কীভাবে ঘরে বসে নিয়ন্ত্রণে রাখবেন ক্রিয়েটিনিন?

ফানাম নিউজ
  ২৩ মে ২০২২, ১০:৪৬

শরীরের রাসায়নিক বর্জ্য হলো ক্রিয়েটিনিন। এটি ক্রিয়েটাইন নামের একটি রাসায়নিকের আকারে শরীরে জমা হয়। প্রথমে রক্তনালীতে ছড়িয়ে পড়ে ও পরে কিডনিতে ফিল্টারড হয়ে মূত্রের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায় এটি। এই ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বাড়লেই দেখা দেয় নানা রোগ। উল্টোপাল্টা আচরণ শুরু করে কিডনি।

ক্রিয়েটিনিনের স্বাভাবিক মাত্রা

প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ: ০.৬ থেকে ১.২ মিলিগ্রাম/পার ডেসিলিটার

প্রাপ্তবয়স্ক নারী: ০.৫ থেকে ১.১ মিলিগ্রাম/পার ডেসিলিটার

টিনএজার: ০.৫ থেকে ১ মিলিগ্রাম/পার ডেসিলিটার

শিশু: ০.৩ থেকে ০.৭ মিলিগ্রাম/পার ডেসিলিটার

যাদের পরীক্ষা জরুরি

চেকআপ জরুরি হয়ে পড়ে সাধারণত বয়স ৪০ বছর ছাড়ালে। তবে এর বাইরেও অনেকের উচিৎ নিয়মিত বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া ও ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা করানো। এ তালিকায় যারা আছেন-

১। ডায়াবেটিস আক্রান্ত

২। উচ্চ রক্তচাপের রোগী

৩। কম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তি

৪। যাদের পরিবারে কিডনি রোগের ইতিহাস আছে।

৫। অটোইমিউন ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তি।

৬। যাদের ঘন ঘন ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ হয়।

প্রোটিনে লাগাম দিন

প্রোটিন শরীরের জন্য বেশ দরকারি। তবে সীমা ছাড়ালেই এটি ক্রিয়েটিনিন বাড়াবে। তবে এক্ষেত্রে দোষটা যায় প্রাণীজ আমিষের ঘাড়েই। বিশেষ করে রেড মিটই প্রধান আসামি। আর তাই চাহিদা পূরণে দুগ্ধজাত খাবার ও উদ্ভিজ আমিষে জোর দিতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

আঁশজাতীয় খাবার চাই বেশি

প্রোটিনের উল্টো কাজটা করবে ফাইবার তথা আঁশজাতীয় খাবার। হজম প্রক্রিয়ায় গতি এনে বাড়তি ক্রিয়েটিনিন শরীর থেকে বের করে দিতে পারে এ জাতীয় খাবার। অনেক গবেষণাতেই দেখা গেছে, দীর্ঘসময় ফাইবার জাতীয় খাবার গ্রহণে শরীরে কম মাত্রায় ক্রিয়েটিনিন দেখা গেছে। ফলমূল, শাকসবজি ও দানাদার খাবারেই মিলবে আঁশ।

পানির ঘাটতি নয়

শরীরে পানির চাহিদা কিন্তু দুরকম। একটা চাহিদা সচরাচর বোঝা যায় না, আরেকটা হলো তৃষ্ণা। তৃষ্ণার অপেক্ষায় থাকলে চলবে না। মেপে মেপে ২-৩ লিটার নিশ্চিত করতেই হবে। তা না হলে গোপনে তৈরি হবে ডিহাইড্রেশন। পরিণতিতে বেড়ে যাবে ক্রিয়েটিনিন। দিনে ৮-১০ গ্লাসের হিসাবটা মেনে চললেই যথেষ্ট।

লবণ কমান

অতিরিক্ত সোডিয়ামের ক্ষতি অনেক। রক্তচাপ বাড়ায় এটি। এর সঙ্গে সম্পর্ক আছে কিডনির অসুখেরও। একেবারেই এড়িয়ে চলুন বাইরের প্যাকেট করা কিংবা প্রক্রিয়াজাত খাবার। কারণ মাত্রাতিরিক্ত লবণ মেশানো থাকে ওসবে। লবণ খাওয়ার অভ্যাস বাদ দিয়েও চাইলে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন ক্রিয়েটিনিন। বিশেষজ্ঞদের মতে, সারা দিনে লবণ গ্রহণের পরিমাণ ২ টেবিল চামচের বেশি যেন না হয়। আর এর মধ্যে বিভিন্ন খাবারে থাকা লুকানো লবণও কিন্তু আছে। অন্যদিকে লবণ বেশি খেলে কিন্তু অকালে অন্ধত্বের শিকারও হতে পারেন।

ধূমপান-অ্যালকোহল বাদ, ভারী ব্যায়ামও

আরও একগাদা ক্ষতির ভেতর ক্রিয়েটিনিন বাড়াতেও ধূমপান ও অ্যালকোহলের জুড়ি নেই। পাশাপাশি ভারী ব্যায়ামও করতে নিষেধ করেছেন গবেষকরা। বিশেষ করে ওয়েট লিফটিং, সার্কিট ট্রেনিং-এর মতো ব্যায়ামগুলোও নাকি শরীরে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। আর তাই কিডনি সচেতনদের খানিকটা হালকা গোছের ব্যায়ামে নজর দিতে বলা হচ্ছে।

তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

স্বাস্থ্য এর পাঠক প্রিয়