শিরোনাম
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন শেষ হলেও থামছে না ক্ষোভ-অসন্তোষের ঝড়। ভোটার ও ভক্তদের অনেকে মেনে নিতে পারছেন না ১৩ ভোটের ব্যবধানে নিপুণের বেদনাবিধুর পরাজয়। যদিও নায়িকা নিপুণ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, অর্থের কাছে হেরে গেছেন তিনি।
নায়ক রিয়াজের হেরে যাওয়াটাও অনেকের কাছে অস্বাভাবিক মনে হয়েছে। এর মধ্যে আগুনে ঘি ঢালার অবস্থা হয়েছে প্রযোজক ও পরিবেশক এবং পরিচালক সমিতিসহ ১৭ সংগঠনের আলটিমেটামকে কেন্দ্র করে। শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এফডিসির এমডি নুজহাত ইয়াসমিনকে পদত্যাগ করতে হবে। শিল্পী সমিতির নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসাবে দায়িত্ব পালনকারী পীরজাদা শহীদুল হারুনকেও আজীবন অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন তারা।
এই যখন অবস্থা, তখন স্মরণকালের প্রচার-প্রচারণা আর দেশজুড়ে আগ্রহের এ নির্বাচন একদিন আগে শেষ হলেও অনেক প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে অনেকের মধ্যে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসুবক, ইউটিউবসহ গণমাধ্যমের প্রধান খবরের অনেক জায়গা দখল করে নিয়েছে শিল্পী সমিতির নির্বাচন-পরবর্তী আলোচনা, সমালোচনা ও পর্যালোচনা।
সূত্র জানায়, নির্বাচন উপলক্ষ্যে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ এবং নিরাপত্তাজনিত কারণে ভোটগ্রহণের দিন বিএফডিসির (বাংলাদেশ ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন) অভ্যন্তরে শিল্পী সমিতির ভোটার, নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী, নিবন্ধিত গণমাধ্যমকর্মী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যতীত অন্যদের প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে এফডিসি প্রশাসন এবং নির্বাচন কমিশন।
এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়ে ২৮ জানুয়ারি সকাল থেকে শুরু করে ভোটের ফলাফল প্রকাশের আগ পর্যন্ত চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট ১৭ সংগঠনের অন্যরাও বিএফডিসিতে ঢুকতে পারেননি। বিশেষ করে ভোট গ্রহণের দিন মাদার অর্গানাইজেশনখ্যাত বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতি এবং পরিচালক সমিতির সদস্যরা বিএফডিসির গেটে উপস্থিত হয়ে ভেতরে প্রবেশে বাধা পেয়ে ফেরত যান। এ নিয়ে বেশ তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ওইদিনই এফডিসির বাইরে তারা প্রতিবাদ জানান। এরপর শনিবার এফডিসিতে সংবাদ সম্মেলন করে ১৭ সংগঠনের পক্ষে কড়া বার্তা দেন পরিচালক সমিতির সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান।
তিনি লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়ে আজ থেকে মানববন্ধন চলবে বলেও জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা চলচ্চিত্রের মানুষ। চলচ্চিত্রের সবাই মিলেমিশে এখানে থাকি। সব নির্বাচন হয় উৎসব-আমেজে। কিন্তু কয়েক বছর ধরে শিল্পী সমিতির নির্বাচনে বাড়াবাড়ি রকমের কিছু বিষয় দেখা গেছে। যার চূড়ান্ত সীমা লঙ্ঘন হয়েছে সর্বশেষ নির্বাচনে। আমাদের ১৭ সংগঠনের সদস্যদের এফডিসিতে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রবেশের আদেশ দিলেও বাগড়া দিয়েছেন এফডিসির এমডি ও শিল্পী সমিতির নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা শহীদুল হারুন। এটা আমাদের জন্য অপমানের।
‘তাই নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা শহীদুল হারুনকে আজীবন নিষিদ্ধ, এফডিসির এমডির অপসারণসহ চার দফা দাবিতে কর্মবিরতি দিয়েছি। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত এই কর্মবিরতি চলবে। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে এই কর্মসূচি। রোববার সকালে আমরা ১৭ সংগঠনের সদস্যরা এফডিসির গেটের সামনে শুয়ে থাকব।’
