকে ২০১৯ সালে ডিলার প্রতি ৩ থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত সিকিউরিটি ডিপোজিট নেয়।
কিন্তু বছর-খানেক পর কিছু অসাধু কর্মকর্তা পল্লীবিদ্যুৎ বিল ও টেলিচার্জ ব্যবসা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে পাওয়ার বাই টেলিটক হিসেবে চুক্তি করে। যাহাতে ডিলারদের বিদ্যুৎ বিল ও টেলিচার্জ ব্যবসা কমতে শুরু করে এবং ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে আসে। তাহাদের এই কর্মকাণ্ড দেখে আমরা টেলিটককে বাঁচিয়ে রাখতে, টেলিটকের মার্কেটকে আরো গতিশীল করার লক্ষ্যে কয়েকবার ম্যানেজমেন্টের সাথে বিভিন্ন সময় আলোচনা করি। কিন্তু তারা আমাদের বিষয়গুলো আমলে নেয়নি।
তিনি বলেন, অনেক ডিলার তাদের স্বোচ্ছাচারিতা সহ্য করতে না পেরে ব্যবসা ছেড়ে চলে গেছেন বা অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করায় অনেক ডিলারের সাথে এই ম্যানেজমেন্ট ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছেন। টেলিটক থেকে অব্যাহতি নেওয়া ডিলারদের জমা করা জামানতের টাকা, বকেয়া কমপেনসেশন, বিভিন্ন সময় পাওনা সিম কমিশনের টাকা চাওয়া হলে টেলিটক ম্যানেজমেন্ট অব্যাহতি নেওয়া ডিলারদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা সর্বশেষ গত ২১ আগস্ট টেলিটকের এমডি ও জিএম-এর সাথে আমাদের ন্যায্য দাবি নিয়ে মিটিং করা হলে তিনি কোন আশানুরূপ সমাধান দিতে পারেননি। তাই আমরা ডিলাররা বাধ্য হয়ে আমাদের সমুদয় পাওনাদি এবং টেলিটককে বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থে আজকের এই সংবাদ সম্মেলনে মাধ্যমে আমাদের মূল দাবি এবং সংস্কারমূলক দাবি সমূহ নিম্নে বর্ণনা করতে বাধ্য হলাম।
সংবাদ সম্মেলন থেকে হুঁশিয়ারি করে রেজাউল করিম জাহাঙ্গীর বলেন, আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বর্তমান ও সাবেক ডিলারদের ন্যায্য পাওনা সমূহ আগামী ৭ কার্য দিবসের মধ্যে প্রদান করার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি। আমাদের দাবি সমূহ মেনে না নেওয়া পর্যন্ত সারা বাংলাদেশের সকল ডিলাররা লিফটিং এবং মার্কেটিং বন্ধ রাখবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, সমন্বয়ক মো. নুরুল ইসলামসহ অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত ডিলাররা।