শিরোনাম
ঢাকাসহ সারাদেশে ১০ কোটি মানুষকে সিঙ্গেল ডোজ টিকাদানের মাইলফলক স্পর্শের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ। ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। তারপর থেকে টিকাদানের ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত প্রথম বা সিঙ্গেল ডোজ নিয়েছেন নয় কোটি ৮৯ লাখ ৩২ হাজার ১০৭ জন।
স্বাস্থ্য ও রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী দুই একদিনের মধ্যে ১০ কোটি সিঙ্গেল ডোজ টিকাদানে মাইলফলক স্পর্শ করবে দেশ। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকার দেশের ৭০ শতাংশ জনগোষ্ঠী অর্থাৎ ১১ কোটি ৭০ লাখ মানুষকে (প্রথম, দ্বিতীয় ও বুস্টার ডোজ) টিকার আওতায় আনার লক্ষ্যে এ কার্যক্রমে গতিশীলতা বাড়িয়েছে।
রাজধানী, বিভাগ, জেলা, উপজেলা এমনকি তৃণমূল পর্যায়ের কমিউনিটি ক্লিনিকেও টিকাদান কার্যক্রম পৌঁছে গেছে। সে হিসেবে দু-একদিনের মধ্যে ১০ কোটি সিঙ্গেল ডোজ টিকাদানে রেকর্ড গড়বে বাংলাদেশ।
স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ঢাকাসহ সারাদেশে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ডোজের টিকাদান ১৬ কোটি ৫৫ লাখ ছয় হাজার ১৪-তে দাঁড়িয়েছে। প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন ৯ কোটি ৮৯ লাখ ৩২ হাজার ১০৭ জন, দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ছয় কোটি ৪৬ লাখ আট হাজার ৫৩৫ জন এবং বুস্টার ডোজ নিয়েছেন ১৯ লাখ ৬৫ হাজার ৩৭২ জন।
এদিকে দেশে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সর্বমোট টিকা নিয়েছেন ১০ লাখ ৬০ হাজার ৮৫৩ জন। এর মধ্যে প্রথম ডোজ দুই লাখ ৯৭ হাজার ৩৩২ জন (পুরুষ এক লাখ ৫১ হাজার ৩৭৯ ও নারী এক লাখ ৪৫ হাজার ৯৫৩), দ্বিতীয় ডোজ ছয় লাখ ৯৪ হাজার ৯৫৮ জন (পুরুষ তিন লাখ ২৯ হাজার ৩৯৭ ও নারী তিন লাখ ৬৫ হাজার ৫৬১) এবং বুস্টার ডোজ ৬৮ হাজার ৫৬৩ জন (পুরুষ ৪২ হাজার ৩১৮ ও নারী ২৬ হাজার ২৪৫) নিয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এ এস এম আলমগীর বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুসারে যে কোনো দেশের ৭০ শতাংশ জনগণকে টিকার আওতায় আনা সম্ভব হলে হার্ড ইমিউনিটি (জনস্বাস্থ্যগত রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা) তৈরি হয়। দেশে এখন পর্যন্ত প্রথম ডোজের টিকাদানের সংখ্যা ১০ কোটির মাইলফলক ছুঁই ছুঁই।
প্রথম, দ্বিতীয় ও বুস্টার ডোজ মিলিয়ে সাড়ে ১৬ কোটি ডোজ টিকা দেওয়া হলেও সার্বিকভাবে ১১ কোটি ৭০ লাখ মানুষকে তিন ডোজ টিকা দিতে হবে। তবেই হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হবে এবং করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুরোধ করা সহজ হবে বলে তিনি মনে করেন।
কোন টিকা কত সংখ্যক দেওয়া হলো
জানা গেছে, শুরুর দিকে শুধু ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা দেওয়া হতো। এরপর পর্যায়ক্রমে ফাইজার, মডার্না, সিনোফার্ম এবং সিনোভ্যাকের টিকা দেওয়া শুরু হয়।
এখন পর্যন্ত অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেওয়া হয়েছে তিন কোটি ৮৯ লাখ চার হাজার ৫৮৯টি। এর মধ্যে এক কোটি ৯৬ লাখ ১১ হাজার ১৭৮টি প্রথম ডোজ, এক কোটি চার লাখ ৩০ হাজার ৬৪১টি দ্বিতীয় ডোজ এবং আট লাখ ৫২ হাজার ৭৭০টি বুস্টার ডোজ।
ফাইজারের টিকা দেওয়া হয়েছে দুই কোটি ২৬ লাখ ৭৯ হাজার ৫৪৫টি। তন্মধ্যে এক কোটি ৭৪ লাখ ৩৩ হাজার ৯৯৩টি প্রথম ডোজ, ৪৯ লাখ ২৭ হাজার ৪৪টি দ্বিতীয় ডোজ এবং তিন লাখ ১৮ হাজার ৫০৮টি বুস্টার ডোজ।
সিনোফার্মের টিকা দেওয়া হয়েছে নয় কোটি ৭৩ লাখ ৯৪ হাজার ৩৭৪টি। এর মধ্যে পাঁচ কোটি ১৬ লাখ ১৫ হাজার ৭৪২টি প্রথম ডোজ, চার কোটি ৫৭ লাখ ৭৮ হাজার ৬২৮টি দ্বিতীয় ডোজ এবং চার হাজারটি বুস্টার ডোজ।
মডার্নার টিকা দেওয়া হয়েছে ৬৬ লাখ ৬৯ হাজার ৬২০টি। তন্মধ্যে ৩২ লাখ চার হাজার ৭১১টি প্রথম ডোজ, ২৬ লাখ ৭০ হাজার ৮১৯টি দ্বিতীয় ডোজ এবং সাত লাখ ৯৪ হাজার ৯০টি বুস্টার ডোজ।
সিনোভ্যাকের টিকা দেওয়া হয়েছে ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৮৮৬টি। এর মধ্যে ৭০ লাখ ৬৬ হাজার ৪৮৩টি প্রথম ডোজ এবং আট লাখ এক হাজার ৪০৩টি ছিল দ্বিতীয় ডোজ।