তিনি আরও বলেন, ‘পীরজাদা শহীদুল হারুনকে চলচ্চিত্রের সবরকম কাজ থেকে আজীবন অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হলো। পাশাপাশি আমরা চাই, শিল্পী সমিতির নির্বাচন আর কখনো এফডিসিতে অনুষ্ঠিত হবে না। যেহেতু তাদের নির্বাচনে এত নিরাপত্তা লাগে, এত সমস্যা হয়, তাহলে এখানে তাদের নির্বাচন না করাই ভালো।’
এ আন্দোলনে একাত্মতা জানিয়ে শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘আমি যেহেতু সবেমাত্র নির্বাচিত হলাম, তাই সাংগঠনিকভাবে কিছু বলতে পারি না। তবে পরিচালক ও প্রযোজক সমিতির সদস্য হিসাবে আমি তাদের সঙ্গে একমত হয়েছি। এফডিসির লোকদেরই যদি এফডিসিতে প্রবেশ করতে না দেওয়া হয়, তাহলে তো কষ্ট লাগবেই। আমি লজ্জা পেয়েছি ইন্ডাস্ট্রির অনেক সিনিয়র পরিচালক, প্রযোজক এসে ঘুরে গেছেন। এটা আমাকে লজ্জা দিয়েছে।’
এদিকে নির্বাচনের দিন এফডিসিতে অন্য সংগঠনের সদস্যদের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করার বিষয়ে এফডিসির এমডি নুজহাত ইয়াসমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘প্রথম কথা হচ্ছে-এফডিসি একটি কেপিআইভুক্ত (Key Point Installation) এলাকা। এখানে যদি প্রাইভেট কোনো কিছু আয়োজন করতে হয়, তাহলে সেটার অনুমতি লাগে। এটাই নিয়ম। নিয়মানুযায়ী শিল্পী সমিতির নির্বাচন পরিচালনা করার জন্য আমার কাছে অনুমতি নিতে এসেছিলেন নির্বাচনসংশ্লিষ্টরা। যেহেতু এখন করোনা মহামারির তৃতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে, দেশে প্রতিদিন আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে, তাই সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক বেশ কিছু স্বাস্থ্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এসব নির্দেশনার অন্যতম হচ্ছে কোনো স্থানে বিশেষ কারণে সর্বোচ্চ ১০০ জনের বেশি কোনো জনসমাগম করা যাবে না। এই ১০০ জনেরও সেখানে প্রবেশ করতে হলে কোভিড টিকার সার্টিফিকেট প্রমাণপত্র হিসাবে দেখাতে হবে। এটা কিন্তু সরকারি নির্দেশনা। সরকারের একজন কর্মকর্তা হয়ে আমি এটা মানতে বাধ্য। তাই সরকারের এই সিদ্ধান্তটা তাদের জানিয়ে দিয়েছি।
ভোটার এবং নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কাজ ছাড়া অন্য কেউ প্রবেশ করতে পারবে না, এটার সঙ্গে নিরাপত্তাবিষয়ক আরও কিছু নির্দেশনা দিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠান করার অনুমতি দিয়েছি। এর বেশি কিছু আমার করার নেই এখানে। এরপর অন্য সংগঠনের সদস্যদেরও ভোটের দিন এফডিসিতে প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়ার জন্য আমার কাছে এফডিসিতে অবস্থিত বিভিন্ন সংগঠনের নেতারাসহ শিল্পী সমিতির দুই প্যানেলের প্রতিনিধি হিসাবে ইলিয়াস কাঞ্চন ও মিশা সওদাগর এসেছিলেন। তারা অনুরোধ করেছিলেন; কিন্তু আমি সরকারি নির্দেশনার বাইরে যেতে পারি না, এটা তাদের জানিয়েছি। কারণ কোভিড-সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশ না মানলে আমাকে জবাবদিহি করতে হবে। এরপরও তাদের কেউ কেউ উচ্চবাচ্য করেছেন, আমার অফিসের লোকজনকে হুমকি-ধমকি দিয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিশেষ অনুরোধে আমি তাদের বলেছি, আমাকে একটা লিস্ট দেন যারা ভোটের দিন এফডিসির ভেতরে ঢুকতে চান। তাদের পক্ষ থেকে সোহানুর রহমান সোহান সাহেব আমাকে ২৫০ জনের একটি তালিকা দিলেন। আমি কীভাবে এটার অনুমতি দেব? যেখানে সরকার ১০০ জনের বেশি জনসমাগমের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন, সেখানে আমার সাধ্য কি এর বেশি অনুমতি দেওয়ার। তাই আমার অপারগতার কথা বলে দিয়েছি। এরপর ভোটের আগের দিন আমাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, নিরাপত্তাজনিত কারণে ভোটার ও নির্বাচনসংশ্লিষ্ট ব্যতীত কেউ ভেতরে ঢুকতে পারবে না। সুতরাং এসব ঘটনা নিয়ে আমাকে জড়ানো কিংবা আমি কারও পক্ষ নিয়ে কাজ করেছি, এ ধরনের অভিযোগ অবান্তর।
