শিরোনাম
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) পুলিশ-শিক্ষার্থী সংঘর্ষে সবচেয়ে বেশি আহত হয়েছিলেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী সজল কুন্ডু।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে দুই সপ্তাহের চিকিৎসা শেষে বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সিলেটে ফেরেন তিনি। তবে চিকিৎসা শেষে এখনও তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ৭৫টি স্প্লিন্টার রয়ে গেছে। অস্ত্রোপচারে চিকিৎসকরা মাত্র ৪টি প্লিন্টার অপসারণ করতে পেরেছেন।
গত ১৬ জানুয়ারি সংঘর্ষে পুলিশের ছোড়া সাউন্ড গ্রেনেড ও শটগানে সজল কুন্ডুর শরীরে বিভিন্ন স্থানে ৭৯টি স্প্লিন্টার বিদ্ধ হয়।
শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আর্তনাদ প্রকাশ করেছেন তিনি।
সজল কুন্ডু আক্ষেপ করে বলেন, ইতোমধ্যে আমার হাতে একটি অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে। প্রাণঘাতী সংক্রমণের আশঙ্কা থাকায় চিকিৎসকেরা আপাতত অস্ত্রোপচারের ঝুঁকি নিচ্ছেন না। আমাকে হয়তো এসব স্প্লিন্টার শরীরে নিয়েই বাকি জীবন কাটাতে হবে। যা থেকে ভবিষ্যতে নতুন নতুন শারীরিক জটিলতা তৈরি হওয়ার শঙ্কাও অমূলক নয়।
তিনি বলেন, আমার বাবা মৃত, মা অসুস্থ। অসচ্ছল পরিবারের জন্য ঋণ করে আমি সামান্য ব্যবসা শুরু করেছিলাম, পড়াশোনা শেষ করে চাকরির পড়ালেখা করতাম। স্বপ্ন ছিল আমার উপার্জনে পরিবারে সুদিন আসবে। একটি দিনের ব্যবধানে যে আমার স্বপ্নগুলো এলোমেলো হয়ে গেল, সারা শরীরে অসংখ্য আঘাত ও স্প্লিন্টার নিয়ে অসহ্য শারীরিক যন্ত্রণায় সামনের বিপদসংকুল দিনগুলো কীভাবে কাটবে তার আশঙ্কায় এখন যে আমাকে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে, তার দায় কে নেবে?
শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাসে হতাশা প্রকাশ করে সজল বলেন, শিক্ষামন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন আমাদের সমস্ত দাবির ব্যাপারে অচিরেই যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কিন্তু তার আশ্বাসের এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত দুটি মামলা প্রত্যাহার বা আর্থিক লেনদেনের একাউন্টগুলো খুলে দেওয়ার ব্যাপারে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ আমরা দেখতে পাইনি।
ভবিষ্যতের চিকিৎসা খরচ বহন ও এককালীন আর্থিক ক্ষতিপূরণের ব্যাপারে কোনো স্পষ্ট আশ্বাস পাননি উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় আমার শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি প্রদান, আমার ভবিষ্যতের সমস্ত চিকিৎসা খরচ সরকারের পক্ষ থেকে বহন ও আমাকে এককালীন আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি ছিল। আমাকে চাকরি প্রদানের ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী মৌখিক আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত আমার ভবিষ্যতের চিকিৎসা খরচ বহন ও এককালীন আর্থিক ক্ষতিপূরণের ব্যাপারে কোনো স্পষ্ট আশ্বাস পাইনি।
বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তিনি বলেন, উপাচার্য নির্লজ্জভাবে মিথ্যাচার করেছেন, তা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি আমাকেও ক্ষুব্ধ করেছে। আমার কাছে সত্য হচ্ছে আমার শরীরে এখনো বিঁধে থাকা স্প্লিন্টারগুলো। আমি একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে উপাচার্যের মিথ্যাচার ও মনগড়া বক্তব্যের প্রতিবাদ করছি।
এছাড়া শিক্ষার্থীদের দাবি দ্রুত মেনে নিতে আচার্যের (রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ) নিকট আহ্বান জানান তিনি।
সূত্র: জাগো নিউজ