শিরোনাম
জিডিপির শতাংশ হিসাবে বাংলাদেশে মাথাপিছু কারেন্ট হেলথ এক্সপেন্ডিচার বা বর্তমান স্বাস্থ্য ব্যয়ের মাত্রা ২ দশমিক ৫ শতাংশ, যা দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বনিম্ন। স্বাস্থ্য খাতে সরকারি ব্যয় কম হওয়ায় স্বাস্থ্য ব্যয়ের বড় অংশ জনগণকে বহন করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় জনগণের ওপর থেকে স্বাস্থ্য ব্যয়ের চাপ কমাতে এ খাতে পরিকল্পিতভাবে বাজেট বরাদ্দ বাড়ানো দরকার।
সোমবার (১৬ জানুয়ারি) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ, ব্র্যাক জেমস পি গ্র্যান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় এবং উন্নয়ন সমন্বয়ের যৌথ উদ্যোগে স্বাস্থ্য বাজেট বিষয়ক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ অভিমত দেন।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. মামুন-আল-রশীদ এবং সম্মানীত অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম. আবু ইউসুফ, বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. এস. এম. জুলফিকার আলী এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেছা বেগম।
গ্রামাঞ্চলে যারা প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নেন তাদের ওপর স্বাস্থ্য ব্যয়ের চাপ কমাতে স্বাস্থ্য বাজেট বরাদ্দের ধারায় কী ধরনের পরিবর্তন দরকার এ বিষয়ে গবেষণার ভিত্তিতে মূল নিবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও উন্নয়ন সমন্বয়ের সভাপতি অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান।
ড. আতিউর বলেন, বর্তমানে জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে ৫ শতাংশের কিছু বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর সঙ্গে আরও ২ থেকে ৩ শতাংশ যুক্ত করে সেই বাড়তি বরাদ্দ যদি গ্রামাঞ্চলে বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহের বাজেট এবং সেবাকেন্দ্রে শূন্য পদে লোক নিয়োগ দিয়ে তাদের মজুরি ও বেতন বাবদ খরচ করা যায় তাহলে জনগণের ওপর স্বাস্থ্য ব্যয়ের চাপ উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমে আসবে। এতে মোট স্বাস্থ্য ব্যয়ে জনগণের অংশ ৬৯ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫১ শতাংশে আনা সম্ভব।
অধ্যাপক এম. আবু ইউসুফ বলেন, ঢাকাসহ কয়েকটি বড় শহরে যে মানের স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া যায় তা দেশের অন্যান্য অঞ্চলে পাওয়া গেলে জনগণের ওপর স্বাস্থ্য ব্যয়ের চাপ অনেকাংশে কমানো সম্ভব। এজন্য বিকেন্দ্রীকরণ প্রক্রিয়া গতিশীল করা দরকার।
ড. জুলফিকার আলী বলেন, স্বাস্থ্য ব্যয়ের অতিরিক্ত চাপের কারণে অনেক সময় তুলনামূলক নিম্নআয়ের পরিবারগুলো অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। স্বাস্থ্যসেবার ব্যয় আরও কমানো গেলে দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যেতে পারবে।
কাজী জেবুন্নেছা বলেন, জনগণের জন্য স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নের যে রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি সরকারের রয়েছে তা বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের মধ্যে সুসমন্বয় নিশ্চিত করার পাশাপাশি মনিটরিং জোরদার করার বিকল্প নেই।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মামুন-আল-রশীদ বলেন, বরাদ্দকৃত বাজেট ব্যয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর দক্ষতা ও সমন্বয়ের ঘাটতি স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রধানতম প্রতিবন্ধক। তাই বরাদ্দ বাস্তবায়নের দক্ষতা বাড়ানোর দিকেও নজর দিতে হবে।