সবচেয়ে বড় কথা, আমি নির্বাচন কমিশনকে বলে দিয়েছি তাদের প্রয়োজনে যাদের অনুমতি দেবেন, তারা ভেতের ঢুকতে পারবেন। এরপর বিষয়টি নির্বাচন কমিশনই বুঝবেন। এখানে আমার কোনো দায়ভার নেই।’ নুজহাত ইয়াসমিন আরও বলেন, ‘যেহেতু ভোটগ্রহণের আগে কিছু অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটার কথা শোনা গেছে, তাই হয়তো নির্বাচন কমিশন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এফডিসির নিরাপত্তা এবং সুষ্ঠু ভোটগ্রহণের স্বার্থে যাদের প্রয়োজন নেই, তাদের ঢুকতে দেয়নি। আমার স্টাফদেরও গেট থেকে সেদিন বিদায় করে দিয়েছে নিরাপত্তাকর্মীরা।’
নির্বাচন পরিচালনা এবং ১৭ সংগঠন কর্তৃক অবাঞ্ছিত ঘোষণা প্রসঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা শহীদুল হারুন বলেন, ‘অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে একেবারে সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ একটি নির্বাচন হয়েছে এবার। আমরা একটি সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনা করার স্বার্থে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের সিদ্ধান্ত আমরা এফডিসি প্রশাসনকেও জানিয়েছি। আমার মনে হয় তারা ভোটের দিন ভেতরে ঢুকতে না পেরে কষ্ট পেয়েছেন, তাই অভিমানে আমাকে নিষিদ্ধ করার কথা বলছেন। আমি আশা করব, আমার দায়িত্ব আমি যথাযথভাবে পালন করেছি মাত্র। এখানে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করার কিছু নেই।’
এদিকে সদ্য অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী মিশা সওদাগর বিজয়ী সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন ও সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘জয়ী হলে অবশ্যই ভালো লাগত। অনেকদিন প্রত্যক্ষভাবে সমিতির সঙ্গে জড়িত ছিলাম। এখন কাঞ্চন ভাই এসেছেন। তিনি আমাদের প্রিয় মানুষ। সংগঠক হিসাবে দক্ষ। আমার বিশ্বাস তার নেতৃত্বে শিল্পী সমিতি আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবে। জায়েদ আমার ছোট ভাইয়ের মতো। একসঙ্গে কাজ করেছি। দুজনকেই আমার পক্ষ থেকে অভিনন্দন।’
এবারের নির্বাচনে তৃতীয়বারের মতো সাধারণ সম্পাদক পদে জয় পেয়েছেন জায়েদ খান। বিএফডিসিতে নানা গুঞ্জন, সামাজিক মাধ্যমে নেতিবাচক প্রচার, একের পর এক বিব্রতকর ভিডিও প্রকাশ-এসবকিছু পাশ কাটিয়ে ভোটাররা তাকে ভোট দিয়েছেন বলে শিল্পীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘যারা আমাকে পুনরায় নির্বাচিত করেছেন তাদের প্রতি অনেক কৃতজ্ঞ। অনেকদিন মিশা ভাইকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করেছি। তার জন্য মায়া জমে গেছে। তার সঙ্গে বোঝাপড়া খুব ভালো ছিল। তিনি অভিভাবকের মতো আমাকে আগলে রেখেছিলেন। তার জন্য আমার মনটা খুবই খারাপ। মিশা ভাইয়ের সঙ্গে একটা সেটআপ ছিল। সেটা খুব মিস করব। কাঞ্চন ভাই উপদেষ্টা হিসেবে আমাদের সঙ্গে কাজ করেছেন। তিনি আগে সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন। তার অভিজ্ঞতা আছে। আশা করি একসঙ্গে শিল্পীদের স্বার্থে কাজ করতে পারব। ডিপজল ভাই, রুবেল ভাইসহ আমাদের প্যানেলের সিনিয়ররা নির্বাচিত হয়েছেন। ভালো লেগেছে। এতে কাজ করতে সুবিধা হবে। আর যার কাজ করার ইচ্ছে থাকে সে সব জায়গায় করতে পারে।’
