শিরোনাম
২০২২ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ঢাকা বোর্ডে ৬ হাজার ৪৫৮ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৮২৭ জন শিক্ষার্থীকে মেধাবৃত্তি এবং ৫ হাজার ৬৩১ জনকে সাধারণ বৃত্তি দেওয়া হবে। বৃত্তির গেজেটে বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের ব্যাংকের হিসাব নম্বর ভর্তিকৃত প্রতিষ্ঠানে ৭ দিনের মধ্যে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সচিব প্রফেসর আজাদ হোসেন চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিসহ বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকার ২০২২ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে নিম্নে বর্ণিত শর্তে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের তালিকাভুক্ত শিক্ষার্থীদের মেধাবৃত্তি ও সাধারণ বৃত্তি প্রদান করা হলো। সরকারি নিয়ম ও নীতিমালা অনুযায়ী এ বৃত্তির তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। এ বৃত্তি প্রদানের সময় নিম্নে বর্ণিত নিয়ম ও নীতিমালা সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবশ্যই মেনে চলতে হবে।
মানতে হবে যেসব শর্ত
বৃত্তির গেজেটে বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হয়েছে সে প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অধ্যক্ষ বা প্রধান শিক্ষকের প্রত্যয়নপত্র প্রদান সাপেক্ষে ভর্তিকৃত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিধি মোতাবেক বৃত্তির অর্থ উত্তোলন করতে হবে।
সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের সদাচরণ, বিদ্যালয়ে নিয়মিত উপস্থিতি ও সন্তোষজনক পাঠোন্নতি সাপেক্ষে বৃত্তি প্রদান করা হবে।
কোনো শিক্ষার্থী উচ্চ শ্রেণিতে অধ্যয়নের জন্য অনুমোদিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি না হলে বৃত্তি পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবে না।
এ বৃত্তিগুলোর সংখ্যা, হার ও মেয়াদ আপাত নির্ধারিত। প্রয়োজনবোধে সরকার কোনো কারণ না দেখিয়েই তা পরিবর্তন বা বাতিল করতে পারবে।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মঞ্জুরিপ্রাপ্ত (অনুমোদন) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে বৃত্তি কার্যকর হবে। মঞ্জুরিপ্রাপ্ত (অনুমোদন) নয় এমন কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ বৃত্তি কোনোক্রমেই কার্যকর হবে না। কারণ সরকারি আইন অনুযায়ী অননুমোদিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী বৃত্তি পাওয়ার যোগ্য নয় এবং অননুমোদিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নকাল পাঠবিরতি (ব্রেক অব স্টাডি) হিসেবে গণ্য হবে।
বৃত্তিপ্রাপ্ত সব শিক্ষার্থী বিনাবেতনে অধ্যয়নের সুযোগ লাভ করবে। সরকার অনুমোদিত কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীর নিকট থেকে মাসিক বেতন দাবি করতে পারবে না। তাদের নিকট মাসিক বেতন দাবি করলে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মেধাবৃত্তিপ্রাপ্ত প্রত্যেক শিক্ষার্থী মাসিক ৬০০ টাকা ও সাধারণ বৃত্তিপ্রাপ্ত প্রত্যেক শিক্ষার্থী মাসিক ৩৫০ টাকা হারে বৃত্তি পাবে।
বইপত্র ও যন্ত্রপাতি ক্রয় করার জন্য অনুদান হিসেবে মেধাবৃত্তিপ্রাপ্ত প্রত্যেক শিক্ষার্থী প্রতি বছর ৯০০ টাকা ও সাধারণ বৃত্তিপ্রাপ্ত প্রত্যেক শিক্ষার্থী প্রতি বছর ৪৫০ টাকা এককালীন অর্থ সাহায্য পাবে।
মেধাবৃত্তি ও সাধারণবৃত্তি সরকারি নির্দেশনামতে ছাত্র ও ছাত্রী উভয়ের মধ্যে ৫০ শতাংশ বণ্টনকৃত। এ বৃত্তিগুলোর মেয়াদ ২০২২ সালের জুলাই মাস হতে ২০২৪ সালের জুন মাস পর্যন্ত ২ বছর।
সব বৃত্তিই কেবল নিয়মিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মেধানুসারে এবং নীতিমালার অন্যান্য শর্ত মোতাবেক প্রদান করা হবে। কোনোভাবেই অনিয়মিত শিক্ষার্থী বৃত্তি পাবে না।
সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
এ বিজ্ঞপ্তিতে বৃত্তির তালিকাভুক্ত শিক্ষার্থীগণ কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অথবা কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত অন্য কোনো বৃত্তি গ্রহণ করলে বোর্ড কর্তৃক প্রদত্ত বৃত্তি বাতিল বলে গণ্য হবে। সরকারি নির্দেশ অনুসারে কোনো শিক্ষার্থী একসঙ্গে একাধিক বৃত্তি ভোগ করতে পারবে না।
সরকারি আদেশ মোতাবেক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নিয়মিত শিক্ষার্থীদের মধ্য হতে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে মেধাবৃত্তি বণ্টন হবে। বৃত্তি পাওয়ার যোগ্যতা সর্বনিম্ন জিপিএ ৩.০০। বৃত্তির তালিকা প্রস্তুতের ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো পর্যায়ক্রমে অনুসরণ করা হয়েছে।
বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হতে ছাড়পত্র নিয়ে অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হলে তৎক্ষণাৎ সংশ্লিষ্ট দুটি প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ বৃত্তি বদলির ব্যাপারে নিম্নবর্ণিত তথ্যাবলিসহ অবশ্যই বোর্ডকে জানাবেন। অন্যথায় প্রয়োজনীয় অনুমতির অভাবে সংশ্লিষ্ট বৃত্তির টাকা সময়মত তোলা না গেলে সেজন্য উভয় প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণই দায়ী থাকবেন।
কোনো কারণে অর্থবছরের নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলে মহাপরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের অনুমোদনক্রমে সর্বোচ্চ ১ বছরের তামাদি (বকেয়া) বৃত্তি প্রদান করা যাবে।
এ বিজ্ঞপ্তিতে অনিচ্ছাকৃত কোনো ভুল ত্রুটি পরিলক্ষিত হলে তা সংশোধন ও পরিবর্তন করার ক্ষমতা বোর্ডের থাকবে। প্রয়োজনবোধে কোনো রকম কারণ না দেখিয়ে বৃত্তি বাতিল করার ক্ষমতা বোর্ডের থাকবে। বৃত্তির টাকা প্রদানের পূর্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ এ মর্মে বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে লিখিত প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করবেন যে, তারা বোর্ডের বৃত্তি সংক্রান্ত নিয়মকানুন মেনে চলবে। অন্যথায় বৃত্তির টাকা ফেরত দিতে বাধ্য থাকবে।
বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এ বছর নয়টি সাধারণ বোর্ডে মোট ৩ হাজার শিক্ষার্থীকে মেধাবৃত্তি এবং ২২ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থীকে নির্ধারিত কোটা অনুযায়ী সাধারণ বৃত্তি দেওয়া হবে। এ বছর বোর্ডের কোটা ও শিক্ষার্থী অনুপাতে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মেধা এবং সাধারণ বৃত্তি পাবে ঢাকা বোর্ডের শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে মাত্র ৯৭ জন মেধাবৃত্তি ও ১ হাজার ৪৮৮ জন সাধারণ বৃত্তি নিয়ে সবচেয়ে কম সংখ্যক বৃত্তি পাচ্ছে সিলেট বোর্ডের শিক্ষার্থীর।