শিরোনাম
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে স্নাতক শেষ করেছেন রাইসুল ইসলাম সাগর। উচ্চশিক্ষা নিতে যেতে চান অস্ট্রেলিয়া। শুরু করেছেন প্রক্রিয়াও। এখন প্রয়োজন তার মূল সনদ, যা সমাবর্তন ছাড়া কোনোভাবেই দিতে চাইছে না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে দৌড়ঝাঁপ করেও লাভ হয়নি সাগরের। বাধ্য হয়ে সমাবর্তনের অপেক্ষায় তিনি।
সাগরের মতো হাসনাত আবদুল হাইও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ করেছেন। একাধিক চাকরির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও মৌখিক পরীক্ষায় মূল সনদ দেখাতে না পারায় বিপাকে পড়েছেন তিনি। হাসনাত আবদুল হাই বলেন, কবে সমাবর্তন হবে, সেটার জন্য তো চাকরির ইন্টারভিউয়ের তারিখ আটকে থাকে না। এ সমস্যার সমাধান হওয়া জরুরি।
শুধু সাগর ও হাসনাতই নন, দেশের বেশিরভাগ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরই গ্র্যাজুয়েশন শেষে এমন বিড়ম্বনায় পড়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, সমাবর্তন ছাড়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সনদ দিতে আইনি কোনো বাধা নেই। সমাবর্তনের দোহাই দিয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের সনদ আটকে না রাখতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে দেওয়া পোস্টে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক/স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষা সনদ দিতে আইনগত কোনো বাধা নেই। সুতরাং সমাবর্তন না হওয়া পর্যন্ত সনদ আটকে না রাখতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মালিকানা দ্বন্দ্ব, নিয়মিত উপাচার্য না থাকা, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিধি বিধান না মানাসহ বিভিন্ন কারণে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত সমাবর্তনের অনুমোদন দেয় না সরকার। এ অজুহাতে হাজার হাজার গ্র্যাজুয়েটের সনদ আটকে রাখে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।
সমাবর্তন ছাড়া মূল সনদ দিতে না চাওয়ার অভিযোগ থাকা কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তারা এ নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কথা বলতে রাজি হননি।
রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকায় অবস্থিত একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘সমাবর্তন ছাড়া গ্র্যাজুয়েটদের মূল সনদ না দিতে কর্তৃপক্ষের মৌখিক নির্দেশনা রয়েছে। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে ছেড়ে দেওয়া হয়। অনেক সময় সমাবর্তনের তারিখ নিতেও সরকারের সঙ্গে দর কষাকষি হয়। সেসময় এটিকে (শিক্ষার্থীদের সনদ আটকে আছে) কারণ দেখিয়ে সুবিধা (দ্রুত তারিখ পাওয়া) নেওয়া যায়।’