শিরোনাম
স্মার্টফোন বলতেই চোখের সামনে কী ভাসে? সব কাজের কাজি আর আধুনিক প্রযুক্তির সন্নিবেশ-তাই তো? বলতে গেলে হেন কিছু নেই, যা করা যায় না। কিন্তু এরপরও কোথাও তো থামতে হচ্ছে, অর্থাৎ কিছু সীমাবদ্ধতা তো রয়েছেই। এবার সেটিও দূর করতে মাঠে নেমেছেন প্রযুক্তি খাতের নামি উদ্যোক্তা ‘ভিনগ্রহের মানুষ’খ্যাত ইলন মাস্ক। তার প্রতিষ্ঠান টেসলা এমন ‘সুপার ফোন’ আনছে-যাতে ‘স্মার্টফোন’ নিয়ে আপনার ধারণাই বদলে যেতে পারে। প্রযুক্তি বাজারে ছড়িয়ে পড়া গুঞ্জন সত্যি কি না-এবার সেটিই দেখার অপেক্ষা। দ্য গার্ডিয়ান।
পরবর্তী প্রজন্মের এ ডিভাইসটির নাম ‘পাই’ (টেসলা মডেল পাই)। ফাইভজি প্রযুক্তির ফোনটি চলবে স্যাটেলাইটেও। অর্থাৎ স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া সংকেত ব্যবহার করেই এটি কাজ করবে। সেটি হলে পৃথিবীর ইতিহাসে এটাই হবে প্রথম স্মার্ট স্যাটেলাইট মোবাইল ফোন।
স্যাটেলাইট দুনিয়ায় এমনিতেই রাজত্ব টেসলারের। আর তাদেরই নেটওয়ার্ক স্টারলিংকের সংকেত মঙ্গলগ্রহেও মিলবে বলে এ ফোন ব্যবহার করা যাবে মঙ্গলেও। আর পৃথিবীর বুকে যেখানেই হোক কথা বলা যাবে নির্বিঘ্নে। বন, পাহাড়, সাগর যে কোনো দুর্গম এলাকায় এটি থাকবে সক্রিয়। স্যাটেলাইটকে পৃথিবীর আবহাওয়া সংক্রান্ত কোনো ঝামেলা পোহাতে হয় না বলে দিনরাত ঝড়-বৃষ্টির তফাতেও কোনো হেরফের হবে না এ যোগাযোগে। এমনকি বাজ পড়লেও সচল থাকবে নেটওয়ার্ক। ২১০ এমবিপিএস পর্যন্ত ডাউনলোড সুবিধা মিলবে এ ফোনে।
ফোনটিতে থাকতে পারে নিউরালিংক প্রযুক্তিও। নিউরালিংক হচ্ছে মস্তিষ্কের সঙ্গে কম্পিউটারের সংযোগ। অর্থাৎ এ প্রযুক্তি থাকলে অনেক কাজের জন্য কেবল চিন্তা করেই নির্দেশ দেওয়া যাবে। উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, কেউ চাইল ইউটিউবে ভিডিও দেখে সময় কাটাবেন-এজন্য হাতে অপারেট করতে হবে না, ইউটিউব চালানোর ইচ্ছা প্রকাশ করলেই ফোনে চলতে থাকবে।
টেসলার মডেল পাই সুদর্শন। এর ওপর ফোনটির শরীরে এমন একটি বিশেষ আবরণ আছে, যা পরিবেশ বদলের সঙ্গে সঙ্গে মিল রেখে রং পরিবর্তন করবে। চার্জ হবে সূর্যকিরণে। এর চার হাজার রেজুলেশনের সুপার অ্যামোলেড ডিসপ্লের স্ক্রিনটি হবে সাড়ে ৬ ইঞ্চির। ফোনের স্টোরেজ বা মেমোরি হবে ২ টেরাবাইট! মোটামুটি গড়পড়তা বলা যায় দুটি কম্পিউটারের সমান স্মৃতিশক্তি থাকবে ফোনটিতে। এতে প্রসেসর হিসাবে থাকছে কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগনের ৮৯৮ বা তার চেয়ে বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন চিপসেট।
পাই ফোনের পেছনে থাকবে ৪ লেন্সের ১০৮ মেগা পিক্সেল ক্যামেরা। বিশেষ ক্ষমতার এ ক্যামেরায় তারাভরা আকাশের ছবি তোলা যাবে কোনো ধরনের লং এক্সপোজার ছাড়াই। এমনকি মহাকাশে ছায়াপথের ছবি তোলাও এর কাছে নস্যি। তাই জ্যোতির্বিজ্ঞানমনস্ক কিংবা শৌখিন ফটোগ্রাফারদের জন্য এটি হবে ‘হাতের মুঠোয় সোনার হরিণ’।
তবে ফোনটি কিনতে গাঁটের পয়সা ভালোই খরচ করতে পারে। প্রচলিত স্মার্টফোনের চেয়ে এর দাম একটু বেশিই পড়বে। ধারণা করা হচ্ছে, এর দাম হবে ২৫০০ থেকে ৪০০০ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় সোয়া দুই লাখ থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা)। তবে ফোনটি নিয়ে এখনো কোনো ঘোষণা দেয়নি টেসলা। কবে বাজারে ছাড়া হবে, আসেনি সে তথ্যও। তবে নেটিজেনরা বলছেন এ বছরের মধ্যেই মানুষের হাতে আসবে তা।