শিরোনাম
ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস মানবাধিকারের দোহাই দিয়ে বিশেষ রাজনৈতিক পক্ষের স্বার্থসিদ্ধির সহায়ক ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এমন ‘পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ’ উদ্বেগজনক বলেও জানিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠের শিক্ষকদের নেতৃত্ব দেওয়া সংগঠনটি।
বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়ার সই করা এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ জানানো হয়।
এতে বলা হয়, সংবাদপত্রের মাধ্যমে জানা যায় যে, ১৪ ডিসেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত বিএনপি সমর্থিত ‘মায়ের ডাক’ নামে একটি সংগঠনের আহ্বানে ২০১৩ সালে একজন বিশেষ ব্যক্তির নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ শুনতে ঢাকা শহরের একটি বাড়িতে উপস্থিত হন। একই সময়ে খবর পেয়ে ‘মায়ের কান্না’ নামে আরেকটি সংগঠনের কর্মীরা তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয় তাকে অবহিত করার জন্য একটি স্মারকলিপি দেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে এ বিষয়ে তিনি (মার্কিন রাষ্ট্রদূত) কোনো কর্ণপাত করেননি।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, মায়ের কান্না সংগঠনটি সামরিক স্বৈরাচার জেনারেল জিয়াউর রহমানের ১৯৭৭-৭৮ সালে বিচারের নামে হত্যা ও গুমের যে ঘটনা ঘটেছে, তাতে যারা স্বজন হারিয়েছেন তাদের মানবাধিকার রক্ষার আবেদন নিয়ে রাষ্ট্রদূতের শরণাপন্ন হয়েছিলেন। তাদের কথা শুনতে অপারগতা মার্কিন রাষ্ট্রদূতের দ্বৈত আচরণের বহিঃপ্রকাশ, যা দুঃখজনক।
ঢাবি শিক্ষক সমিতির বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘সম্প্রতি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয়ে কয়েকটি দেশের কূটনীতিকরা যেভাবে বক্তব্য রাখছেন ও অংশগ্রহণ করছেন, তা দৃষ্টিকটু ও কূটনৈতিক শিষ্টাচারের লঙ্ঘন। পরিতাপের বিষয় হলো যে, পশ্চিম দেশগুলো যেমন- যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও যুক্তরাজ্য আমাদের বিভিন্ন সময়ে মানবাধিকারের কথা বলে। অথচ তারাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের স্বঘোষিত খুনি ও একাত্তরের বুদ্ধিজীবী হত্যাকারীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে।’
‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি যেকোনো ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সর্বদা সোচ্চার। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথিতযশা শিক্ষকসহ দেশের শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিজীবীদের পরিকল্পিতভাবে হত্যার ঘটনা, একাত্তরের গণহত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং বিভিন্ন সামরিক শাসনামলে হত্যা ও গুমের যে ঘটনা ঘটেছিল, আমরা সেসব বিষয়েও মার্কিন রাষ্ট্রদূতসহ যারা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার রক্ষার দাবি করেন, তাদের সুস্পষ্ট বক্তব্য দাবি করছি।’
একইসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি বিদেশি কূটনীতিকদের শিষ্টাচার বজায় রেখে পেশাগত দায়িত্বে পালনে ও সমাজের সব শ্রেণি-গোষ্ঠীর মানুষের মানবাধিকার রক্ষায় সরকারকে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে।