শিরোনাম
পাঠ্যবইয়ে ইতিহাস বিকৃতির মহোৎসব থেকে বেরিয়ে এসে নতুন প্রজন্মকে সত্য শেখানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
তিনি বলেন, ‘পাঠ্যবইয়ে অতীতে যে ইতিহাস বিকৃতির মহোৎসব চলেছে, তা থেকে আমরা বের হয়ে এসেছি। বিকৃত ইতহাসের সেই অধ্যায় শেষ। পাঠ্যবইয়ে এখন আমরা সত্য ইতিহাস তুলে ধরবো। তরুণ প্রজন্মকে সত্য ইতিহাস জেনে সামনে এগোতে হবে। নতুন পথ রচনা করতে হবে।’
বুধবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গীভূত ‘বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউট’ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
রাজনীতিতে শিষ্টাচার শিক্ষা জরুরি উল্লেখ করে ডা. দীপু মনি বলেন, ‘রাজনীতিতে শিষ্টাচারের প্রয়োজন রয়েছে। যে রাজনীতি আমাদের দেশপ্রেম শিক্ষা দেয়। সব ক্ষেত্রেই শিষ্টাচারের প্রয়োজন। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত রাজনীতির শিষ্টাচার বোঝে না। তারা অনন্তপক্ষে ২১ বার আমাদের জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছে। ৭৬ কেজি বোমা, ৪৮ কেজি বোমা, গ্রেনেড হামলা, সরাসরি গুলি কিছুই বাদ দেওয়া হয়নি। আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে- কোনটা রাজনীতি আর কোনটা অপরাজনীতি। এসব থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী দিনে পথ চলতে হবে।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘গণতন্ত্র আর মানবাধিকারের অনেক সবক আমরা বিভিন্ন জায়গায় থেকে শুনি। এ দেশের মানুষ মানবাধিকার আর গণতন্ত্রের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। যারা আমাদের সবক দিতে আসেন তাদের কারোরই এতো ত্যাগের ইতিহাস নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা আমাদের মানবাধিকারের কথা বলে তাদের কণ্ঠ ১৯৭১ সালে কোথায় ছিল? ওই সময় তারা তো মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের পক্ষে ছিল। পঁচাত্তরে তারা তো সরাসরি যুক্ত ছিল মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে। সেদিন যারা নিহত হয়েছেন তাদের মানবাধিকার ছিল না? বিচার চাওয়ার অধিকার ছিল না? ২০০৪ সালের ২১ আগস্টে ১৯৭৫ সালের অসমাপ্ত কাজ করার জন্য সেই ঘাতকরা শেখ হাসিনাকে শুধু হত্যা করা নয়, সমগ্র আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দকে হত্যার জন্য গ্রেনেড হামলা করেছিল। সেদিন আইভি রহমানসহ ২২ জন নিহত হন। তাদের মানবাধিকার ছিল না?’
বিএনপি-জামায়াতের দুঃশাসনের ইতিহাস তুলে ধরে ডা. দীপু মনি বলেন, ‘২০০১ সালের নির্বাচনের পর থেকে বিএনপি-জামায়াত শাসনামলে মাসের পর মাস এ বাংলাদেশে হত্যা ধর্ষণের যে ভয়াবহতা আমরা দেখেছি, তাদের কোনো মানবাধিকার ছিল না? মানবাধিকার শুধু আছে সেইসব ঘৃণ্য যুদ্ধাপরাধ যারা করেছে, তাদের। কারণ তাদের মানবাধিকার রক্ষার জন্য সেই সব দেশের কর্তাব্যক্তিরা বঙ্গবন্ধুকন্যাকে বারবার ফোন করেছেন, চাপ প্রয়োগ করেছেন।’
আলোচনা সভায় আলোচক ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দ মজুমদার। এতে সভাপত্বি করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউটের ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর ড. মো. মাহবুবর রহমান।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে ঘাতকের নির্মম বুলেটে নিহত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।