শিরোনাম
গত এক সপ্তাহে মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ২২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৩১ জানুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি সময়ের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত ২২৬ জনের মধ্যে পুরুষ ১২৯ ও ৯৭ জন নারী।
পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত এক সপ্তাহে করোনায় মৃতদের মধ্যে ১৬১ জন অর্থাৎ ৭১ দশমিক ২ শতাংশ রোগীই করোনার প্রতিষেধক টিকা নেননি। শুধু ৬৫ জন অর্থাৎ মাত্র ২৮ দশমিক ৮ শতাংশ টিকা নেন। টিকা গ্রহণকারী ৬৫ জনের মধ্যে প্রথম ডোজ ২৫ জন এবং দ্বিতীয় ডোজ নেন ৪০ জন।
আজ সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনা পরিস্থিতি সংক্রান্ত নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, গত এক সপ্তাহে করোনায় মোট মৃত ২২৬ জনের মধ্যে ১১৭ জন অর্থাৎ ৫১ দশমিক ৮ শতাংশ বহুমাত্রিক ব্যাধি বা কো-মরবিডিটিতে (ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য রোগব্যাধি) আক্রান্ত ছিলেন। কো-মরবিডিটির মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী উচ্চ রক্তচাপে (৬৮ দশমিক ৪ শতাংশ) আক্রান্ত ছিলেন। এছাড়া ডায়াবেটিস (৪৯ দশমিক ৬ শতাংশ), কিডনি ৩১ দশমিক ৬ শতাংশ, হৃদরোগ ২৩ দশমিক ৯ শতাংশ এবং বক্ষব্যাধিতে ১৬ দশমিক ২ শতাংশ ভুগছিলেন।
২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি থেকে দেশের জনগণকে সরকার সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করোনার টিকা প্রদান করে আসছে। শুরু থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১৬ কোটি ৬৩ লাখ ৬১ হাজার ৬৯০ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে প্রথম ডোজ ৯ কোটি ৯১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৮ জন, দ্বিতীয় ডোজ ৬ কোটি ৫১ লাখ ৪৫ হাজার ৪৪৭ জন এবং বুস্টার ডোজ অর্থাৎ তৃতীয় ডোজের টিকা নিয়েছেন ২ লাখ ৭৮ হাজার ৫০৫ জন।
স্বাস্থ্য ও রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা করোনার সংক্রমণরোধে বারবার মাস্ক পরিধানসহ কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি টিকা গ্রহণের ব্যাপারে পরামর্শ দিচ্ছেন। বিশেষ করে যারা বয়স্ক ও একাধিক রোগে ভুগছেন তাদের অধিক সাবধানতা এবং বাধ্যতামূলকভাবে টিকা গ্রহণের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। তবে তাদের সেই পরামর্শ অনেকেই গ্রহণ করছেন না। গত কয়েক সপ্তাহের মৃত্যু বিশ্লেষণে দেখা গেছে, একাধিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার পরও করোনায় মৃতদের মধ্যে প্রতিষেধক টিকা গ্রহণের ব্যাপারে অনীহা ও অবহেলা রয়েছে।
এদিকে রাজধানীসহ সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে পুরুষ ২৮ জন ও নারী ১০ জন। মৃত ৩৮ জনের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩২ জন এবং বেসরকারি হাসপাতালে ৬ জন মারা যান। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ৬২৭ জনে।
একই সময়ে করোনা শনাক্তে নমুনা পরীক্ষায় নতুন ৯ হাজার ৩৬৯ জন রোগী শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ২১ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সরকারি ও বেসরকারি ৮৬৮টি ল্যাবরেটরিতে ৪৪ হাজার ৬৭১টি নমুনা সংগ্রহ ও ৪৪ হাজার ৪৭১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ নিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ১ কোটি ২৭ লাখ ৭০ হাজার ৮৮০।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত ও ১৮ মার্চ করোনা আক্রান্ত প্রথম রোগীর মৃত্যু হয়। ২০২০ সালের ৮ মার্চ থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নতুন রোগী শনাক্তের হার ১৪ দশমিক শূন্য ৬৫ শতাংশ।
২০২০ সালের ১৮ মার্চ থেকে চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত ২৮ হাজার ৬২৭ জনের মধ্যে পুরুষ ১৮ হাজার ২৭৮ জন ও নারী ১০ হাজার ৩৪৯ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে ৯ হাজার ৫০৭ জন রোগী সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে সুস্থ রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ১২ হাজার ৫৭ জনে। রোগী সুুস্থতার হার ৮৬ দশমিক ১৬ শতাংশ।
২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত ৩৮ জনের মধ্যে ০ থেকে ১০ বছরের ১ জন, বিশোর্ধ্ব ১ জন, ত্রিশোর্ধ্ব ৩ জন, চল্লিশোর্ধ্ব ৪ জন, পঞ্চাশোর্ধ ৪ জন, ষাটোর্ধ্ব ৯ জন, সত্তরোর্ধ্ব ৭ জন, আশি বছরের বেশি বয়সী ৮ জন এবং ৯০ বছরের বেশি বয়সী ১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
৩৮ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১৬ জন, চট্টগ্রামের ৬ জন, রাজশাহীর ৫ জন, খুলনার ৫ জন, সিলেটের ৩ জন, রংপুরের ১ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ২ জনের মৃত্যু হয়।