শিরোনাম
একের পর এক চমক দিয়েই যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ। মহাবিশ্বের সাড়া জাগানো ছবি দেখানোর মাত্র এক সপ্তাহ পর নতুন এক ছায়াপথের সন্ধান দিয়েছে টেলিস্কোপটি। হার্ভার্ড সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোফিজিকসের গবেষক রোহান নাইডু জেমস ওয়েবের তথ্য বিশ্লেষণ করে নতুন এই ছায়াপথের খোঁজ পাওয়ার কথা বলেন। তিনি বলেন, ছায়াপথটি সাড়ে ১ হাজার ৩৫০ কোটি বছর আগের। এটি গ্লাস-জেড১৩ নামে পরিচিত।
রোহান নাইডু আরও বলেন, মহাবিস্ফোরণের (বিগ ব্যাং) ৩০ কোটি বছর পরে গ্লাস-জেড১৩ ছায়াপথের সৃষ্টি। এর আগে সবচেয়ে প্রাচীন যে ছায়াপথ শনাক্ত করা হয়েছিল, তার চেয়ে এটি ১০ কোটি বছর বেশি প্রাচীন। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সম্ভাব্য সবচেয়ে দূরবর্তী নক্ষত্রের আলো দেখছি, যেটা আগে কেউ কখনো দেখেনি।’
মহাজাগতিক বস্তু যত বেশি দূরে থাকে, তার আলো পৃথিবীতে আসতে তত বেশি সময় নেয়। তাই দূরের মহাবিশ্বে ফিরে তাকানো মানে গভীর অতীতে দেখা। যদিও গ্লাস-জেড১৩ মহাবিশ্বের শুরুর যুগে বিদ্যমান ছিল, তবে এর সঠিক বয়স অজানা রয়ে গেছে। এটি সম্ভবত মহাবিস্ফোরণের ৩০ কোটি বছরের মধ্যে যেকোনো সময় গঠিত হতে পারে।
জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের মূল ইনফ্রারেড ক্যামেরা এনআইআর ক্যামের প্রাথমিক তথ্য থেকে গ্লাস-জেড১৩ ছায়াপথটি শনাক্ত করা হয়েছে। কিন্তু গত সপ্তাহে নাসা যে ছবি প্রকাশ করেছিল, সে সময় এ তথ্য সামনে আসেনি। যখন নাসার ইনফ্রারেড তথ্য দৃশ্যমান করা হয়, তখন ছায়াপথটির কেন্দ্রে সাদা এবং বাইরে লাল বিন্দুর মতো দৃশ্যমান হয়।
গবেষক নাইডু ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ২৫ সদস্যের জ্যোতির্বিদদের একটি দল ছায়াপথটির সন্ধান পাওয়ার দাবি করেছেন। তাঁদের গবেষণাসংক্রান্ত নিবন্ধ সায়েন্স সাময়িকীতে প্রকাশের জন্য জমা দিয়েছেন।
বিজ্ঞানীরা জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ ব্যবহার করে মহাকাশের অনেক গভীরে প্রাচীন তথ্য বের করে আনার সম্ভাবনার কথা বলছেন। তাঁদের ধারণা, ১ হাজার ৩৮০ কোটি বছর আগে মহাবিস্ফোরণের পরে গঠিত প্রথম যুগের ছায়াপথগুলো খুঁজে পাওয়ার সক্ষমতা এ টেলিস্কোপের রয়েছে।
গত সপ্তাহ থেকে সম্পূর্ণরূপে চালু হওয়া জেমস ওয়েব টেলিস্কোপটি এখন পর্যন্ত নির্মিত সবচেয়ে শক্তিশালী স্পেস টেলিস্কোপ। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের আশা, আবিষ্কারের ক্ষেত্রে একটি নতুন যুগের সূচনা করবে এ টেলিস্কোপ।