শিরোনাম
দুর্নীতির দায়ে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. ইউনুস শরীফের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা না নেওয়ায় পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) উপাচার্যকে (ভিসি) হাইকোর্ট কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ২১ নভেম্বর এ আদেশ দিয়ে নোটিশপ্রাপ্তির চার সপ্তাহের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
পটুয়াখালীর মতিন এন্টারপ্রাইজ নামের একটির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক গাজী মতিউর রহমানের দায়েরকৃত একটি রিট পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত এ আদেশ দেন। এ সংক্রান্ত নথিপত্র হাতে পাওয়ার বিষয়টি মতিউর রহমান মঙ্গলবার জানান।
মতিউর রহমান জানান, ইউনুস শরীফ ২০১৫-১৬ অর্থবছরে পবিপ্রবির টিএসসি ভবনের সম্প্রসারণ কাজের জন্য দরপত্র আহ্বান করলে ৯ দরপত্র জমা পড়ে। এসব দরপত্রের মধ্যে অনিক ট্রেডিং করপোরেশন তিন কোটি দুই হাজার ৪৯৫ টাকার দরপত্র দিয়ে সর্বনিম্ন দরদাতা হন। তবে স্টারলাইট সার্ভিসেস লিমিটেড নামে অপর একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তিন কোটি ১৪ লাখ ৯৪ হাজার ৮৭৩ টাকা দর দিয়ে দরপত্র দাখিল করেন।
তিনি আরও বলেন, ইউনুস শরীফ দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সর্বনিম্ন দরদাতা অনিক ট্রেডিং করপোরেশনকে বাদ দিয়ে স্টার লাইট সার্ভিসেস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী শফিকুল হক তালুকদারের সঙ্গে যোগসাজশে তাকে সর্বনিম্ন ঠিকাদার হিসেবে মূল্যায়ন কমিটির সভায় উপস্থাপন করে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নেন এবং তাকে কার্যাদেশ দেন। এতে পবিপ্রবির ১৪ লাখ ৯২ হাজার, ৩৭৭ টাকার আর্থিক ক্ষতিসাধন হয়।
সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিষয়টি তদন্ত করে এ ঘটনার সত্যতা পায়। তদন্তাকালে ইউনুস শরীফ ওই ১৪ লাখ ৯২ হাজার, ৩৭৭ টাকা সরকারি কোষাগারে জমাও দেন। আত্মসাৎকৃত টাকা স্বেচ্ছায় ফেরত দেওয়ায় তদন্তশেষে দুদকের অভিযোগপত্রে ইউনুস শরীফের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পবিপ্রবি ভিসির কাছে সুপারিশ করা হয় এবং দুদক স্টার লাইট সার্ভিসেস লিমিটেডে নামে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করে ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর অভিযোগপত্রটি আদালতে দাখিল করেন।
কিন্তু দীর্ঘদিনেও পবিপ্রবি কর্তৃপক্ষ দুদকের সুপারিশ মতে, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ইউনুস শরীফের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা না নেওয়ায় ঠিকাদার গাজী মতিউর রহমান চলতি বছরের ১৪ নভেম্বর পবিপ্রবির রেজিস্ট্রারের কাছে একটি নোটিশ পাঠান। এতেও কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তিনি উচ্চ আদালতে রিট করেন।
এ ব্যাপারে পবিপ্রবির রেজিস্ট্রার মো. কামরুল ইসলাম জানান, উচ্চ আদালতের নোটিশ পেয়েছি এবং চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ফজলুল হককে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ১৫ দিনের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া বিষয়টিতে প্যানেল আইনজীবীদের মতামতও চাওয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন ও প্যানেল আইনজীবীদের মতামতের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতির্নিধারণী ফোরাম ‘রিজেন্ট বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সূত্র: যুগান্তর