চিত্রনায়িকা পপি অনেকদিন পর আড়াল ভেঙে নির্বাচন উপলক্ষ্যে প্রকাশ্যে এসেছিলেন। এসেই তিনি এক ভিডিও বার্তায় জায়েদ খানের প্রতি অভিযোগ ছুড়ে দেন। জায়েদ খান নাকি তার বুকে পিস্তল ঠেকিয়ে মৃত্যুর হুমকি দিয়েছিল! এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জায়েদ বলেন, ‘একসঙ্গে আমি তার (পপি) সঙ্গে একশরও বেশি স্টেজ শো করেছি। ফলে তার সঙ্গে একটা সুসম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। মজার ছলে অনেক কিছু বলেছি, কিন্তু সেটাকে বড় করে দেখা তার মতো শিল্পীর কাছ থেকে কখনোই কাম্য নয়। আমি তার বুকে পিস্তল ঠেকাইনি, বা মৃত্যুর হুমকিও দেইনি। আমাকে নিয়ে যা ছড়ানো হয়েছে সেটি একদমই অপ্রত্যাশিত ও অন্যায়। ব্যক্তিগত আক্রমণ করে, মিডিয়া ট্রায়াল করে প্রকাশ করা এবং মানুষকে ছোট করাও অপরাধ ও অনৈতিক। আমিও মানুষ, শুধরানোর চেষ্টা করছি প্রতিনিয়ত। তার মানে এই নয় যে, ব্যক্তিগত আক্রমণ করে হেয় করবেন। তিনি যা করেছেন অন্য কারও প্ররোচনায় করেছেন বলে আমার বিশ্বাস।’
এদিকে এবারের নির্বাচনে প্রথমবার সাধারণ সম্পাদক পদে অংশ নিয়েছিলেন চিত্রনায়িকা নিপুণ আকতার। শুরুতেই তিনি চমক দেখিয়েছেন। প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, মাত্র ১৩ ভোটের ব্যবধানে জায়েদ খানের কাছে হেরে গেছেন তিনি। জানা গেছে, যে ১০টি ভোট বাতিল হয়েছে সবগুলোতেই তার পক্ষে সিল দেওয়া ছিল। সে হিসাবে মাত্র তিন ভোটে হেরে গেছেন তিনি। তবু এই ফলাফলে সন্তুষ্ট নন এ নায়িকা। তাই ফলাফলে অসন্তোষ জানিয়ে আবার ভোট গণনার জন্য গতকাল শনিবার দুপুরে আপিল করেছেন তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা হারুন। তিনি বলেন, ‘পাঁচ হাজার টাকা জমা দিয়ে নিপুণ আক্তার আপিল বিভাগের কাছে আবেদন করেছেন। নিয়ম অনুসারে আপিল বিভাগ আবার ভোট গণনা করে ফলাফল জানাবেন।’ তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় জানা যায়, আগের ফলাফল বহাল রেখে আপিল নিষ্পত্তি করা হয়েছে। নিপুণের উপস্থিতিতে পুনরায় ভোট গণনা করা হয়। এরপর তিনি আপিলের রায় মেনে নেন।
নির্বাচনে আপিল বিভাগের প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন চিত্রপারিচালক সোহানুর রহমান সোহান। শিল্পী সমিতির নির্বাচনে অংশগ্রহণ, হেরে যাওয়া ও আপিল প্রসঙ্গে নিপুণ বলেন, ‘আমি মনে করি আমাকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভোটের ব্যবধানটা খুব বেশি নয়। আমাদের অনেক ভোটার ভোট দিতে আসেননি। কেন আসেননি? তারপরও আমি মনে করি ভোট গণনায় গরমিল হয়েছে। তাই আমি পুনর্গণনার জন্য আপিল করেছি। সবচেয়ে বড় কথা- চলচ্চিত্রকে ভালোবেসে, শিল্পীদের জন্য কিছু করতে নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। শ্রদ্ধেয় কাঞ্চন ভাইয়ের সঙ্গী হয়েছিলাম। আমার বিশ্বাস, আমরা হারিনি। শিল্পীরা তাদের নেতৃত্ব বেছে নিয়েছেন। যেটা ভালো বুঝেছেন করেছেন। তবে আমি একজন শিল্পী হিসাবে আমার দায়িত্ব পালন করে যাব।’
নির্বাচনে কোনো পেশিশক্তির ব্যবহার হয়েছে কিনা বা অন্য কোনো কারণে আপনি হেরে গেছেন কিনা জানতে চাইলে নিপুণ বলেন, ‘দেখুন, নির্বাচনে অর্থের খেলা হয়েছে সেটা অনেকেই জানেন। ভোটের দিন আমি জায়েদ খানের চাদরের ভেতর থেকে ভোটারদের অর্থ দেওয়ার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনে জানিয়েও ছিলাম। এ সংক্রান্ত প্রমাণও আমরা পেয়েছি। বলতে পারেন অর্থের কাছে হেরে গেছি।’ নির্বাচন-পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে আজ জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করবেন বলে জানিয়েছেন এ নায়িকা।
সূত্র: যুগান্তর